আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিসর পরিস্থিতি

মিসরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থকদের রাজপথ থেকে হটাতে নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ঠুর অভিযানে সরকারি হিসাবে প্রায় ৩০০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বেসরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। কায়রোর রাজপথে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীদের সরাতে তারা হেলিকপ্টার ও বুলডোজার নিয়ে অভিযান চালায়। প্রেসিডেন্ট মুরসি ছিলেন সে দেশের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান। বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়। অনুমান করা হয়, ওই আন্দোলনে সেনাবাহিনীর মদদ ছিল। সেই পঞ্চাশের দশক থেকে মিসরের শাসন ক্ষমতার নেপথ্য শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে সেনাবাহিনী। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাসমর্থিত প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর তাদের ক্ষমতা খর্ব হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক শক্তির দ্বন্দ্ব তাদের অশুভ ইচ্ছা পূরণের পথ উন্মোচন করে দেয়। তারা নেপথ্যে থেকে কলকাঠি ঘুরাতে থাকে। প্রেসিডেন্ট মুরসি ও তার দলের সংরক্ষণবাদী নীতি মিসরে গণতন্ত্রের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। বিরোধী দলের সঙ্গে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। মুরসি এবং তার দলের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টাকে প্রতিহত করতে রাজপথে নামে বিরোধী দল। তারা রাজনৈতিক সংস্কার ও প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে এবং সংবিধান সংশোধনেরও দাবি জানায়। বিরোধী দলের দাবিকে অগ্রাহ্য করার পরিণতিতে মিসরের রাজপথে জনতার ঢল নামে। সরকারপন্থি ও সরকারবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে তোলে। এ সুযোগে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয় সেনাবাহিনী। এ সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার দাবি জানায় তারা। প্রেসিডেন্ট মুরসি শেষ মুহূর্তে পার্লামেন্ট নির্বাচন পরিচালনা এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জোট সরকার গঠনের প্রস্তাব দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত এবং সংবিধান স্থগিত করা হলেও সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতায় না এসে সাংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। এ সরকারের পক্ষ থেকে এক বছরের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মুরসিপন্থিরা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিল। আমরা আশা করব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুরসিপন্থিদের বিক্ষোভ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিলেও দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করবে। নীল নদের দেশ মিসরকে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক শাসনের দিকে নেওয়ার ক্ষেত্রে মুরসিপন্থিই শুধু নয়, সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো হটকারিতাই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.