আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যকথা

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

ভৌগলিকভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) চরম কোনঠাসা একটা অবস্থানে। পশ্চিম দিকে দুর্গম সীতাকুন্ড পর্বতশ্রেনী, উত্তর ও দক্ষিণ দিকেও চলাচলপোযোগী কোন রাস্তাঘাট নেই, কেবলই খাল বিল জঙ্গল। শুধু পূর্বদিক দিয়ে সংযুক্ত মানবসভ্যতার সাথে। মানবসভ্যতা বলতে চট্টগ্রাম-হাঠহাজারী-রাঙ্গামাটি সড়ক। ক্যাম্পাসের মধ্যভাগ থেকে একটি সংযোগ সড়ক (১ নং রোড) ও একেবারে উত্তরপ্রান্ত থেকে আরেকটি সংযোগ সড়ক (২ নং রোড) ১৩৫০ একরের দেশের বিশালতম এ বিদ্যাপীটকে যুক্ত করেছে নিকটস্থ জনপদের সাথে।

২ নং রোডটির মেইন গেট আমি কখনো খোলা দেখিনি (১৯৯৭-২০০৪)। সংশ্লিস্ট দারোয়ান, প্রক্টর স্যার, পুলিশ, আশেপাশের দোকানদার কাউকে জিজ্ঞাসা করেও এটার কোনো সদুত্তর পাওনা যায়নি! তাছাড়া এ রোডটি ভাঙ্গাচোরা, এটার মাথায় বাস দাড়াতে চায়না ও উত্তরে রাঙ্গামাটির দিকে কারো যাওয়ারও বিশেষ দরকার পড়েনা বিধায় রাস্তাটা বাগধারার ২ নং রয়ে গেছে! সুতরাং ১ নং সড়কই চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে চবির অন্যকিছু কেমিস্ট্রির খবর নিই। যে এলাকাটিতে চবি অবস্থিত তা মোটাদাগে খাঁটি চট্টলার নৃতত্বে, অশিক্ষিত, উগ্র, দরিদ্র, বদমেজাজী, মাজারপ্রবন, ধার্মিক-কূপমন্ডুকতায় ভরা সন্ত্রাসপ্রবন হাটহাজারী-রাউজান-ফটিকছড়ি-নাজিরহাট অঞ্চলের পেটের মধ্যে। বিক্ষিপ্তভাবে ড: ইউনুছের মত ২/১ জন উঠে আসলেও, জোবরা, ফতেহপুর, ইসলামমিয়ারহাট, নন্দীরহাট এলাকার (চবির পূর্ব পাশের গাঁ গুলো) মানুষজন সংলগ্ন পাহাড়ী অন্চলে কাঠ বা ছন কাটা, রিকশাচালনা, ক্ষুদ্র-দোকানদারী ও কৃষিকাজ করেই প্রধানত: জীবিকা নির্বাহ করে।

মধ্যপ্রাচ্য রেমিট্যান্সের কল্যানে অনেকের আর্থিক উন্নতি ঘটলেও বিদ্যার অভাবে আচরনে তার কু-প্রভাবই বেশী পড়েছে। আবার সংলগ্ন হাঠহাজারী মাদ্রাসা ও ফটিকছড়ির ভান্ডারের কল্যানে সম্প্রসারন লাভ করেছে ধর্মের নামে নানাবিধ যন্ত্রনা (মাইক বাজিয়ে ভান্ডারী গান)। আর রয়েছে সন্ত্রাস। যাহোক এতকিছু বলার উদ্যেশ্য- চবির প্রতি স্থানীয় মানুষজনের সার্বিক আচরন। চবিতে মাস্টারী করে, এখানে ব্যবসা করে, এখানে রিকশা চালিয়ে, এখানে গরুছাগল চড়িয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করলেও চবির ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি কখনোই 'নূন্যতম ভাল ব্যবহার' করেনা! বিশেষ করে শুদ্ধবাংলায় কথা বলার কারনে যদি বুঝে ফেলে যে আপনি নন-চিটাগাং তাহলে সারল বলে! রিকশাঅলাও আপনার কাঁধে ঠ্যাং তুলে দিবে।

বলবে- বইংগা বা নোয়াখাইল্যা। চট্টগ্রামের লোকজন যশোর, ফেনী, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহনিবাসী সবাইকে পাইকারী নোয়াখাইল্যা বলে! আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক জনৈক বিলেত ফেরৎ ড: কাম প্রফেসর গোপালগন্জবাসী বন্ধুকে বলেছিলেন, "যমুনা ব্রীজ হওয়ার ফলে তো তোমাদের খুব সুবিধে হল!"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.