আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাঙামাটির টেগামুখ বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা

নীরব বয়ান

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় সীমান্তবর্তী টেগামুখ এলাকা পরিদর্শনে গেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকালে বিডিআরের পক্ষ থেকে জওয়ান কর্মকর্তা ও সীমান্ত চৌকি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম আলোর অন লাইন খবরে প্রকাশ, বিডিআরের রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল বশিরুল হক মানচিত্রসহ সীমান্ত এলাকার অবস্থা বর্ণনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারের সীমান্ত এলাকায় অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বেড়েছে। এটা রোধ করতে হলে সীমান্ত চৌকির সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। বিডিআরের সেক্টর ও ব্যাটেলিয়ন বাড়ানো নিয়ে কোন মন্তব্যের প্রয়োজন নেই।

যেখানে যা প্রয়োজন তা করা উচিত, কিন্তু তথ্য বিকৃতি নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন বৈকি। বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারের সীমান্ত এলাকায় অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বেড়েছে কি না জানি না। যদি বেড়ে থাকে সেটা প্রতিরোধ করা সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বিডিআরের প্রথম দায়িত্ব। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরের উদ্দেশ্য তা দেখা নয়। সীমান্ত এলাকায় অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বেড়েছে - এ কথা বলে একটা উপলক্ষ খুঁজে বের করা মাত্র।

মূল উদ্দেশ্য হলো, টেগামুখ দিয়ে ভারতে মিজোরামের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করা যায় কি না সেই বিষয়ে একটু খোঁজ খবর নেওয়া। এই উদ্যোগ বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারও নিতে চেয়েছিল। মনে হচ্ছে, বর্তমান আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারও সেই সম্ভাবনা যাচাই করতে চাচ্ছে। মিজোরামের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাক, সেটা সবাই কামনা করে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, বাণিজ্যের কথা না বলে সীমান্ত রক্ষার দোহাই মিথ্যা কথা বলা কেন? বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সোজা কথা না বলে মিথ্যা বলার অভ্যাসটা গেল না কেন? ব্যবসা-বাণিজ্য নির্বিঘ্ন করার প্রয়োজনে যদি সৈন্য ও সীমান্ত চৌকি বাড়ানোর প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা সরাসরি বলা হয় না কেন? সীমান্তে অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বেড়েছে এমন কথা বলে কেন ধুম্রজাল সৃষ্টি করা এবং কার স্বার্থে তা করা? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো চামচামি করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে ধন্যবাদ জানালেন।

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা কেবল কী সেনাবাহিনী ও বিডিআরের একচেটিয়া অধিকার? সার্বভৌমত্ব কাকে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন কী? জনগণকে বাদ দিয়ে কী সার্বভৌমত্ব রক্ষা হয়? ঐ এলাকার জনগণ যদি সেনাবাহিনী ও বিডিআর’কে সহযোগিতা না করতো, জনগণ যদি বিনা পয়সায় সেনাবাহিনী ও বিডিআরের রশদ বহন না করতো সেনাবাহিনী ও বিডিআর কী ঘাস খেয়ে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতো? সেনাবাহিনী ও বিডিআর ধন্যবাদ পায়, আর এলাকার জনগণ হয়ত তিরস্কার পুরস্কার পাবে। সৈন্য ও চৌকি যখন বাড়ানো হবে, ঐ এলাকার জনগণকে একদিকে সেনাবাহিনী ও বিডিআরের জগদ্দল পাথর বইতে হবে, অন্যদিকে অনেককে অস্ত্রধারী সন্দেহে উত্তম-মধ্যম ও ডালের ঝোলও খেতে হতে পারে। সবশেষে আমার সহজ কথা হলো, সরকার যদি ভারতের মিজোরামের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে চায় তা করুক। “স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তরক্ষা” এসব অস্পষ্ট কথা বলে মিথ্যা বলা উচিত নয়, জনগণকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়। বাণিজ্য করতে হলে বাণিজ্যিক ভাষায় কথা বলা উচিত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.