আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পদ্মা, মেঘনা, যমুনা- ১/৩

শামুক www.fb.com/shamuk.tk

মেঘনা ** (অন্য নাম/ অন্য সম্পর্ক) (এটি একটি বানানো গল্পও হতে পারে) ঘটনার শুরুটা ২০০৮ সালের আগষ্টের মাঝামাঝির দিকে। শফিকুলের ফোনের মাধ্যমেই প্রথম পরিচয় মেঘনার (**) সাথে। শফিকুল আমার ইউনিভার্সিটি ফ্রেন্ড, আর মেঘনা শফিকুলের কলেজ ফ্রেন্ড না হলেও কলেজের ক্লাসমেট ছিল। মেঘনার ফোন নাম্বার, ওর সাথে পরিচয় শফিকুলেরই অবদান। আমি তখন ফাইনাল ইয়ারের শেষের দিকের ছাত্র আর মেঘনা পড়তো খুলনা বি.এল. কলেজের মার্স্টাস প্রথম পর্বে।

দুজনেরই বোঝার বয়সটা হয়েছিল বলে দুজনার মাঝে সখ্যতা অনকে তাড়াতাড়ি হয়ে উঠেছিল। মেঘনার বাড়ি ছিল যশোরে। তাই আমাদের কথা বলার বেশির ভাগ সময়টাই ছিল দক্ষিণ বঙ্গ নিয়ে। আমি দক্ষিণ বঙ্গের র্সবজানা দোষের কথা বলতাম, আর ও ওগুলোর বিপক্ষে কথা বলতো। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ও আমার ভালো বন্ধু হতে চাইলো।

আমি রাজি হয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম সর্ম্পকটা যেন অন্যদিকে মোড় না নেয়। দুজন দুজনের সম্বন্ধে জেনেছি। ও হয়তো ভেবেছিল আমি আমার সর্ম্পকে নেগেটিভ কথাগুলো হয়তো বানিয়ে বলেছি। যাই হোক রোযার ছুটিতে আমি আমাদরে বাসায় চলে আসি।

কথা চলতে থাকে প্রতিদিন। দুজনই বেশ ভালো বন্ধু হয়ে পড়েছিলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম ও আমাদরে সর্ম্পকটাকে অন্যদিকে ঘোড়াতে চাইবে। আমার মাঝেও যে ভালবাসা জন্মেছিলনা তা না। আসলে আমি জানতাম আমাকে ওর সংগে মানাবে না।

কিন্তু আমি আমার সর্ম্পকে ওকে যাই বিবনণ দিয়েছিলাম ও হয়তো ভেবেছে আমি সব বানিয়ে বলেছি। যাই হোক ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখ রাত ১০:০৫ মিনিটে আমার ফোনে ওর প্রথম মেসেজ আসলো, "মাই ডিয়ার, কেমন আছো? প্রিয়, তুমি আমার কি? বড় জানতে সাধ হচ্ছে?" আমার মাথা ঘুড়ে গেল। বুঝলাম, ওর কি অবস্থা। রাতে অনেক কথা হলো, অনেক বোঝালাম যে আমাকে নিয়ে ও ভুল স্বপ্ন দেখছে, আমি ফিজিকালি ওর সাথে মানাই না। কিন্তু ও কিছুতেই মানতে নারাজ।

এভাবে চললো ২/৩ দিন। আবেগমাখা অনেক মেসেজ আদান প্রদানের পর আমিও আমার হৃদয়ের গোপন স্বপ্নের সাথে হাত মিলালাম। এরপর কথা চললো। আমাদরে দুজনার ভালোবাসা দুজনার কাছেই প্রকাশ পেল। বয়সটা আমাদরে এমন ছিল যে স্বুল কলেজের ছেলেমেয়েদেরে মত অহেতুক প্রেম করার নয়।

দেখা করার স্বিদ্ধান্ত নিলেও ঐ অল্প সময়ে করা হয়নি। এভাবে প্রায় সাড়ে ৫ মাস কেটে গেল। আমার মায়ের সাথেও একদিন ওকে কথা বলিয়ে দিয়েছি। বড় ভাইয়ে ছোট্ট মেয়েটার সাথেও ও প্রায়ই কথা বলতো। মেঘনা ওর ছবি কুরিয়ার করে পাঠালো।

ও যেই মেসে থাকত, ওর রুমমেটদের সাথেও আমার কথা হয়েছে। যদিও তখনও আমাদের দেখা হয়নি, ভালোবাসা তার নিজস্ব গতিতে অনেক দুর পর্যন্ত চলে গেছে। এর মধ্যে ওদের বাড়ীতে প্রায়ই ওর বিয়ের জন্য সম্বন্ধ আসতে থাকে। ও সব কিছু থেকে দূরে থাকে। ২০০৯ এর জানুয়ারী ৮/৯ তারিখে মেঘনা ওর চাচার (**) বাড়িতে গেল, ওকে ডেকে পাঠিয়েছিল, ওর চাচাতো বোনের বাচ্চা হয়েছিল সে জন্য।

মেঘনা বলে গেল ওর চাচা (**) কোরবান খান (**) খুব রাগী। ওর চাচার (**) সামনে কেউ ফোনে কথা বলেনা। তাই সুযোগ পেলে কথা বলবে। তাই পরিচয়ের পর এই প্রথম ১৮/১৯ ঘন্ট আমরা কথা না বলে থাকলাম। তারপর কথা হলো৩/৪ মিনিট।

পরের দিন ও ফোন দিলো। ও বললো, আমি হেরে গেলাম, তুমি কেন এতদিন দেখা করলেনা.. . . . . . . ওর চাচা তার শালিকার ছেলে বদরুল ইসলামের (**) সাথে ওর বিয়ে দিবে, তাই ছেলে প এসে ওকে নাকফুল পরিয়ে গেছে। তখন আমার সময়টা যে কেমন গেছে তার বর্ণনা দিতে চাইনা। ও ছিলো খুব অভিমানী। আমি ওর ছোট ভাই ফুয়াদেও (**) সাথেও কথা বলেছি।

মেঘনা ওর মাকেও জানিয়েছে, কিন্ত ওর বাবা আর চাচাকে জানাতে সাহস পায়নি। কারণ ওর বাপ/চাচাদের ছিলো অনেক রাগ। তাই কেউ সাহস করে কিছু বলার সাহস পায়নি। মেঘনার বাবা স্ট্রোক করার পর বেশ কিছুদিন অসুস্থ। তাই হয়তো মেঘনাদের ফ্যামিলিতে ওর চাচা ফিন্যালসিয়ালি হেল্প করতো।

তিন ভাই-বোনের মাঝে মেঘনা ছিল বড়। তাই বিবেকটাও মেঘনার আটকে গেল সেখানে। যেখানে একজন তাদের ফ্যামিলিকে ফিন্যালসিয়ালি হেল্প করছে মেঘনা নিজের ভালোবাস বিসর্জন দিয়ে যেন ঋন শোধ করবে। ভালোবাসার করুণ সমাপ্তি। কিন্তু হৃদয় থেকে কি ভালোবাসা মুছে যায়? ফেব্রুয়ারির সেই কালো রাতটি যে কত কষ্টে কেটেছে, তা সবাই বুঝবেনা।

আমাদের কান্না কাটির বিবরণ দিতে পারবনা। মেঘনার বিয়ে হবে ফেব্র“য়ারীর শেষের দিকে। ততদিন আমাদের মেসেজ আদান প্রদান হতো, কথাও হতো। তবে আমরা যে ৫/৬ ঘন্টার বেশি সময় কথা না বলে থাকতে পারতামনা সেই কথা না বলে থাকার সময়টা বেড়েই চললো আজ অবধি। এখন মেঘনা (**)কেমন আছে? মেঘনার স্বামী ঢাকাতে বায়িং হাইজ কিংবা অন্য কোন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে।

দুজন ঢাকাতেই থাকে। সকাল থেকে রাত ১০/১০:৩০টা পর্যন্ত মেঘনাকে কাটাতে হয় একা একা। অন্য দিন তো দূরের কথা সপ্তাহের ছুটির দিনে সেই বদরুল (**) বৌটাকে নিয়ে বেড়াতেও যায়না কোথাও! বদরুল ছুটির দিনে একাই নিজের প্রফেশনাল কাজে বেড়িয়ে পরে। খুব একাকিত্তে কাটে মেঘনার সময় (দিন)। এখন থেকে মাস ৬য়েক আগে মেঘনা একদিন ফোন দিয়ে বললো, তোমার অফিস অথবা অন্য কোথাও একটা চাকরী ম্যানেজ করে দিতে পারবে! একটা চাকরীর আমার ভীষণ দরকার।

ঋন শোধ করতে যেয়ে আজ মেঘনার এই অবস্থা। নিজের ভালোবাসার মর্যাদা রাখতে পারলনা। আবার এত বিসর্জনের পরেও মেঘনার কত দুঃখ, স্বামীটা একটু বেড়াতেও নিয়ে যায়না। এভাবে ভালোবাসার বিসর্জনের কাহিনী যে কোন কাউকেই কষ্ট দিতে পারে। কিন্তু যদি এমন হয়! এখন হয়তো মেঘনা (**)চাকরী করছে।

এখন ওকে ফোন দিলে ও রিসিভ করেনা। যোগাযোগ রাখেনা কারো সাথে। ওর বান্ধবীদের সাথেও না, মেসের রুমমেটদের সাথেও না। এমন কি যে চাচার (**) ঋণ শোধের জন্য ওর ভালোবাসা বিসর্জন দিলো সেই চাচাদের (**) সাথেও না। ওর কোন পূর্ব পরিচিত কেউ যদি ফোন দেয়, মেঘনা দিনের বেলা কথা বলেনা।

একটু ফ্রি হওয়ার পরেও কল ব্যাক করেনা কাউকে। আমি ভেবে নিলাম, দিনগুলো মেঘনার খারাপ কাটলেও রাতগুলো হয়তো ওর ভালোই কাটতো। তাই পুরোনো কারো সায়ে যোগাযোগ করার আর দরকার হয়নি। মাঝে মাঝে খুব স্বার্থপর মনে হয় মেঘনাকে। বিয়ের ১.৫ (দেড়) বছর পর ও আমাকে একবারই ফোন দিয়েছিলো, একটা চাকরীর জন্য।

এমনিতেই বিয়ের প্রথম দিকে যে কোনভাবেই হোক আমার নামটা জেনে ফেলেছিল ওর স্বামী। প্রথমে কিছুটা সন্দেহও করতো। ওর একটুও ভয়ে বুক র্কাপেনা আমার জন্য। আমি যদি রাগ করে যখন তখন ওকে ফোন দেই! মেঘনা তো জানে ও স্বমী ফোন নাম্বারও আছে আমার কাছে। কারণ একদিন রাতে ভুল করে আমার নাম্বার থেকে মেঘনার নাম্বারে মিস্ড কল চলে যায়।

পরে বদরুল ওর ফোন থেকে আমার নাম্বারে কল দিয়েছিল, জিজ্ঞেস করেছিল কে আপনি ০১.২৫৬. . . ৫১ এই নাম্বারে মিস্ড কল দিলেন? যাই হোক আমি বুঝে ফেলেছি সবকিছু। সবকিছুই জানি কিন্তু মানিনা, কারণ মানতে পারিনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.