আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিঙ্গাপুর সন্দর্শন ০৫: যে নদী নদী নয়

সহজ আলোয় দেখা...
সল্প সময়ে সিঙ্গাপুরের বড় বড় স্থাপনাগুলো দেখার সবচাইতে সহজ উপায় হলো সিঙ্গাপুর রিভারে বোট-রাইডিং-এ বেরিয়ে পড়া। মজার ব্যপার হলো, সিঙ্গাপুর রিভার আসলে কিন্ত কোনো নদী নয়, বরং এটি একটি খাল যেটা শহরের মাঝামাঝি হয়ে সমুদ্রের সাথে মিশে গিয়েছে দেশটির দক্ষিণাংশে। সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে “নদী”টির রয়েছে সুদীর্ঘ গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস। ক্লার্কি, মেরিনা বে সহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সিঙ্গাপুর রিভারে নৌ-ভ্রমনে যাওয়া যায়। প্রায় ঘন্টা খানেকের এই রাইডে পৃথিবী বিখ্যাত স্থাপনা গুলো এক নজরে দেখার এক দুর্লভ সুযোগ মেলে।

ইঞ্জিন চালিত এই নৌকাগুলো মাঝারি আকারের, ২৫-৩০ জন যাত্রী নিতে পারে বড়জোর, ছাউনি দেয়া আরামদায়ক আসনগুলোর পাশে জানলা দিয়ে হাওয়া খেতে খেতে চলে সিঙ্গাপুর সন্দর্শন। যেতে যেতে ভিডিওতে দেখানো হয় এই মুহূর্তে বোটটি যে স্থান অতিক্রম করছে তার ঐতিহাসিক বিবরণ। বোটের পেছনটায় থাকে খোলা জায়গা। দাঁড়িয়ে নয়ত বসে আয়েশ করে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নদী আর নদী পারের সিঙ্গাপুর উপভোগ করতে পারে যে কেউ। বোট-রাইডে বিভিন্ন কোণ থেকে চোখে পড়বে জগদ্বিখ্যাত মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল, যেটা আসলে পাশাপাশি তিনটা আকাশচুম্বি দালানের উপর জাহাজ আকৃতির বিশাল আরেকটা দালান দিয়ে সাজানো বিস্ময়কর স্থাপত্য।

এর কাছাকাছি আছে মার্লায়ন স্ট্যাচু, সিংহ আর মাছের দেহের সংমিশ্রনে অনবদ্য এই শিল্পকলা সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সিম্বল। আরো চোখে পড়বে মৌচাকের মতো কারুখচিত থিয়েটার স্টুডিও এসপ্লানেড, শাপলা ফুলের ডিজাইনের সায়েন্স এন্ড আর্ট মিউজিয়াম সহ শত শত আকাশচুম্বি দালানের মহাসমারোহ! সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত যখন-তখন ওঠা যাবে বোট রাইডে। দিনের বেলা উপভোগ করা যায় নদীটার একরকম সৌন্দর্য, রাতের বেলার নৌ-ভ্রমনে আবিস্কার করা যায় নদীর উপর ভেসে থাকা লক্ষ বাতির আলোয় ঝলমলে রূপকথার এক আশ্চর্য শহর! সিঙ্গাপুর রিভারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় থাকে সতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান। নদীটিকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষন বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, যেখান থেকে প্রতিবছর সরকার মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। এদের এতোসব আয়োজন দেখে মনে পড়ে আমার দেশের অভাগা বুড়িগঙ্গার কথা।

সেটিও হতে পারতো এমন চমৎকার দর্শনীয় স্থান! কে জানে হয়ত এখনো সেটা সম্ভব, যদি সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা থাকে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।