আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম নিয়ে লেখা… প্লীজ পুরোটা পড়ুন।



তখন ফেসবুকে আমি খুব ভদ্র ছিলাম, আপনিও খুব ভদ্র ছিলেন। হঠাৎ একদিন আপনি আমার ধর্মকে উদ্দেশ্য করে গালি দিয়ে দিলেন… আমি পড়লাম। খারাপ লাগলো, মনে ক্ষোভও জাগলো। আমিও আপনার ধর্মকে গালি দিলাম। শুরু হলো তর্ক, শুরু হলো একের পর এক ধর্মের ভুল ধরা, শুরু হলো গালির ঝড়, অনেকেই এতে যোগ দিলো।

শুরু হলো গন্ডগোল, শুরু হলো যুদ্ধ। তখন শুধু আপনি/আপনারা না, আপনাদের ধর্মটাই আমার কাছে হয়ে গেলো সবচেয়ে বিরক্তিকর/খারাপ লাগার বিষয়। দুচোক্ষে না দেখতে পারার মতো। আপনারো ঠিক একই অবস্থা। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া আমাদের বাড়তেই থাকলো।

অনেক ভালো বন্ধু শত্রুতে পরিনতো হইলো। আমাদের দুজনেরই বিপরীত ধর্মের প্রতি হিংসা বাড়তেই থাকলো। আমি শেষমেষ আপনার সাধের আইডিটা হ্যাক করে নস্টই করে দিলাম। আপনার খারাপ লাগলো আর আপনিও রেগে গিয়ে আমার সাধের আইডিটাও দিলেন নস্ট করে। ব্যাস সব খতম… এরপর আমি আর আপনি দুজনেই পেজ খুললাম।

আসর বড় হইলো, গালিবাজদের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। বেপারটা কিছুটা অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলো। আমাদের স্বাভাবিক জীবনে এটা নিয়ে আমাদেরকে অনেক সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হলো। কিন্তু তবুও আমরা শান্ত হতে পারলাম না। অতঃপর সারাজীবন অন্য ধর্মের ভুল ধরে, অপমান করে, নিচু করে, গালি দিয়েই আমাদের দুজনের লাইফটাই শেষ করে দিলাম।

আমরা শুধু একটা জিনিসই জানি যে আমাদেরকে জান্নাতে যেতে হলে বিধর্মিদেরকে গালি দিতে হবে, মারতে হবে, ওদের ধর্মকে শেষ করে দিতে হবে, যুদ্ধ করতে হবে। আমরা তখন আর কন মানুষকে ভালো খারাপ দিয়ে বিচার করতাম না, ধর্ম দিয়ে বিচার করতাম। আচ্ছা এই যে ভাইয়া আপনাকে বলছি, একটু আমাকে বুঝাবেন। এই যে আমরা ঝগড়া করতেছি, মারামারি করতেছি, গালাগালি করতেছি এতে আমাদের লাভটা কথায়?? এতে আমাদের নিজেদের কি পুন্যটা হলো, আমরা এসব করে দেশকে অথবা দশকে কি দিলাম। এই জিনিসটা বুঝান আমাকে যে আমরা ধর্মের ভুল ধরে, ধর্মকে গালি দিয়ে কি বিশাল পুন্যের কাজ করে ফেললাম।

আর ভাইয়া এসব করতে আপনাকে কে বলছে বলেন তো?? নিশ্চই ঈশ্বর নন। তার ইচ্ছাতেই সব কিছু হচ্ছে, এতো এতো ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে তারই ইচ্ছাতে। তিনি কি ইচ্ছা করলে পৃথিবীতে একটা ধর্মই রাখতে পারতেন না, অবশ্যই পারতেন, কিন্তু তিনি সেটা করেন নি। তিনি চেয়েছেন পৃথিবীটাকে বৈচিত্রময় করে তুলতে, রঙীন করে তুলতে। আর তাই এতো ধর্মের আবির্ভাব ঘটেছে।

সব তারই ইচ্ছা। আর ঈশ্বরের সৃষ্টিতে হাত দেওয়ার বিন্দুমাত্র অধিকার আপনার নেই। আর পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই কিন্তু জন্মগত ভাবেই নিজ নিজ ধর্মকে পালন করে আসছে। আমিতো ভাইয়া মুসলিম ঘরেও জন্ম নিতে পারতাম, আর আপনি হিন্দু ঘরে। তখনও কি আপনি হিন্দু ধর্মকে গালি দিতেন?? আবার আমিতো আপনার পরিবারেও জন্ম নিতে পারতাম আর আপনি আমার পরিবারে।

তখনও কি আপনি আমার বাবাকে গালি দিতেন??? গালি দিয়ে নয়, তর্ক করে নয়, মারামারি করে নয়, ধর্মটাকে চিনুন মন থেকে, জানুন মন দিয়ে, জানান মন থেকে। ধর্ম হলো মানুষকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার একটা পথ। আর এর বিপরীত কোন ধর্মেই লিখা নেই। তাই এসব করে নিজেরসহ আরো দশজনের পাপের বোঝা বাড়াবেন না দয়াকরে। ভাল থাকবেন।

আর আশাকরি আমার পোষ্টটি বুঝতে পেরেছেন। আর কেনই বা বুঝবেন না। অবশ্যই বুঝবেন, কারন আপনি একজন মানুষ। এটা বোঝার শক্তি+জ্ঞান দুটোই আপনার রয়েছে। আর ভাইয়া শুধু নিজে বুঝলে হবে না, মানূষকেও বোঝাতে হবে।

তাই যত পারেন পোষ্টটি শেয়ার করুন। মোবাইল দিয়ে বাংলিশ কনভার্ট করে লিখছি। লিখতে অনেক কষ্ট হইছে এবং হয়তো অনেক ভুলও হইছে। ভুলগুলো দয়াকরে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.