আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্যাশার বাংলাদেশ



স্বাধীনতা আমাদের শত বছরের সংগ্রামের ফসল। ছোটবেলায় পড়তাম স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করাই কঠিন”। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ প্রায় ৩৯ বছর। কিন্তু আমাদের মতো সাধারন মানুষের জীবনে কি কোন পরিবর্তন এসেছে? মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধারা কি পেয়েছেন প্রাপ্য সম্মান? সরল উত্তর হলো, না। সমাজের ঐ উচু তলাতে যাদের বসবাস, যারা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রন করেন শুধুমাত্র তারাই এই স্বাধীনতার ফল ভোগ করছেন।

আমরা তখনও যেমন শোষিত ছিলাম আজও তেমনি শোষিত আছি। এই যে আমরা স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে পারছিনা আমার মতে তার অন্যতম কারণ, আমরা তাদের উপযুক্ত সম্মান দিতে পারিনি যাদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা। কোন সরকার, কোন রাষ্ট্র নায়ক তাদের সেই উপযুক্ত সম্মান দেননি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সাহায্য করেছিলো। তাদের সেই সাহায্য আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করেছিলো।

ভারত আমাদের এমনিতেই সাহায্য করেনি। এখানে তাদের বেশকিছু কুটনৈতিক কারণ ছিলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মধ্যে দিয়ে তারা দক্ষিন এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আমরা হয়তো কেউ মনেই রাখিনি যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অনেক সেনা অংশ নিয়েছিলো। তারা কিন্তু কোন কুটনৈতিক বা অন্য কোন স্বার্থ হাসিল করতে যুদ্ধ করেনি।

তারা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এবং তাদের সরকারের আদেশ পালন করতে আমাদের দেশে প্রাণপন যুদ্ধ করে গেছে এবং অনেকে নিহতও হয়েছেন। আমরা আমাদের দেশের জীবিত এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিইনা। অন্তত রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের ২৬ মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বর ছাড়া আর কোনদিন ভুলেও মনে করা হয়না। সেখানে এই ভিনদেশী যোদ্ধাদের সম্মান জানানোর ফুসরত কোথায়? আমার এই ছোট জীবনে আমি কখনো ঐসব ভারতীয় যোদ্ধাদের স্মরণ করে কাউকে কোন বিবৃতি দিতে শুনেছি বলে মনে করতে পারছি না। স্বাধীণতা দিবস আর বিজয় দিবসে তো অন্তত তাদের কথা স্মরণ করা যেতে পারে।

আমি নিজেকে বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক মনে করি। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আছে আমার যথাযথ শ্রদ্ধা আর সম্মান। তারা বীর। তাদের ত্যাগের কারনেই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এবং বিশেষ করে তরুন প্রজন্ম এক্ষেত্রে অনেক সোচ্চার।

বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি চাই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদান করা হোক। আর সেটা করা হোক রাষ্ট্রীয় ভাবে। একজন মুক্তিযোদ্ধার বড় পরিচয় তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দল করেন নাকি লীগ করেন সেটা দেখা উচিৎ নয়। আমাদের সামনের দিনগুলোতে পথচলায় মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধারা হোক আমাদের প্রেরণা আর শক্তির উৎস।

একটি সুন্দর বাংলাদেশের প্রত্যাশায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.