আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভিনব কৌশলে জঙ্গি বিইএম

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আদলে গঠিত নতুন জঙ্গি সংগঠন 'বিইএম'-এর গোপন তৎপরতার কৌশল অনেকটাই ভিন্ন। তারা ধরপাকড় এড়াতে ডিজিটাল পদ্ধতির যোগাযোগ (ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন) এড়িয়ে থাকে। এনালগ পদ্ধতিতে তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। বৃহস্পতিবার বিকালে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার একটি বাড়িতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অভিযান চালিয়ে বিইএম-এর সামরিক শাখার তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা সাংগঠনিক দলিল থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

এ সংগঠনটি এতটাই কৌশলী যে, তারা গোয়েন্দাদের ফাঁকি দিতে এনালগ পদ্ধতিতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে কার্যক্রম চালায়। তবে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চালাতেও তারা পারদর্শী। বড় ধরনের জঙ্গি হামলার জন্য সংগঠনটি গোপনে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের তৎপরতা চালাচ্ছে। গোয়েন্দারা নতুন এ জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রমের কৌশল দেখে যারপরনাই বিস্মিত।

সাংগঠনিক দলিলে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের 'ভাই' বলে সম্মোধন করা হয়।

দলিলে কীভাবে সাংগঠনিক মিটিং বাস্তবায়ন করা হবে এমন একটি নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ভাইকে আগেই মিটিংয়ের স্থান এবং সময় জানিয়ে দিতে হবে। সেটি লিখিত পত্র মারফত বা সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে কখনোই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। এমন বাড়ি বা স্থান নির্ধারণ করতে হবে যার একাধিক প্রবেশ পথ রয়েছে এবং ভাইয়েরা যাতে ভিন্ন ভিন্ন পথে সেখানে প্রবেশ করতে পারেন। প্রবেশের আগে অবশ্যই নজর রাখতে হবে কেউ তাকে ফলো করছে কি না।

এমন পোশাক পরে আসতে হবে, যা ওই স্থান এবং পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সাইকেল মোটরসাইকেল বা সিএনজি লুকিয়ে রাখতে হবে। অথবা এমন জায়গায় পার্কিং করতে হবে যেখানে মানুষ সচরাচর পার্কিং করে। যদি বেশিসংখ্যক লোক বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পুলিশ ফাঁড়ির কাছাকাছি হয় তবে বাইরে গার্ড রাখতে হবে। মিটিংয়ে আসার সময় অবশ্যই মোবাইল ফোন রেখে আসতে হবে।

অথবা এতটা দূরত্বে বন্ধ করতে হবে যাতে বোঝা না যায় মিটিংয়ে অংশ নেওয়া ব্যক্তি বা মোবাইল সেট কোথায় আছে। এক সঙ্গে দুইয়ের অধিক ভাই বাড়িতে ঢুবকেন না। কিছুটা সময়ের ব্যবধান রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে বিনা অনুমতিতে কেউ যেন সেখান থেকে বের হতে না পারে, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

গ্রুপের দলিলপত্র সংরক্ষণ : দলিলপত্রে ভাইদের নাম, গ্রুপের নাম, গ্রুপের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকবে।

এগুলো নানা ধরনের হতে পারে, যেমন_ ফাইল সিডি, ডিস্ক অডিও-ভিডিও বা ছবি। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ দলিল বিবেচনা করে এক স্থানে সংরক্ষণ করা ঠিক হবে না।

সর্বোচ্চ গোপনীয় ফাইল : এখানে ওইসব ভাইয়ের তথ্য থাকবে, যারা গোয়েন্দা গ্রুপে কাজ করে। তারা কোথায় কাজ করে, ভিআইপিদের রিপোর্ট এবং উচ্চতর স্পর্শকাতর তথ্যগুলো। যদি সাধারণ বিশ্বস্ত ও গোপনীয় ফাইল হারিয়ে যায় সেটা খতিয়ে দেখতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তি তার দায়িত্বে সচেতন না হওয়ার কারণে দায়িত্বের অবনতি ঘটবে অর্থাৎ তার আগের অবস্থান থাকবে না।

তার শাস্তি হিসেবে পদাবনতি ঘটবে। অন্য কোনো শাস্তির প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি স্পর্শকাতর বা অতি গোপনীয় ফাইল হারিয়ে যায় সেক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে এবং যদি প্রমাণিত হয় কোনো একক ব্যক্তির বিদ্রোহের ফলে এরূপ ঘটেছে যে, সন্ত্রাসী হিসেবে গণ্য হবে এবং শাস্তিযোগ্য হবে। সে শাস্তি গোপনে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ নিয়ে গ্রুপের অন্য কোনো সদস্যের মধ্যে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।