আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যক্তিগত গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর বন্ধের সুপারিশ (সূত্র:প্রথম আলো )। বিষয়টির আলোকে কিছু কথা ।



ব্যক্তিগত গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর বন্ধের সুপারিশ (সূত্র:প্রথম আলো )। বিষয়টির আলোকে কিছু কথা । -ঊর্মি খান ২৫/১০/’১০ তারিখে প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠার সংবাদে চোখ আটকে গেল ‘ব্যক্তিগত গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর বন্ধের সুপারিশ । ’ রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ ভাগ ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে । যার ফলে সৃষ্ট যানজটে দূর্ভোগ পোহাচ্ছি আমাদের মত সাধারণ মানুষ ।

প্রতিদিনের যানজটে জীবন অতিস্ট । এক ঘন্টার কাজের জন্য হাতে রাখতে হয় তিন থকে চার ঘন্টা । মাঝে মাঝে তারও বেশি । কয়েকদিন আগে দুপুরে পরিক্ষা শেষ করে তেজগাঁও বিজ্ঞান কলেজ থেকে ফেরার সময় রিকশা নিলাম সিএনজি পেলে ছেড়ে দেব এই শর্তে । প্রথম আলো অফিসের সামনে এসে রিকশা ছেড়ে দিলাম ।

টানা এক ঘন্টা প্রচন্ড রোদে সিএনজির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম । কেউ আমার গন্তব্য অভিমূখে আসতে চায় না । কারণ জানতে চাইলে বলে ওদিকে অনেক জ্যাম । শেষ পর্যন্ত একশ টাকা ভাড়া দিয়ে আমাকে পান্থপথ সিগনাল এ আসতে হয়েছে ! শারীরিক অসুস্থতার (ক্র্যাচ বাবহার করতে হয় )কারণে ফার্মগেট ফুট ওভারব্রিজ পার হয়ে অতি সন্নিকটে অবস্থিত আমার আবাসস্থলে আসা সম্ভব হয়নি । প্রতিনিয়ত আমার মত সমস্যাগ্রস্থ মানুষকে (এক কথায় সকলের মতে প্রতিবন্ধি ।

যা শুনলে সত্যিই খুব কষ্ট হয় !) দূর্ভোগ পোহাতে হয় । সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই । প্রঃ আঃ তে লিখেছে- ১. যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কমিটি রাজধানীতে এক দিন পর পর জোড় ও বিজোড় নম্বরের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার জন্য স্কুলের বাস সার্ভিস প্রবর্তন, হালকা যানবাহনের ক্ষেত্রে ব্যাংকঋণ-সুবিধা বন্ধ এবং সুপরিকল্পিতভাবে রাজধানীর ট্যাক্সিক্যাব-সেবাকে ঢেলে সাজানোর সুপারিশ করেছে। ২. সূত্রমতে, রাজধানীতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যানবাহনের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার। এর মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি দুই লাখের ওপরে।

৩. কমিটির সুপারিশ: ১৪ অক্টোবর যানজট নিরসনে সংস্থাপন উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেমন, ক. পুরোনো গাড়ি নষ্ট করার জন্য কেরানীগঞ্জে স্থান নির্ধারণ, নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি পার্কিং । খ. অবৈধ রিকশার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা, মোটরযান ও ট্রাফিক আইনকে যুগোপযোগী করা । গ. ২৫ বছরের পুরোনো যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ।

ঘ. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের আনা-নেওয়ার কাজে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা নিরুৎসাহিত করতে ২০১১ থেকে বাস চালু এবং ফুটপাতে পথচারী চলাচলের নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। প্রকৃত অর্থে যদি এসব বাস্তবায়ন হয় তাহলে আশা করা যাচ্ছে ঢাকা শহরের চিত্র পরিবর্তন হবে । এছাড়াও ঢাকায় অবস্থিত সকল শিল্প ও পোশাক শিল্প কারখানাগুলো বিভাগীয় জেলায় যদি স্থনান্তর করা হয় তাহলে ঢাকায় লোকসংখ্যা কমে যাবে । ঢাকায় থাকবে শুধু শিল্প প্রতিষ্ঠনুলোর সদর দপ্তর । এতে করে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা অর্থনৈতিক কাজে অগ্রসর ভূমিকা রাখবে ।

ঢাকার উপর থেকে কমে যাবে বারতি চাপ । যোগাযেগ ব্যবস্থার আরো উন্নতি করলে অন্যান্য বিভাগগুলো সমানভাবে ব্যবহার করা সম্ভব । তখন উত্তর বঙ্গের মঙ্গাপিড়ীত মানুষগুলো ঢাকার দিকে রওনা দেবে না । যার যার জেলার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে খুব সহজ ভাবেই কাজ করতে পারবে । ইতিহাসে সিন্ধু সভ্যতার কথা জেনেছি ।

ওই প্রচীন যুগে সভ্যতাটি ছিল পরিপূর্ণ সুপরিকল্পিত নগরি । ভাবলে সত্যিই খুব আশ্চর্য লাগে । সে যুগের মানুষ কতটা আধুনিক ছিল । সেই বিবেচনায় এখনকার যুগ আরো বেশি আধুনিক হওয়া উচিৎ । ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী ।

কিন্তু ঢাকা কে নগরি বলা যাবে না । সমাজ বিজ্ঞানের ভাষায়, নগরি হচ্ছে সেই স্থান যেখানে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা থাকবে । রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, পয়ঃনিষ্কাশণ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সব কিছু হবে সুপরিকল্পিতভাবে নির্মিত । ঢাকা নগরি নয় । ঢাকা একটি জনবহুল শহর ।

ঢাকা কে নগরি তে পরিণত করতে হলে এখনই সময়………

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।