আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসি স্বামীর কাছে এক গৃহবধুর চিঠি। (দূর্বল চিত্তের অধিকারিরা নিজ দায়ীত্বে পড়বেন, পাষান হৃদয়ও অ+রুর বাঁধ মানাতে পারেনি। হৃদয়বিদারক )

...

চিঠিটা পেয়েছি বটে, তবে কিছু কিছু শব্দের পাঠোদ্ধার করতে পারিনি এখনও। ওগো, অনেক দিন হয়ে গেল, তোমার কোনও কুশল নাই। বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি। তোমার দেওয়া মোবাইল সেটটাও নষ্ট হয়ে গেছে, মেটিক ফাংশনগুলোও কাজ করছে না ঠিক মত। যা হোক, দুঃখের কথা কি আর বলব, সেই যে তে ঘরের দেয়াল ধ্বসে পড়ল, এখনও মেরামত হয়নি।

সরকার বলেছিল, গ্রামবাসীর সাথে প্রচেষ্টায় আবার পূণর্গঠন শুরু করবে। সেই কথা সার! ঘরে ঘরে মাকড়ের আস্তানা। সাহায্যের জন্য স্কুলটাতে সেনা ক্যাম্প বসিয়েছে, এখনও দুই ট্রুপস আছে। এভাবে আর ভাল লাগে না। পরে পরে ঘুমচ্ছিলাম এই দুপুরে।

তোমার মা এসে আগুন মেজাজ দেখিয়ে ঘুম থেকে । শাশুড়ি আম্মার জ্বালার কথা আর কি বলব! সন্ধায় কাজ সেরে যখন দেখতে বসি টমি মিয়ার রেসিপি, তখন উনার খায়েশ জাগে আমার কণ্ঠে শুনবে -এর গান। শ্বশুর মশাইও কম যান না। কিছুক্ষন পর পর উনার জন্য বানিয়ে দিতে হয় ইশবগুলের ভুষির । ওটা দিনে চৌদ্দবার না খেলে নাকি পেটে হয়ে ব্যাথায় নাকি উনি আবার ঘুমতে পারেন না।

আমার হয়েচে যত জ্বালা। তোমার গুণধর ছোট বোনটার কথা আর কি শুনবে, উত্তরপারার আক্কাস যে ওর ছিল, তা তো জানতাই, গত সপ্তাহে ওর হাত ধরে পালিয়েছে। যাবার সময় শুধু বলে গেছে আমায় না, ফেরানো যাবে না। ওহ্! আমার গুণধর দেবরের কথা তো এখনও বলিনি। তিনদিন আগে বাড়ি ছেড়েছে, বলেগেল, একটা ব্যাঙ্কে নাকি এর চাকরি পেয়েছে, তোমার বাবা কত করে বোঝালো, অন্তত নগো'র চাকরিটা নে, ঐটাতে ঘুষ বেশি।

কে শোনে কর কথা! এর আগে একদিন -র কনসার্টে রূপবানে নাচে কোমর দুলাইয়া'র তালে নাচানাচি করে স্টেজ ভেঙ্গে পাড়ার ছেলেদের হাতে বেদম মারও খেয়েছে। তোমার বাবার খায়েশ হয়েছে এখন হজ্ব করে হবার। তাছাড়া আরেক ননদ বিয়ের বছর পেরুতেই এসে হাজির। যৌতুকের পুরো টাকা না নাকি জামাই আর ঘরেই তুলবে না। বাধ্য হয়ে তোমার মা'র গহণা গুলো দিয়ে দিলাম।

ওমা! বলে ওগুলো নাকি সোনার না, সব নাকি রের গহণা!! কেজি দরে নাকি লারির দোকান থেকে কেনা, আমরা নাকি ওকে ঠগিয়েছি!! এমতাবস্থায় তোমার ছোট র কাছে টাকা চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। পাঠালোও মাত্র ৩০মিলিয়ন সুইস , আমিও সঙ্গে সঙ্গে ফেরৎ পাঠিয়েছি। আর বলেদিয়েছি, আর কক্ষনও যেন বেধর্মীদের মুদ্রায় টাকা না পাঠায়। এরপর পাঠালে যেন এ কনভার্ট করে দেয়, হু!। এত জ্বালা সইতে না পেরে এক্ষনই, এই চিঠি লিখতে লিখতে বিল্লু আর পিঙ্কিকে নিয়ে চলে বাবার বাড়ি।

কি আর করব, হাজার হলেও শ্বশুর-শাশুড়ি; ঝগড়া-ঝাটি করে তো আর করতে পারি না। বিল্লুটা হয়েছে আরেক বান্দরের বান্দর। গতকাল মাদ্রাসার হুজুর এসে কত অভিযোগ করে গেল। বলল, দুষ্টামিতে আপনার ছেলেই মাদ্রাসায় । একে তো র নামায পড়েনি, তার উপর পরীক্ষাতে সূরা ভুলভাল লিখে ফেল করেছে।

আজ সকালে তোমার রেখে যাওয়া রেজার দিয়ে করতে গিয়ে গাল কেটে বসে আছে! শুধু কি তাই, তার উপর উনার নবাবী জিহ্বা। রোজ সকালে নাস্তায় একটা না হলে উনার চলেই না। নতুন মুসিবত শুরু করেছে, হুজুর ওকে একটু কান মুলে শাসন করেছে, তাই বলছে আর নাকি আরবি শিখবে না, বলে কিনা, শিখবে আরবি ছেড়ে!(লা হাউলা ওয়ালা ক্যু ওয়াৎ)। পিঙ্কিটাও কম যায় না। শুটকি চাতালে গিয়ে মুরগি মনে করে ইয়া সাইজের একটা ধরে এনেছে।

দিয়েছে ঠোকর মেরে! ঠোকর খেয়ে এমনই ইনফেকশন বাঁধিয়েছে যে, ডাক্তার বলল, অপারেশন ছাড়া গতি নাই। একটা ভাল খবর আছে গো। পাশের বাড়ির দম্পতির কথা মনে আছে? ওরা না বাবা-মা হয়েছে সম্প্রতি। তবে, বাচ্চাটা হয়েছে অপারেশন করে। ও, তোমার মামা শ্বশুড়ের জামাইয়ের ছোট খালার বড় ননদের ভাসুরের খালাশাশুরির দেওরের চাচি'র জামাইয়ের কথা মনে আছে? ও এবার ইথিওপিয়া গেছে -এর উপর পিএইচডি করতে।

অবশ্য, বাবা বারবার বলেছিল, এর চাইতে অ্যারিস্টটল কিংবা প্লেটো; সাবজেক্ট হিসেবে নিতে। যাক, তবু খারাপ কি! যাই হোক, আমি একলা হাতে এতকিছু আর সামলাইতে পারছিনা গো। অতি সত্বর তুমি ফিরিয়া আসো। --------------------------ইতি ------------------তোমারই ফুলবানু। আইডিয়াঃ আলপিন(রস+আলো)।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।