তিনি বলছেন, আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ পদত্যাগ করতে বললে তিনি নির্দ্বিধায় তা মেনে নেবেন।
অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, ২৬ অগাস্টের মধ্যে উপাচার্য পদ না ছাড়লে তাকে বাধ্য করা হবে।
গত দুদিনের মতো শুক্রবার সকালেও উপাচার্যের কক্ষের বাইরে অবস্থান নিয়ে আছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। ফলে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন তিনদিন ধরে নিজের কক্ষে অবরুদ্ধ।
শুক্রবার সকালে তার কক্ষে সাক্ষাৎ করতে গেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনে নেব।
আমি উনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। ”
রাষ্ট্রপতির দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও উপাচার্য জানান।
চলমান পরিস্থিতে হস্তক্ষেপ চেয়ে বুধবার রাতে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন উপাচার্য।
আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “শিক্ষক ফোরাম নামের সংগঠনের কোনো বৈধতা নেই। ”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ‘দুর্যোগে’ শিক্ষার্থীরা তাদের ‘নৈতিক অবস্থান’ থেকে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা করছেন অধ্যাপক আনোয়ার।
অবরুদ্ধ দশা কেটে গেলে তিন মাসের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) নির্বাচন দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে আবারো কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষক ফোরামের সম্পাদক কামরুল আহসান।
তিনি বলেন, “বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী ২৬ অগাস্টের মধ্যে তিনি (উপাচার্য) পদত্যাগ না করলে তাকে চলে যেতে বাধ্য করা হবে। ”
সরকারকে ‘বিব্রতকর’ অবস্থায় না ফেলতেও উপাচার্যের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে সকালে অবরুদ্ধ উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন তার স্ত্রী আয়েশা হোসেনসহ ছোটবোন, ভাগ্নে ও দুলাভাই।
তবে উপাচার্যের কার্যালয়ে ওঢাকার সময় তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করেছেন আয়েশা হোসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রথমে তারা আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিতে রাজি হয়নি, জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের অনুমতির কথা বলেছে। অথচ জরুরি অবস্থার সময়ও আমরা (কারাগারে) অধ্যাপক আনোয়ারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ”
ছোটবোন ডা. জুলিয়া আহমেদ বলেন, “অধ্যাপক আনোয়োরের আপসহীন অবস্থানের কারণেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। ”
দুই বছর আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির বিদায় নিলে সেই দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই নেতা পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন। কয়েক মাস আগে তার বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতি আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়।
এক পর্যায়ে হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বাধা না দেয়ার নির্দেশ দিলে পিছু হটে শিক্ষক সমিতি। এরপর ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’ ব্যানারে নতুন কৌশলে আন্দোলন শুরু হয়, যাতে সাবেক উপাচার্য শরিফ এবং বিএনপি সমর্থক শিক্ষকদের সক্রিয়তা দেখা গেছে।
ধর্মঘট ডাকার পর বুধবার সকাল থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
বন্ধ হয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।
এই অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে আচার্যের হস্তক্ষেপ চেয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
সমস্যার সমাধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রগতিশীল শিক্ষকদের মোর্চা শিক্ষক মঞ্চ, সাধারণ শিক্ষক পর্ষদ। বিবৃতি দিয়ে আন্দোলনকারীদের অশিক্ষকসুলভ আচরণ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দা করেছে শিক্ষকদের ‘নীল দল’ও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।