আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাগ্নের "শ্বশুরবাড়ি" জ্ঞান



ভাগ্নের আন্টিমনির যখন বিয়ে হয় তখন ভাগ্নের বয়স ছিল আড়াই বছর। হঠাৎ করে একটা নতুন ঘটনা ঘটে যেতে দেখে সে খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিল। কী সব অনুষ্ঠান হল, অনেক মেহমান আসল, আন্টিমনির মুখে হলুদ লাগাল, মিষ্টি খাওয়ালো। এরপর আরও বড় অনুষ্ঠান হল আর শেষমেশ একটা অপরিচিত লোক পাগড়ী পরে এসে ওর আন্টিমনিকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে গেল। আর আন্টিমনিটাও যে কী, ঐ শ্বশুরবাড়িতেই থাকা শুরু করে দিল।

ফোন করে ভাগ্নে যদি জিজ্ঞেস করত, আন্টিমনি তুমি কোথায়? বলে কি না, আমি বাসায়। আরে আজব তো! এটাই তো আন্টিমনির বাসা, শ্বশুরবাড়ি আবার বাসা হয় কিভাবে। যদিও আন্টিমনির শ্বশুরবাড়িটা তার খুব পছন্দ হয়েছে, ওখানে বেড়াতে যাবার সুযোগ সে পারতপক্ষে ছাড়তে চাইত না। যা হোক আস্তে আস্তে নানা-নানীর কাছ থেকে আরও কিছু জ্ঞান আহরণ করে সে মোটামুটি বুঝতে পারল, মানুষের বিয়ে হয়, আর যার সাথে বিয়ে হয় তার বাড়িটাই হয় শ্বশুরবাড়ি। যেমন আন্টিমনির, মানে নানা-নানীর বাসাটা ওর খালুর শ্বশুরবাড়ি।

এরপর যখন ওর মেজ খালার বিয়ে হল, তখন সে মোটামুটি জ্ঞানী। পানচিনি, গায়ে হলুদ, বিয়ে সব অনুষ্ঠানের মর্মার্থ সে বুঝে গেছে আর সুযোগমত সবাইকে জ্ঞান দানও করছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে সব পিচ্চিরা একসাথে খেলছে, এক পিচ্চি জিজ্ঞেস করল ভাগ্নেকে, "বউ" তোমার কী হয়? ভাগ্নে বলে, -মেজ। --মেজ কী? -মেজ হচ্ছে মেজ, আবার কী? --মেজ আপা? না মেজ খালা? না মেজ ফুফু? কোনটা? ভাগ্নে এবার ভারী বিরক্ত। মেজ আবার এত কিছু হয় নাকি।

পরে অবশ্য মামকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিয়েছিল সে যাকে মেজ বলে ডাকে সে হচ্ছে মেজ খালা। তো ওর মেজ বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি চলে গেল। এবার ভাগ্নে আগে থেকেই জানে এমনটাই হবার কথা, তারপরও কষ্ট যে পায়নি তা নয়। তবে এবার মেনে নেয়াটা সহজ ছিল ভাগ্নের জন্য। মেজ খালার শ্বশুরবাড়িও ঘুরে এল ভাগ্নে, এই শ্বশুরবাড়িটাও সুন্দর।

শ্বশুরবাড়িগুলো কি সব সুন্দরই হয়? ভাগ্নের মাম একবার আম কাঁঠালের ছুটি পেয়ে ভাগ্নেকে বলল, চল, আমার নানাবাড়ি থেকে ঘুরে আসি। ভাগ্নে খুব খুশি মামের নানাবাড়ি যাবে। কয়েকদিন খুব মজা করে ঘুরে আসার পর ভাগ্নের নানা বলল, তুমি তো এবার আমার শ্বশুরবাড়ি দেখে আসলা, এখন বল কার শ্বশুরবাড়ি বেশি সুন্দর। আন্টিমনি, মেজ নাকি নানার? ভাগ্নের চোখ গোল আলু হয়ে গেল। বিস্ময়ের চরমে গিয়ে বলল, নানা! ঐটা তোমার শ্বশুরবাড়ি? তুমি বিয়ে করছ? কাকে বিয়ে করলা? ওকে আর জবাব দিবে কে, সবার পেট ফেটে যায় যায় অবস্থা।

যা হোক, অবশেষে ভাগ্নেকে জানানো হল যে নানা ওর নানীকেই বিয়ে করেছে। ভাগ্নে এবার মহাখাপ্পা, কোন ফাঁকে নানা-নানী দুজন বিয়ে করে বসে আছে, ওকে খবরটা দেয়ারও প্রয়োজন বোধ করেনি। ছোট বলে কি ওর কিছুই জানার অধিকার নেই? তবে ভাগ্নে রাগ যতই করুক, এই সিদ্ধান্তে আসতে কোন দ্বিধা করেনি যে তার নানার শ্বশুরবাড়ি হচ্ছে সবচেয়ে সুন্দর শ্বশুরবাড়ি।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।