আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন অপরিচিত ভ্যাম্পায়ার

যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।

আফজাল সাহেব রাত্রে নিদ্রা যান না। তিনি দিনে নিদ্রা যান। তার মনের কোন চিপায় চাপায় হয়ত মহাপুরুষ হওয়ার ইচ্ছা আছে।

কিন্তু সেইটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। এখন রাত্রি দ্বি-প্রহর। চারিদিকে নিমেষ কাল অন্ধকার। দূর হইতে ক্ষনে ক্ষনে কুকুরের ডাক শোনা যাইতেছে। অন্ধকার বিদীর্ন করিয়া তাহাদের ঘেউ ঘেউ ধ্বনি আফজাল সাহেবের কানে আসিয়া বাজিতেছে।

আফজাল সাহেব চেয়ারে হেলান দিয়ে বারান্দায় বসে আছেন। এক দৃষ্টিতে গেটের দিকে চাহিয়া আছেন। মনে মনে কি চিন্তা করছেন বলিতে পারি না তবে তিনি যে চিন্তিত তা বুঝিতে পারা যাইতেছে। একটু পরে আফজাল সাহেবের চিন্তার কারন বুঝিতে পারা গেল। একটা লোক গেটের দরজা টেলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল।

লোকটা কাছে আসিয়া বলিল, ভাই আপনার কাছে কি স্যালাইন হবে? রাত্রি দিপ্রহরের সময় কেউ গেট টেলিয়া স্যালাইন চাহিবে তা আফজাল সাহেবের কল্পনার কয়েক আলোকবর্ষ বাহিরে ছিল। তথাপি সামান্যতম না ঘাবড়াইয়া তিনি জবাব দিলেন, না ভাই। আমার কাছে স্যালাইন নাই। আপনি কে? আগুন্তুক লোকটা আশাহত মুখে বলিল, আমি একজন ভ্যাম্পায়ার। তিনদিন ধরে কিছু খাই নাই।

পেটে অসুখ ছিল। আফজাল সাহেব কেমন করে চেয়ার হইতে উঠিলেন তাহা বোধ করি তিনিই ভাল বলিতে পারিবেন। খানিকক্ষন লোকটাকে পর্যবেক্ষন করিয়া আফজাল সাহেব কম্পিত কন্ঠে কহিলেন, আমি তো শুনেছি ভ্যাম্পায়ার রা রক্ত পান করেন। লোকটা হাসিতে হাসিতে কহিল, ভুল শুনেছেন চাচা। বাঙ্গালী ভ্যম্পায়ার রা রক্ত খায় না।

আমরা স্যালাইন পান করি। সাথে কয়েক ফোটা নির্ভেজাল রক্ত মিক্সড করতে হয়। আফজাল সাহেব পুলিশের চাকরি করতেন। অনেক বড় বড় অপরাধীর বাকা হাড় তিনি পিঠিয়ে সোজা করেছেন। দুঃসাহসী পুলিশ হিসেবে তার অনেক নাম ডাক ছিল।

খালি যদি বা হাতের কাজটা একটু নিয়ন্ত্রনে করতেন তাহলে অনেক সরকারী গোল্ড মেডেল পাইতেন একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তিনি হুঙ্কার দিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন, হারামজাদা তুই কোন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংঠনের কর্মী এটা বল? আগুন্তুক বিস্মিত হইয়া কহিল, চাচা বুজিতে পারিলাম না? আফজাল সাহেব দাত কিড়মিড় করিয়া কহিলেন,এইটা বাংলাদেশ। এইখানে যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের ছাত্রসংঠনের কর্মীরা পাচ বছরের জন্য ভ্যাম্পায়ার হয়ে যায়। এখন তুই বল তুই কোন দলের?আওমিলীগ না বিএনপি? ভ্যম্পায়ার আফজাল সাহেবের রৌদ্রমূর্তি দেখিয়া ভয় পাইল। সাংঘাতিক রকমের ভয়।

সে এক দৌড়ে গেট দিয়া পলায়ন করিল। আফজাল সাহেব রাগে গড়গড় করিতে করিতে চেয়ারে গিয়া বসিলেন। এমন সময় তাহার মনে হইল গেটে তো তালা দেয়া। তিনি নিজ হাতে সন্ধ্যায় তালা দিয়াছেন। মেড ইন চায়নার বিশাল একটা তালা।

তাহলে লোকটা ঢুকিল কিভাবে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.