আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগীয় ফটোওয়াকঃ বলধা গার্ডেন

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

ব্লগীয় ফটোওয়াকঃ বলধা গার্ডেন আমি হুমায়ুন বাদশাহ্ বহু পূর্বেই শেরশাহ নামের এক অখ্যাত পাঠান যোদ্ধার কাছে দিল্লীর সিংহাসন হারিয়ে “কালপুরুষ” সেজে বেশকিছুদিন যাবৎ পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। অবশেষে একদিন ফেসবুক নামের এক গহীন অরণ্যে গা ঢাকা দিলাম। কিন্তু এখানেও শান্তি নেই। ফেসবুক অরণ্যে তখন এক স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপক দাপট। তিনি আমাকে আটক করার জন্য ফেসবুক অরণ্যের আনাচে কানাচে গুপ্তচর মোতায়েন করলেন, আরণ্যক ভাষায় যারা “ব্লগার” নামে পরিচিত।

অগত্যা একদিন এই অরণ্যের এক ঝর্ণার ধারে “লগিন” অর্থাৎ ঘুরে বেড়াতেই আমাকে আটক করা হলো। আমাকে রীতিমতো শূলে চড়ানোর ব্যবস্থা করা হলো। অতঃপর আমাকে বলা হলো এই অরণ্যের অদূরে এক ঐতিহাসিক গার্ডেন আছে যা “বলধা” নামে পরিচিত। শুনেছি সেখানে একসময় আদিম “বাইসন” দের দেখা পাওয়া যেত যারা আচরণে ছিল উগ্র, স্বভাবে উচ্ছৃংখল এবং বেপরোয়া। গাছের ছালের বদলে তারা গাছের আড়ালকেই নিজেদের পর্দার জন্য উপযুক্ত মনে করতো।

অরণ্যদেব তাদের কর্মকান্ডে ভীষণ অতীষ্ট ছিলেন এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে এব্যাপারে কোনরকম অভয়বাণী না পেয়ে তিনি সেই “বলধা গার্ডেন”কে তাদের জন্য “অভয়ারণ্য” হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন। বর্তমানে সেই আদিম বাইসনদের উত্তরসূরী এবং আজকের ভদ্র সংস্করণের কিছু বলদ সেই জায়গা দখল করে আছে। রাষ্ট্রপ্রধান আমাকে নির্দেশ দিলেন, আপনি যদি কতিপয় রাখাল সাথে নিয়ে সেই বলদগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন বা একটা উপযুক্ত খোঁয়াড়-এর ব্যবস্থা করতে পারেন তবেই আপনার মুক্তি। আপনি আগামী শুক্রবার ২৬শে নভেম্বর দিনব্যাপী সেখানে এ্যাসাইনমেন্ট করার সুযেগ পাবেন। তবে কথা হচ্ছে আপনার সাথে যে সকল রাখাল যাবে তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে ভবিষ্যতের এক একটি “আ্যসেট” বা “ট্যালেন্টেড পারসন"।

তারা নিজেদের সাথে কিছু যুদ্ধাস্ত্র ও মোহন বাঁশী নিয়ে যাবে আর সেই অস্ত্র বা বাঁশীর ব্যবহারে যদি কোন “বলদ” বা “বান্দরনী” ঘায়েল হয় তবে তার দায়দায়িত্ব পুরোটাই আপনাকে বহন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে যদি কোন বলদ বা বান্দরনী “উন্নত জীবন ব্যবস্থা” মানে “সংসারী” হতে চায় তবে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় খরচে লোকালয়ে থাকার কথা বিবেচনা করা হবে। আর আপনি যদি এই কাজে সফল হয়ে ফিরে আসতে পারেন তবে আপনাকে সসম্মানে ছেড়ে দেয়া হবে। জীবন বাঁচানো ফরজ কাজ। তাই রাষ্ট্রপ্রধানের এমন প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হলাম।

আপনারা এবার রাখালদের কর্মকান্ড দেখে বিবেচনা করুন- আমি ক্ষমার যোগ্য কিনা! ১। "বলদ" ও "বান্দরনী" আটকানোর প্রারম্ভিক আলোচনা। ২। যে যার "যুদ্ধাস্ত্র" ও "মোহন বাঁশী" পরীক্ষা করে নিচ্ছে। ৩।

এবার যে যার মতো এ্যাসাইনমেন্টে নেমে পড়ার পালা। ৪। সাবজেক্ট পেতেই চললো শ্যুট করার প্রক্রিয়া- কে ঘায়েল হলো কে জানে? ৫। একি! রয়ে সয়ে!! নিজেরাই নিজেদের তাক করা মানেই বিপর্যয়ের সম্ভাবনা। সাবধান! ৬।

পাইছিরে পাইছি! এইবার তোমারে পাইছি!! তরতাজা ফিঙ্গার প্রিন্ট! থুক্কু খুঁড়ের ছাপ। কারে ঠেক দিছিল আল্লাহ্ মালুম। ৭। আমিও একটা পাইছি। গাছের পাতায় রঙের ছোপ।

সেই যুগে বান্দরনী কোন লিপস্টিক লাগাইতো বাইর করতে হইবো। নতুন এ্যাসাইনমেন্ট! ৮। ও মা!! দেখছো কি কান্ড!! একটা বলদ ভুলে তার মুখের টোনা ফেলে গেছে। যাক ওদের খাবার রুচি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। ৯।

দূরে গাছের আড়ালে কি যেন নড়তেছে। চলেন ঐদিকে যাই- দেখে আসি। ১০। হা হা হা .... আমি কইছিলামনা, বাইসনরা ঘাস খাইতোনা, গাছের পাতা খাইতো। ওরা ফুল ভালবাসতো।

হের লাইগাই গাছে একটাও ফুল নাই- সব বান্দরনীগো হাতে ধরায়া দিছে। এইডা আসলেই বলদগো গার্ডেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.