আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের বিতর্ক ও বিতর্কের আমরা (শেষ পর্ব)

আমি একজন অতিসাধারণ মানুষ, স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্ন আছে বলেই এখনও বেঁচে আছি

গত পর্বের পর বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি জাতীয় সংগঠন আছে যারা বিতর্ক নিয়ে কাজ করে। বিতর্ক আন্দলনের এই মহান সংগ্রামে আমি সবার অবদান স্বীকার করে নিচ্ছি। বিডিএফ (বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন), অনেক দিন থেকে তারা বিতর্ক অঙ্গনে জড়িত। এত বড় জাতীয় সংগঠন, কত শত বিতার্কিকের মিলনমেলা।

আমি ডিইউডিএস এ কাজ শুরু করার পর জানতে পারি বিডিএফ এর সাথে আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্তপূর্ণ নয়। মজার বিষয় হল বিডিএফ এর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের অনেকেই ডিইউডিএস এর সাবেক। আমার প্রশ্ন, তাহলে সেই সব সাবেকদের ভূমিকা কি, যাতে দুটি সংগঠন কোন রকম সংঘর্ষ ব্যাতীত সহাবস্থান করতে পারে। এর দুটি কারন থাকতে পারে, এক. ডিইউডিএস এ তাদের অতীত তাদের পক্ষে নেই আর দুই. বিডিএফ এ তাদের অবস্থান এমন যে সংগঠন দুটি এক সাথে কাজ করলে তাদের অবমূল্যায়নের সূযোগ আছে। ডিইউডিএস ও বিডিএফ এর সাবেক সভাপতি বুলবুল ভাই এক মতবিনিময় সভায় দুঃখ করে বলছিলেন কোন এক বিতর্কে ডিইউডিএস তার বিচারক হবার ব্যাপারে আপত্তি জানায়, আমার প্রশ্ন আমরা কেন আমাদের সিনিয়রদের বিশ্বাস করতে পারিনা? একটা জাতীয় সংগঠন কেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠনের সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থানে থাকে? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে একটু পেছনে তাকাতে হবে- গড বা জি. ও. ডি. এই বেডরুম সংগঠন(!?)টিকে আমাদের জাতীয় সংগঠন বিডিএফ নানা সময়ে নানা রকম পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।

আমি এই সংগঠনটির আদর্শকে মানতে পারিনি। আমরা দিনের পর দিন রাতের পর রাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ককে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজ করেছি কোন দিন হিসেব করিনি বিশ্ববিদ্যালয়,ডিইউডিএস আমাকে কি দিল, কিন্তু জিওডি'র বিতার্কিকরা ভাবে। তারা নিজেদের আলোকিত দেখতে চায় অথচ নিজেদের আলোয় অন্যদের আলোকিত করতে ভয় পায়। তারা নিজেদে অভিজাত শ্রেণীর বিতার্কিক মনে করেন, তাই সাধারন্যে তাদের এত আপত্তি। আমি বেডরুম সংগঠন বলাতে অনেকে আপত্তি করতে পারেন, আমি ব্যাখ্যা দিচ্ছি- যদি তারা ক্লাব হবে তবে তাদের সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম থাকবে।

আচ্ছা কেউ একজন আমাকে বলুক তারা গত বছর সুদক্ষ পরিচর্যার মাধ্যমে কত জন নতুন বিতার্কিক তৈরি করেছেন যারা পূর্বে কোনদিন বিতর্ক করেন নাই? এই সংগঠনের সবাই তৈরি বিতার্কিক। তারা ডিইউডিএস এর হয়ে বিতর্ক করে না কারন তারা এতটাই স্বার্থপর যে নিজেদের ভালো ছাড়া আর কিছুই তারা বোঝেন না। এবার আসুন কিছু অপ্রিয় সত্য কথা বলি- এই যে সংগঠনগুলো পরস্পরকে বিশ্বাস করে না তার কারন এই সব নেতারা, যারা বছরের পর বছর আমাদের মত সাধারন বিতার্কিকদের ব্যবহার করতে চেয়েছেন। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে চেয়েছেন। তা না হলে বিডিএফ এর মত এত বড় জাতীয় সংগঠন একজন তরুণ নেতৃত্ত তৈরি করতে ব্যর্থ হয়? তুষার ভাইকে এই বুড়ো বয়সে সভাপতি হতে হল? তারমানে কি আমরা ধরে নেবো যে সেই সব নেতারা আসলে আমদের এই তরুণ প্রজন্মকে ভয় পান অথবা বিশ্বাস করেন না? আপনাদের কারনে বাংলাদেশে বিতর্ক আজও কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

আপনারা এ দায় এড়াতে পারেন না। আপনাদের প্রভাব বলয় ঠিক রাখার জন্য আপনারা বিতর্ক ও বিতর্ক সংগঠনকে ব্যবহার করেছেন, করছেন। দোহাই আপনাদের, নতুনদে তাদের মতো ভাবতে দিন, স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিন, আপনাদের অবদান আমরা স্বীকার করি তার মানে এই নয় আমরা কিছু পারিনা। যদি যোগ্য উত্তরসূরি তৈরি করতে না পারেন তবে এই ব্যর্থতা আপনাদের। আপনারাদের ছাড়া বাংলাদেশে বিতর্ক চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে এমন ভাবার তো কোন কারন দেখিনা।

এখনও সময় আছে, নইলে সাধারন বিতার্কিকদের কাঠগরায় নিজের জন্য জবাব খুঁজে পাবেন না..(শেষ)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।