আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাড়া বিদ্যুতের ব্যবসা চালাতে রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে না : বি. ডি রহমতউল্লাহ (www.chintaa.com)

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি

জনাব রহমতউল্লাহ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক। পাওয়ার সেল এব পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কাজ করেছেন। চিন্তার সাথে দীর্ঘ এক আলাপচারিতায় বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট এর কারণ, বর্তমান সরকারের ভূমিকা এবং সংকট সমাধানের উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রকৌশলী বি. ডি রহমতউল্লাহ’র সাথে চিন্তা’র তরফে আলাপচারিতায় ছিলেন নেছার আমিন। নেছার আমিন: আপনি দীর্ঘদিন পাওয়ার সেলের দায়িত্বে ছিলেন।

বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হওয়ার পেছনে কি ধরনের কারণ রয়েছে বা কারা এর জন্য দায়ী বলে মনে করছেন? বি. ডি রহমতউল্লাহ: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতের সংকটের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে বিশ্বব্যাংক। এ দেশের কোন সরকারেরই বিশ্বব্যাংকের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল না এবং নাইও। বিশ্বব্যাংক সমস্ত দাতা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে। তারা যে পরামর্শ দেয় তা সমস্ত দাতাসংস্থা মানতে বাধ্য থাকে। বিশ্বব্যাংক ১৯৮০ সালের দিকে ঘোষণা দেয় যে, তারা বিদ্যুৎ বিতরণে টাকা দিলেও সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে আর টাকা দেবে না।

তবে সে সময় থেকেই তারা বিদ্যুৎ খাতে ঋণ দিয়ে আসছিল। এধরনের ঋণের আকার ছিল খুবই ছোট। এবং এই ঋণের উদ্দেশ্য ছিল, বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারের জন্য বিদেশী পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) আনা। ওই সময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার চেয়ে বেশি ছিল। বিদ্যুতের একটা সাধারণ রীতি আছে, স্থাপিত বিদ্যুৎ ক্ষমতা চাহিদার চেয়ে ন্যূনতম ২০% বেশি থাকতে হয়।

বিশ্বব্যাংক ও দাতাসংস্থাগুলো ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশকে টাকা বন্ধ করে দেয়ায় ১৯৯০ এর দশকে এসে চাহিদা এবং উৎপাদন সমান হয়ে যায়। ১৯৯৪ সালে বিশ্বব্যাংক--পিডিবি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান এবং বিদ্যুৎ ও পরিকল্পনা কমিশনের সচিব পদমর্যাদার কয়েকজন কর্মকর্তাকে অভিজ্ঞতা অর্জনের কথা বলে আমেরিকা ভ্রমণ করাতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে এসে তারা বলে, বিদ্যুৎ খাত সংস্কার করতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারিকরণে পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা বলল, পিডিবিকে ভেঙ্গে এর থেকে উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন আলাদা করে ফেলতে হবে।

তখন মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার মেগাওয়াট। এত ছোট একটা খাতকে তারা বিশ্বব্যাংকের সব অবাস্তব ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী পরামর্শের ভিত্তিতে ভাঙ্গার জন্য খোঁড়া যুক্তি উপস্থাপন করতে লাগল। ইতিমধ্যে ১৯৮০ সাল থেকে শুরু হয়ে ১৯৯৬ সালে বিদ্যুৎ সংকট মারাত্মক রূপ ধারণ করে। তখনই প্রথমবারের মত আমরা লোডশেডিং দেখলাম। আর প্রথমবারের মত বিশ্বব্যাংকের সব অবাস্তব ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী পরামর্শের বদৌলতে আমরা দেখলাম চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম।

আইপিপির অনুমোদন দেয়া হয় কখন থেকে এবং এর ফলাফল কি দাঁড়ায়? ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংকট কমানোর কথা বলে আইপিপি (ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্লান্ট), বার্জ মাউন্টেড (আনসলিসিটেড, অর্থাৎ দরপত্র ছাড়া) প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। তখন থেকেই বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির বীজ ঢোকে। একই বছর ‘প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি’ প্রণীত হয়। সাধারণত যেসব দেশে মৌলিক ভৌত প্রকল্প নির্বাচনে সরকারের কোন স্বাধীন ভূমিকা থাকে না সেসব দেশে এ ধরনের নীতি প্রণীত হয়। বর্তমান পিডিবির চেয়ারম্যান আলমগীর কবির প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি প্রণয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আমরা রাষ্ট্রবিরোধী যেসব অনুচ্ছেদগুলার বিরোধিতা করতাম তিনি ওইগুলাতে বিশ্বব্যাংকের সমর্থনে জোর সম্মতি দিতেন। তার ভূমিকায় মনে হত তিনি যেন বিশ্বব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা করতেই সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ পেয়েছেন। আইপিপির উদ্যোগটাই ছিল রাষ্ট্রবিরোধী উদ্যোগ। আইপিপি কোম্পানিগুলাকে বিদ্যুতের দাম পরিশোধ করতে হয় ডলারে। আমরা জানি, ডলারের দাম সবসময় ওঠানামা করে।

চুক্তিকালীন সময়ে যে ডলারের দাম ৪০ টাকা ছিল আজকে ডলারের দাম ৭০ টাকা হওয়ার ফলে আইপিপি কোম্পানিগুলাকে চুক্তিকালীন সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি দাম দিতে হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশকে অনেক বেশি টাকা পরিশোধ করতে হবে। অথচ পিডিবি গ্রাহকদের কাছ থেকে বিদ্যুতের দাম নেয় টাকায়। তাছাড়া তারা ইচ্ছা করলেই দাম বাড়াতে পারে না। আরেকটি বিষয় হল, আইপিপিগুলা কোনরকম কর দেবে না।

পিডিবিকে কর দিতে হবে কিন্তু তাদেরকে কর দিতে হবে না। তারা মেইনটেন্যান্সের ৩০% নিয়ে আসতে পারবে কোনরকম কর ছাড়াই। কোম্পানিগুলা তাদের ১০০% লাভ নিজের দেশে প্রেরণ করতে পারবে। তাহলে দেখা গেল, আমাদের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের সম্পদ, গ্যাস ব্যবহার করে তারা লাভবান হচ্ছে।

আমরা বিদ্যুৎ কিনি আর না কিনি, প্রতিদিন যে খরচ হচ্ছে তা ফেরত দিতে হবে। এটাই হল আইপিপির স্বরূপ। এটা ঠিক আমাদের দেশে আগত সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ ইস্ট ইনডিয়া কোম্পানির মত। অর্থাৎ তারা যা ইচ্ছে তাই করবে। আমাদের পরামর্শ ছিল--মোট উৎপাদনের ২০% এর বেশি আইপিপি দেয়া হবে না।

কিন্তু সেটা আজকে প্রায় ৫০% হয়ে গেছে। এরফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতটি মুনাফাখোরদের হাতে চলে গেছে; যারা বিদ্যুতের মান, মূল্য এবং জনগণের ভোগান্তি দেখে না। অনেকে বলছেন, আইপিপির মাধ্যমে তো বর্তমানে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে আমার কথা হল, আমার ঘর ভেঙ্গে দিয়া বলা হচ্ছে, তুমি পুকুরে থাক। কিন্তু সেটা তো ঠিক হবে না।

আশুগঞ্জসহ সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা (কযি) বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ মাত্র ১ টাকা ৪০ পয়সা। ফার্নেস তেলে সেটা ৬ টাকা এবং ডিজেলে খরচ হয় ১০-১১ টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করব কিনা? দেশে সংকট তৈরি করে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ খাতকে আইপিপি বা বেসরকারি খাতে দিয়ে দেয়া হোক। এটা তো মেনে নেয়া যায় না। আপনি অনেকবারই বলেছেন যে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ হিশাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা পিডিবির আছে।

যদি তা-ই হবে, তাহলে সরকার এ সুযোগ হাতছাড়া করছে কেন? সক্ষমতা যদি ব্যবস্থাপনার দিক থেকে হয় তাহলে আমি বলব- পিডিবির ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আছে কিন্তু এই সক্ষমতাকে অচল করে রাখা হয়েছে। এর প্রথম কারণ হল আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ধ্বংসের মূলে আছেন বর্তমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহি চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ। তৌফিক ই এলাহি চৌধুরী একজন অকর্মণ্য এবং বিতর্কিত সাবেক আমলা। তার মত একজন ব্যক্তিকে বানানো হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা।

এছাড়া আবুল কালাম আজাদের মত একজন অপেশাদার নন-প্রফেশনাল লোককে বানানো হয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের মত একটি কারিগরি, জটিল ও স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ের সচিব। তিনি কিছুদিন আগে একটা সেমিনারে আমার সাথে বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ সম্পর্কে আমি শুধু এটাই জানি যে, বিদ্যুতের সুইচটিকে নিচের দিকে দিলে বাতি জ্বলে আর ওপরের দিকে দিলে বাতি নিভে যায়। এছাড়া বিদ্যুৎ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না’। যে লোকের বিদ্যুৎ সম্পর্কে কোন জানাশোনা নাই সেই লোককে বানানো হয়েছে বিদ্যুৎ সচিব। যে দেশে এ ধরনের অদক্ষ লোককে বিদ্যুৎ সচিব বানানো হয় সে দেশের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলার সক্ষমতা কোনদিনও বৃদ্ধি পাবে না।

সরকার পিডিবি এবং পেট্রোবাংলার সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যে কাজগুলা করা দরকার তা করছে না। বিদেশী স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করার জন্যই তারা সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে না। কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্রীয় খাতে যে পরিমাণ উৎপাদন ক্ষমতা সংস্থাপিত আছে, তার চেয়ে অনেক কম উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমান সক্ষমতাই যেখানে পিডিবি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলাটা কেমন? বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলা ক্ষমতার তুলনায় কম উৎপাদনী ক্ষমতায় (ডিরেটেড) চলছে। পৃথিবীর কোন দেশে এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চলে না।

বর্তমানে বাংলাদেশের স্থাপিত ক্ষমতা আছে ৫,৬৭২ মেগাওয়াট। গড়ে উৎপাদন হয় ৪ হাজার মেগাওয়াট। মাঝেমাঝে ৪২০০-৪৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়। স্থাপিত ক্ষমতা থেকে বাংলাদেশে ৩৩% বিদ্যুৎ কম উৎপাদিত হচ্ছে। এজন্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন উপায় নাই।

আমাদের ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা যদি বাড়ে তাহলে যেটা ১০০ মেগাওয়াটের সেটা ১০০ মেগাওয়াটই উৎপাদন করতে পারবে। এই কাজগুলা করতে দেয়া হচ্ছে না। কারণ ৫,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যদি উৎপাদন হয়ে যায় তাহলে তো ‘সিন্ডিকেট সদস্যরা’ অবৈধ ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবসা করতে পারবে না। সুতরাং ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবসাটা চালানোর জন্য এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০-৪০ বছর পুরনো।

তাই স্থাপিত ক্ষমতার সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না.... এক্ষেত্রে আমার কথা হল, পৃথিবীতে বহু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে ৫০-৬০ বছরের পুরনো। এত দীর্ঘ দিন চালানোর পরেও অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনও ঠিক আছে। ওগুলো কিভাবে চলছে? বিদ্যুৎ কেন্দ্র যখন দীর্ঘদিন চলে স্বাভাবিক কারণেই তার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয় (Natural wear and tear)। নষ্ট হলে এর বিভিন্ন অংশ পুনঃস্থাপন করা হয়। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জীবন (লাইফটাইম) ২৫-৩০ বছর হলেও বিভিন্ন অংশ পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে এর সক্ষমতা ও যথাযথ মান সবসময় ধরে রাখা যায়।

বাংলাদেশে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘ডিরেটেড’ শব্দটা ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশেই একমাত্র ডিরেটেড শব্দটা প্রচলিত। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে এছাড়া সরকার আর কি করতে পারত? এখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘাটতি ২২০০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। সরকার এই ২২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য দ্রুত কতগুলো পদক্ষেপ নিতে পারত। সরকার যেগুলাকে ডিরেটেড বলছে সেগুলাকে ৬ মাসের মধ্যে সংস্কার করতে পারলে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা বৃদ্ধি পেত।

কিছুকিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আমি যতদূর জানি ট্রান্সফরমার, রোটার এবং স্টেটার কিংবা স্টেশন ট্রান্সফরমার খারাপ। আমার হিসেবে দেড়শ কোটি টাকা খরচ করলে এই ৮০০ মেগাওয়াট পাওয়া যায়। এই ৮০০ মেগাওয়াটের কথা সরকারের ঘোষিত নির্বাচনী ওয়াদাতেও ছিল। সেই ওয়াদার কথা এখন কোথায় গেল? আজকে ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে তবু সরকারের সেইরকম কোন উদ্যোগ নেই। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে গ্রাহক প্রান্ত পর্যন্ত ক্যাপাসিটর স্থাপন করে আরও ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব।

এতে সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি টাকা খরচ হত। প্রচলিত মটরের সাথে আই এম সি বসালে এতে ন্যূনতম ৫০০/৬০০ মেগাওয়াট চাহিদা কমে যাবে বা বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। আই এম সি (ইন্টিলিজেন্ট মোটর কন্ট্রোলার ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট- ওগঈ) এর মত একটা যন্ত্র। পত্রিকায় দেখলাম নাটোরের শিমু নামের একটা ছেলে সম্প্রতি এটা উদ্ভাবন করেছে। মোটর লোডের বিপরীতে যদি আই এম সি বসিয়ে দেয়া যায় তাহলে চাহিদার ৫০% লোড কম লাগে।

৫ ঘোড়ার বিপরীতে বসালে এটা ১০ ঘোড়ার কাজ করে। এর মাধ্যমে অর্ধেক লোড বেঁচে যায়। সিস্টেম লস কমানো গেলে আরও ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চয় হবে। এটা বন্ধ করতে একটি শক্তিশালী জনপ্রিয় সরকারের মাত্র একদিন লাগে। সিএফএল কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট সাশ্রয় সম্ভব।

এটা সরকারই সম্প্রতি বলেছে। অবশ্য বিশ্বব্যাংক বলার পরে। কিন্তু আমরা যখন বলেছি তখন সরকার আমাদের পাগল বলে ঠাওরেছে! এ হল আমাদের দেশের সরকারদের চরিত্র! বিশ্বব্যাংক কোন কিছু বললে এটা শিরোধার্য হয়ে যায়! যাই হোক এ পদক্ষেপগুলো নিলে কোথাও সাশ্রয় কোথাও উৎপাদন বৃদ্ধি করে সিস্টেমে নিদেনপক্ষে ২,৩৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া বায়ুশক্তি, সূর্যতাপ, বায়োমাস (সবধরনের বর্জ্য) সহ অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার করলে খুব অল্প সময়ে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যায়। যেমন ঢাকা সিটি করপোরেশনের হিশাব অনুযায়ী দৈনিক মোট ৫,০০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যা থেকে সৃষ্ট বায়োগ্যাস থেকে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

আলাপচারিতার বাকী অংশ নিচের লিংকে--- Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।