www.choturmatrik.com/blogs/আকাশ-অম্বর
পাহাড়ের ঢালে দাঁড়াতেই দুফোঁটা ঘর্মবিন্দু যখন নশ্বর শরীর বেয়ে ঝরে পড়লো, বলীয়ান-সচ্চরিত্র বাতাস মৃত্তিকার শীতল-স্পর্শ হতে তাকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। বন্ধনমুক্ত বাতাসে উড্ডীয়মান চুল আর পদতলের সিক্ত প্রস্তরের আকস্মিক বিহ্বলতা – যেন দুফোঁটা ঘর্ম জন্ম দেবে প্রমত্ত স্রোতস্বিনী। প্লাবিত করবে অববাহিকা। একমুহূর্ত স্থির দাঁড়িয়ে থেকে শ্রবণেন্দ্রিয়র সম্প্রসারণে সমতট-গুঞ্জন কর্ণকুহরে অনুরণন তুলতে ব্যর্থ হলেও ভেবোনা এই উচ্চভূমি নিস্তব্ধ। আলোর শব্দ আর মেঘের কাব্য শোনার জন্য শ্রবণশক্তিকে রেহাই দাও কিছুক্ষণ।
দৃষ্টিকে সম্প্রসারিত কোরোনা, বরং লাগাম পড়িয়ে রাখো আস্তাবলে। অম্লজানে পুড়ে যাওয়া নাসারন্ধ্র দিয়ে এবার ধীরে ধীরে টেনে তোলো মানববর্জিত বিশুদ্ধ বায়ু। উদরপূর্তি হলে ছেড়ে দাও যত লোভ দম্ভ কাম ক্রোধ মাৎসর্য পেটুকতা। ওগুলো পড়েই থাকুক ঢালে, ওগুলোর গায়ে জন্মাক অজ্ঞাত কোন আগাছা। কিল্বিলে পোকাগুলো হেঁটে যাক ওদের উপর, সবুজ ঘাস ঢেকে দিক ওদের কলুষিত দৃষ্টি।
সমতলের মৃত্তিকায় সময় ধীরগতির, আর তাই উচ্চভূমির এই পাহাড়চূড়ায় উপনীত হবার ঠিক পূর্বমুহূর্তে পেছনের যত কায়-ক্লেশ পিছু ডাকে। অভিকর্ষজ ত্বরণে ছেড়ে দাও ওদের, ওরা আছড়ে পড়ুক মনের অতলে। খানখান হোক, টুকরো টুকরো হোক, অভিঘাতের খেসারত তোমায় দিতে হবে না। কৈফিয়ত চাইবে না কেউ। নুয়ে থাকা পাহাড়ী লতাগুল্ম পরম স্নেহে পরশ বোলাবে পীড়িত পেশিতন্তু আর যেই মুহূর্তে তোমার আরোহণের প্রয়োজনীয়তা ফুরোবে, তুমি পৌঁছে যাবে গন্তব্যে।
আর তখনই মেঘগুলোকে রাঙা হস্তে ছুঁতে যেয়েই তোমার আঙুলে ভর করবে শূন্যতা।
সময় পেলে প্রশ্ন কোরো পাদদেশের ওই ছোট্ট শিশুকে। দেবদূত তোমায় বলবে, আজ পাহাড়ের ঐ ঢাল বেয়ে উঠে গিয়েছিলো এক আগন্তুক, তার ছোট্ট ঝোলায় মেঘগুলোকে বন্দী করতে। আগন্তুক যখন অন্তর্হিত হয়েছিলো অদৃশ্য কোন স্রোতধারার সাথে, মহাশূন্য হতে বাস্তব-অভিজ্ঞ এক সূর্যদেব মৃদু হেসে বিদায় জানিয়েছিলো তাকে। আগন্তুক ঢাল বেয়ে সমতলে ফিরে এসেছিলো কিনা সেটা না হয় অজানাই থাকুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।