আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অদেখা সৌন্দর্যের দিকে নিরন্তন পথ চলা (টিপস এন্ড টেইল) - পর্ব ২

মুড়ির চে বাঙ্গালী অনেক সস্তা, দেশটাও।

২০ মে , ২০১০ । বিকেল। পিসির সামনে বসে খুব মনোযোগ আমার । কি যে করছিলাম ঠিক মনে নেই ।

আমার মোবাইলে রীতিমত বিরক্তিকর ব্যাঙ্গের ডাকের রিংটোনটা বেজে ওঠে । রিসিভ করলাম । ওই পার থেকে বঞ্চিত অরিনের অস্থির কণ্ঠ – “এই শোন আজ রাতে ১১টার তুর্ণা নিশিথা-য় উঠছি । রাঙ্গামাটি-বান্দরবান-খাগড়াছড়ি যাবো । আঙ্কেল না চিটাং পোর্ট এর এক্স অফিসার ছিলেন ? আমাদের পোর্টে ঢোকার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন ?” ।

এক নিঃশ্বাসেই কথাগুলো বলে ফেললো সে । আমি বললাম , “ তা পারা যাবে । তবে আমাদের চিটাং এ ঝড়ো বাতাস বইছে । গতকাল বৃষ্টিও হয়েছে । এ পরিবেশে যাওয়াটা কি ঠিক হবে ? ” ।

জানাল সে , যে অবস্থায় হোক তারা যাবে । আমিও রাজি হয়ে গেলাম । আব্বাকে জানালাম , কিভাবে যাওয়া যায় । আব্বা আব্বার ফ্রেন্ডকে বললেন রাঙ্গামাটিতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্যে । সেমতে সেলিম আঙ্কেল আমাদের জন্য রেস্টহাউসের ব্যবস্থা করে রাখলেন ।

আর বান্দরবানে সত্যজিৎ আঙ্কেলকে বলে দিলেন । উনি আমাদের জন্য জটিল ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন । পরে বলছি ওসবের কথা । ২১ মে , ২০১০ । ভোর সকাল ।

বসে রইলাম অরিনদের অপেক্ষায় । ভোর সাড়ে সাতটার দিকে ওরা তুর্ণা নিশিথায় চট্টগ্রাম এসে পৌছলো । পনেরো মিনিটের মধ্যে আমার বাসায় এসে পৌঁছলো ওরা । তারপর নেটে বসলাম । রাঙ্গামাটি , বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলো কোনটা কোথায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম ।

পাঠকদের সুবিধার্থে লিঙ্কগুলো দিলাম – www.dcrangamati.gov.bd www.dcbandarban.gov.bd ক্যামেরার মেমরি কার্ডগুলো সব ফরম্যাট করা হলো । ৯ টার দিকে নাস্তা খেলাম । সাড়ে নয়টায় ঘর থেকে বের হলাম । হেঁটে হেঁটে জি ই সি মোড়ে এলাম । এখানে জামান হোটেলের সামনে থেকে উঠলাম ৮ নম্বর বাসে ।

যাবো অক্সিজেন । এই মোড় থেকেই রাঙ্গামাটির বাসগুলো ছাড়ে । কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পৌঁছলাম অক্সিজেন । বাসের টিকিট কেটেই তড়িঘড়ি করে উঠে পড়লাম ১১ টার বাসে । [ টিপস : আপনি যদি বন্ধুবান্ধবসহ আসেন তাহলে ৮ নম্বর বাসে অক্সিজেন চলে আসবেন ।

(যেখানে এই বাস সার্ভিস নেই সেখানে তো করার আর কিছু নেই , তবে অন্য কোনো বাস সার্ভিস থাকতে পারে ) । অক্সিজেন মোড়ে এসে দেখবেন অনেকগুলো বাস দাঁড়িয়ে আছে । রাঙ্গামাটির বাসগুলো এখান থেকেই ছাড়ে । এখানে কাউন্টার আছে । ভালো সরাসরি বাসগুলোর মধ্যে “পাহাড়িকা” – র সার্ভিস ভালো ।

টিকিটের দাম ৮৫ টাকা । যদি লোকালে যান আরও আধ-ঘন্টাখানেক দেরী হবে । ভাড়া ১০-১৫ টাকা কম । মোটামুটি আড়াই-তিন ঘন্টার মধ্যেই রাঙ্গামাটি শহরে পৌঁছে যাবেন । ] বেলা একটায় এসে পৌছলাম রাঙ্গামাটি শহরে ।

এল জি ই ডি ভবনের সামনে এখানে অপেক্ষা করছিলেন সেলিম আঙ্কেল । তিনি তার জিপ করে আমাদের নামিয়ে দিয়ে আসলেন টিটিসির রেস্টহাউসে । চরম একটা রেস্টহাউস । নাম “বনবীথি” । দুটো রুমই এয়ার কন্ডিশান্ড , ফুল টাইল্ড ।

আর পাশেই ছাঁদ । লোকেশনটা ছিলো টোটালি অসাম । তিন দিকেই লেইক , আরেক দিকে রাস্তা । সেলিম আঙ্কেল আমাদের অনেক টিপস দিলেন । কেয়ারটেকারকে বলে দিলেন যা যা দরকার ।

এরপর চলে গেলেন । আমরা হাতমুখ ধুলাম । খানা খেতে বের হলাম । রাঙ্গামাটি কলেজের বিপরীতেই দুই – তিনটা মোটামুটি মানের হোটেল আছে । এখানেই এসে পড়লাম ।

হোটেলের নাম “রয়েল হোটেল” । ১৫০ টাকায় আমরা পাঁচজন দুপুরের ভাত খেয়ে নিলাম । [ টিপস : রাঙ্গামাটিতে এসে হোটেল ভাড়া করার চে এসব রেস্টহাউস ম্যানেজ করতে পারলে অনেক ভালো । ফ্যামিলি নিয়ে এলে এখানে চরম মজা হবে । সরকারী রেস্টহাউস বলে দামও কম ।

আপনি তিন-চারশ টাকায় ম্যানেজ করতে পারেন । আমরা কিন্তু ফ্রি থেকেছি । ] চলবে… [অদেখা সৌন্দর্যের দিকে নিরন্তন পথ চলা ( টিপস এন্ড টেইল ) - পর্ব ৩] ছবি

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।