আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারও বলছি- ওরা পাগল নয়, ওরা মানুষ ।

নতুন নতুন ধারণার জম্ম দিতে চাই

আমি যাদের কথা বলছি ওরাও আমাদের এই সমাজেরই মানুষ। কারও ভাই অথবা বোন, কারও বা সন্তান, কার কাছের মানুষ স্ত্তী অথবা স্বামী ছিল এক সময়। কিন্তু আজ ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ওরা দিগম্বর হয়ে কখনো ফুটপাতে, আবার কখনোবা ব্যস্ত রাস্তার একদম মাঝখানে দাড়িয়ে অর্থহীন ভাষায় কি যেন বলতে দেখা যায়। ঢাকার গাবতলী, মতিঝিল,মহাখালি,আসাদগেট,কখনো গুলিস্তান অথবা কোন জনবহুল এলাকায় ওদের দেখতে পাওয়া যায়। ওদেরকে আমরা পাগল বলে ডাকি।

ভাল মন্দের উর্ধ্বে ওরা, কখনো হাঁসে কখনো কাঁদে, ক্ষিদে পেলে কেউবা হাত পাতে আবার কেউবা সামনে যা পায় তাই খায়। কেহই ওদের প্রতি সহানুভূততি দেখায় না পাগল বলে। আর আমরা সভ্য মানুষ রাস্তায় ওদের দিগম্বর অবস্থা দেখে বিব্রত হই। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চোখকে ডেকে রাখি যাতে ওদের আদিম দেহ না দেখতে পায়। আমার পরিচিতি দূর সম্পর্কের এক বোন ছিল।

পড়তেন সম্ভবত ইন্টারমিডিয়েট ফাষ্ট ইয়ারে । একদিন এই বোন মানসিক ভারসম্য হারিয়ে একেবারে পাগল হয়ে যায়। ঘরের আসবাবপএ সামনে যা পেতেন তাই ভাঙ্গতেন । কাপড় চোপড় সব দাত দিয়ে ছিড়ে ফেলতেন । নিজের গায়েতো কোন কাপড়ই রাখতেন না।

একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে সেই আপাকে ছিকল দিয়ে বেধে রাখতে হয়। বাধা থাকা অবস্থায় তিনি কাঁদতেন আর ছিকল ছেড়ার চেষ্টা কররতেন। তখন দেখে ছিলাম খালা চুপিচুপি কাঁদতেন তার মেয়ের জন্য। একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালার বাড়ীর সবাই দেখেন যে সেই বোনটি কোথায় নেই। রাএের কোন এক সময় ছিকল ভেঙ্গে কোথায় যেন চলে গেছে।

পরে সেই বোনটিকে আর কোথায় খুজে পাওয়া যায়নি। তাই সবাইকে বলব- ওরাও তো এক সময় আমাদের মতো জ্ঞান-বিবেকবান ও সবল মানুষ ছিল। কারও বা আদরের সন্তান ,প্রিয় ভাই অথবা বোন । আবার হয়তো কারও সবচেয়ে কাছের প্রিয় মানুষ-স্বামী বা স্ত্তী। সুস্হ থাকা অবস্হায় ওরাও সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে ছিল-ওদের প্রতি লক্ষ্য রাখবে বলে।

কিন্তু কই সরকারতো ওদের দায়িত্ব নেয় না, কেহই নেয়নি। না নিয়েছে সমাজ, না নিয়েছে দেশ, না নিয়েছে ওদের আত্নীয়-স্বজন। এখানে এসে মানবতা থমকে দাড়ায়। কেউ ওদেরকে মানুষ বলে স্বীকৃতি দিতে চায় না। দায়িত্ব নিতে চায় না।

শুধু একজন হয়তোবা ওদের জন্য এখনও কাঁদে, সে হল মা। জন্মদাএী মা। যদি জানতেন- কোথায় তার আদরের সন্তান পাগল হয়ে ঘুরছে? তাহলে তিনিই শুধুমাএ তার সন্তানটির দায়িত্ব নিতেন। সবশেষে রাষ্ট্র এবং সরকারকে বলব-প্লিজ ওদেরকে মানুষ বলে মনে করুন, ওদেরকে সুস্হ করে তুলুন, ওদের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় ভাবে নিন। আর সমাজ ও পরিবারকে বলব- এমন কোন পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না, যাতে আপনার প্রিয় সন্তানটি মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.