আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকাঃ বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক

সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............

ঢাকাঃ বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক ঢাকা একটি চেতনাবিহীন শহর। সত্যিকার অর্থে একে প্রথাবিরুদ্ধ রাজধানী শহর বলা যায়। পৃথিবীর সব দেশের উন্নয়ন হয় রাজধানীকেই কেন্দ্র করে। অথচ আমাদের রাজধানীর ঢাকা হচ্ছে এর ঠিক উলটো! ঢাকা হচ্ছে ঘিঞ্জি-বস্তি, ট্রাফিক জ্যাম ও অতিমাত্রায় দূষণ এর এক জীবন্ত উদাহরণ। এখানে নাই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, পার্ক, ভাল ফুটপাত।

আমি মনে করি মানুষের মুখ যদি হয় তার চরিত্রের দর্পণ, তাহলে রাজধানীও একটি দেশের দর্পণ। রাজধানী নগরের ব্যবস্থাপনা একটি জাতির সামগ্রিক আশা আকাঙক্ষা প্রতিফলিত করে। দেশের সকল নারী-পুরুষের চিন্তা-ভাবনা ও অভিব্যক্তি রাজধানীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। সভ্যতার বিকাশ ঘটে রাজধানী নগরীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু ঢাকা মহানগরীর সমস্যাসমূহ সমাধানে ব্যর্থতা ও জীবন-যাত্রার নীচুমান সব চিন্তা-চেতনার বিকাশ ও অভিনবত্বের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের রাজধানী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পেছনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। নাগরিক সেবায় প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলাযায়, নগর ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনের দূর্বলতা সীমাহীন। নাগরিকরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মৌলিক নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। অন্যান্য নগরীর চেয়ে ঢাকায় দূষণের মাত্রা অনেক অনেক বেশি।

নর্দমা ও পয়:বর্জ্যরে দুর্গন্ধ নাগরিক জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। নগরীর বর্জ্য উন্মুক্ত ট্রাকে পরিবহন কোন আধুনিক নগরীর জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি হাসপাতালের কঠিন সংক্রামক বর্জ্যও নিয়মিত অপসারণ করা হয় না। এসব বর্জ্য নগরীর সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এবং পঁচে বায়ু দূষন ঘটায়। আর এই দূষিত বাতাস থেকে নিশ্বাস নিতে হয় নগরবাসীকে।

নগরীর রাস্তাঘাট ময়লা-আবর্জনাময়। খোলা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ও খোলা ডাস্টবিনের ভেতরে ও বাইরে পচতে থাকা মাল্টি আবর্জনা দারুণ দুর্গন্ধ ছড়ায়। নর্দমাগুলো কঠিন বর্জ্যে আটকে থাকে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নগরীর অনেক এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। নগরীর দুঃসহ যানজট স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকে স্থবির করে দেয়।

নগর অর্থনীতির মূলভিত্তি হলো মানুষকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অবাধে, কম খরচে, কম সময়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। সেদিক থেকে আমি মনে করি বর্তমান ঢাকা শহর ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। যার ফলে নগরে বসবাসকারী মানুষের উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অথচ এই উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোই হলো যথাযথ কর্তিপক্ষের মূল দায়িত্ব এবং মানুষের শহরে থাকার প্রেরণার মূল উৎস। এর কারণগুলো হচ্ছে প্রথমত: রাস্তাঘাট তুলনামূলক কম এবং অন্য যেগুলো আছে সেগুলো তুলনামূলক অন্য শহরের তুলনায় প্রশস্ত নয়।

এছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় ফেলে রাখা অনেক সময় ফুটপাত ছেড়ে মূল রাস্তায় দোকানপাট গড়ে তোলাও এর জন্য দায়ী। তাছাড়া ঢাকায় ধীরগতি সম্পন্ন যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি যেমন রিকশা, স্কুটার, ঠেলাগাড়ি, ঘোড়ার গাড়ী, ভিক্ষুকের ঠ্যালা গাড়ী ইত্যাদি। আমার জানামতে শহরের ঠিক মধ্য দিয়ে অন্তত ১৬ টি জায়গায় আন্ডারপাস অথবা ওভারপাস ছাড়াই অত্যন্ত ঝুকিপুর্ণ রেল ক্রসিং রয়েছে এবং যথারিতী ঐসব ক্রসিংদিয়ে ঝুকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। অন্যদিকে মানসম্পন্ন বাস সার্ভিস বা শহর ভিত্তিক ট্রেন, ট্রাম না থাকায় আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা গাড়ী নিয়ে চলাচল করে। অন্যান্য শহরের মতো এ শহরে বাইপাস রোড নেই।

সার্কুলার রোডের অভাব। এই শহর দিনদিনই বাসের অযোগ্য হয়ে পরছে। পৃথিবীর অনেকগুলো দেশের রাজধানী শহর দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। তুলনামুলক ভাবে ঢাকার রাস্তাঘাট, অলিগলি বিশ্বের যেকোন শহরের তুলনায় নিকৃষ্ট। নগরীর মোট যানবাহনের ৬০ শতাংশ ধীরগতির।

ঢাকা সিটির সমগ্র রাস্তার ৭০ শতাংশ এসব যানবাহনের দখলে থাকে। এছাড়া রেলগাড়ী ও ভিআইপিদের চলাচলের সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়ায় সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট। ফলে কর্মজীবী মানুষের কর্ম ঘন্টা(কাজের সময়) নষ্ট হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় উৎপাদন। প্রসংগত শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এর যানজট সম্পর্কে প্রকাশিত লেখার কিছু অংশ তুলে ধরছি, "এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের রাজধানীর ৩০ ভাগ নাগরিক যদি যাতায়াত করে, তাহলে রাজধানীর ভেতরের যাত্রীর সংখ্যা হচ্ছে ৪০ লাখ। তাছাড়া রয়েছে দেশের নানা এলাকা থেকে আগত মানুষ।

প্রত্যেকের যদি গড়ে দুই ঘন্টা সময় যানজটে নষ্ট হয় তাহলে ব্যয় হয় ৮০ লাখ ঘন্টা। প্রতি ঘন্টার গড় মূল্য ১০০ টাকা ধরে দৈনিক দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকা। বছরে ২৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে যদি অতিরিক্ত পেট্রল, গ্যাস, যানজট উদ্ভুত দৈহিক ও মানসিক সমস্যাকে যোগ করি ও অগ্রিম পরিকল্পনার ব্যয় ধরি তবে সংখ্যাটি নিশ্চয়ই ৪০ হাজার কোটি দাঁড়াবে। প্রতি বছরই যানজটের কারণে ঢাকা শহর থেকে দেশ বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

" পুরো ঢাকা শহর জুড়েই রান্নার গ্যাস সংকট! সি এন জি স্টেশঙ্গুলোতে সি এন জি গ্যাস সংকট!! বায়ু, পানি, শব্দ এবং শিল্প বর্জ্য দূষণসহ সকল ধরনের দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে!!! যে কারণে অক্সিজেনের মাত্রা দিন দিন কমছে। নানা ধরনের জানা-অজানা মড়ক ও মহামারী লেগেই আছে এ শহরে। অগণিত মানুষ ভুগছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চোখের ভাইরাস, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, সাইনাস, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জন্ডিস, অ্যাজমা, ব্লাড প্রেসার, হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাম, বসন্ত ইত্যাদি রোগে। এ আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য আরেক মরণফাঁদ। নগরীর হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থা সম্পর্কে বলা যায়, গুটিকয়েক হাসপাতাল ছাড়া শহরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্য পরিচর্যার মান এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন পর্যায়ের।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুল কলেজে শিক্ষার মান অগ্রসর প্রযুক্তির বিশ্ব সমাজের সাথে সম্পর্কহীন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে খেলার মাঠ, গ্রন্থাগার ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চালানোর সুযোগ-সুবিধা অপর্যাপ্ত। নিম্নমানের শিক্ষণপদ্ধতি অভ্যন্তরীণ ও বাইরের খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার সীমিত সুযোগ-সুবিধা ও শৃংখলার অভাব আমাদের ছেলেমেয়েদের নৈতিক মূল্য বোধের অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। তারা ক্রমেই সহিংসতা, চাঁদাবাজি, মাস্তানি, মাদকাসক্তি, নীলছবি ও অন্যান্য সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন নগরীতে শিশু শ্রমিক ও ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে।

অপরদিকে তরুণী ও কম বয়সী মেয়েদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপে। বর্তমানে বিপুল সংখ্যায় মহিলারা শ্রমজীবী হিসাবে ঢাকা নগরীতে আসছেন। এই কর্মজীবী মহিলারা বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করেছে। তাদের রয়েছে নিষ্ঠা। সকল শিল্প ও ব্যবসায়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

তাদের এই সাফল্য জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সুখ্যাতি বহন করে এনেছে। তবে তাদের জীবনযাত্রাকে সফল করে তোলার জন্য অনেক কিছুই করা উচিত। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন এবং বিভিন্ন এন জি ও গুলো অবশ্যই কর্মজীবী মহিলাদের পুষ্টি সরবরাহ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করতে পারে। সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালন তথা নগর প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য আমি অংশত: বাংলাদেশের রাজনীতিকে অনেকেই দায়ী করবো। যদিও শেষ পর্যন্ত এর দায় বাংলাদেশের রাজনীতি বা সরকারের ওপর নয়, পুরোপুরি সিটি কর্পোরেশনের ওপরই বর্তায়।

সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনার জন্য যদি নাগরিক জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে, সেজন্য নিজেদেরকেই দায়ী করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। অন্যান্য ঢাকাবাসীর মত আমিও একজন নাগরিক হিসেবে ঢাকা মহানগরীর সমস্যা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং নগর প্রশাসন কাঠামোর জরুরী পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রশাসন ও নগর জীবনের পুনর্বিন্যাস, পুর্নগঠন এবং নতুন করে ঢেলে সাজানোর পক্ষে। ঢাকা নগরী এখন এক অচল নগরী। এ নগরীর জন্য স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য হবে একে পিছটানের নগরী থেকে সামনে আনার নগরীতে রূপান্তরিত করা । আর এ জন্য দরকার, সাভার, টঙ্গী, জয়দেবপুর, গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, পূর্বাচল এসব ছোট ছোট নিকটবর্তী শহরগুলোর ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়ন সাধন করা।

বিশেষায়িত শিল্প যেমন পোশাক, বস্ত্র, ট্যানারি, প্লাস্টিক, প্যাকেজিং, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি নগরীর মধ্যে না গড়ে নগরের উপকণ্ঠে চতুর্দিকের এলাকায় গড়ে উঠতে পারে। সাধারণত বিভিন্ন দেশে নগরের উপকণ্ঠে ছোট ছোট শিল্পগুলো অনেক বেশি লাভজনকভাবে পরিচালিত হয়। এ ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে নগর কেন্দ্রে বর্তমানে যানবাহন ও মানুষের যে অসহনীয় চাপ বাড়ছে তা আস্তে আস্তে কমে আসবে। আর একই সাথে আমি মনে করি, এ কার্যব্যবস্থার বাস্তবায়ন ও সফলতার মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনকামী জনস্রোতের দাবি মেটানোর জন্য যে হারে নগরায়ন দরকার সে দাবিও দ্রুত মেটানো যাবে। অন্যদিকে নগরায়নের এই বিকেন্দ্রীকরণ সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দেশের সীমিত সম্পদ ও সুবিধা ন্যায্য হারে বন্টন ও পুন:বন্টনকরণে সহায়ক হবে।

দ্রুত ও ন্যায্য বন্টন ও বিকেন্দ্রীকরণ দেশের সামাজিক কাঠামোকে মজবুত করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমি মনে করি সত্যিকার অর্থে বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রশাসনিক অবনতির এক চরমসীমায় পৌঁছেছে। শহরের বাসিন্দারা অবর্নণীয় দুর্দশায় নিপতিত। নাগরিক জীবনের সাধারণ মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত। আমরা যেন আদিম যুগের কোন এক পুঁতিগন্ধময় আবর্জনার শহরে বাস করছি।

ঢাকা মহানগরীর পরিবেশ তথা পানি ও বাতাস দুনিয়ার যে কোন শহরের চেয়ে বেশি দূষিত। যার ফলে নানা ধরনের অজানা মড়ক ও মহামারি, ছোঁয়াচে ও সংক্রামক রোগ দুনিয়ার যে কোন শহরের চেয়ে বেশি। নগরীর রাস্তাঘাটগুলো নিদারুণ ময়লা ও আবর্জনাময়। বেশিরভাগ এলাকার বাতাসে পচা আবর্জনার দুর্গন্ধ। নগরীর দেয়ালগুলোতে নানা আঁকিবুকি ও চিকা।

কোন কোন দেয়ালকে আবার অনেকেই জ্ঞান বিতরণের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন। নগরীর অনেক এলাকা মানুষের বাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা মহানগরীর এই ব্যবস্থাকে বৈজ্ঞানিকভাবে অগ্রসরমান আধুনিক যুগের মানবীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার জ্বলন্ত প্রমাণ হিসাবে নিলেও মোটেই ভুল হবে না। পৃথিবীর কোন দেশের কোন নগরীতেই এ ধরনের পরিস্থিতি চলতে দেয়া যেতে পারে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.