আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাস্ট্র ও ইসলাম, বদনা সর্বস্ব তাবলীগ, নরাধমের রাজনীতি বিদ্বেষ ও ভার্চুয়াল চিল্লা!!

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

বিশিস্ঠ ব্লগার, স্ব-ঘোষিত জ্ঞানের জাহাজ, কোরআন ও হাদীসেরর মুড়ির বস্তা, ধার্মিকতার একমাত্র উৎপাদন ও বিপননকারী তাবলীগের মুখপাত্র জনাব নরাধম বিরাট এক উপসংহার টেনেছেন জটিল গ্রহটির মানব সভ্যতা নিয়ে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ নিয়ে। Click This Link যার সারসংক্ষেপ হল- ইসলাম কায়েমের রাস্তা ২ টি। টপ টু বটম ও বটম টু টপ। ওনার মতে টপ টু বটমের আবার ২ টি উপভাগ।

ধর তক্তা মার পেরেক টাইপ যেমন- আফগানিস্তানের তালেবান। আর রাজনৈতিক দল গঠন করে ভোটে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে সবার উপর চাপিয়ে দেয়া। যেমন- নানান দেশের ইসলামী রাজনৈতিক দল ও এ দেশে জামায়াত। এক্ষেত্রেও দলটি/গুলো প্রচলিত রাজনীতির নানান কালিমায় নিজেরা দুস্ঠ হয়ে শেষতক হালুয়া রুটিতে পরিনত হয় তাই এটাও বর্জনীয়। সুতরাং, জনে জনে মানুষকে বুঝিয়ে সংখ্যাগরিস্ঠ লোক আল্লাহওয়ালা হয়ে গেলেই ল্যাঠা চুকে যায়, আপনা আপনিই দেশের আইন কানুন প্রশাসন ইসলামী হয়ে যায়।

খামাকা ফ্যাসাদে জড়ানোর কোন মানে নাই। অর্থাথ, তাবলীগ জামাতের বিদ্যমান মেথডই এ উদ্দেশ্য একমাত্র গ্রহনযোগ্য পন্থা। তিনি আরও লিখেছেন, রাস্ট্রে ইসলামই কায়েমই বড় কথা নয়, ব্যক্তিগত ভাবে লোকজন ঈমান ও ঈসলামদার হওয়াই বড় কথা। প্রথমোক্ত, কাজটি এনসিলারী। অতএব, আসুন আমরা দলে দলে তাবলীগে যোগ দিই ও দুনিয়াতে যাই ঘটুক না কেন বেহেস্তে অন্তত: একখানা এপার্টমেন্ট বুকিং দিই।

সাপে না কাটার মাদুলী, পু্ত্র সন্তান লাভের তাবিজ, ক্যান্সারে নিরাময়ে পানি পড়া যে দেশে এত বিকোয় সে দেশে এমন ওয়াজ, এত সস্তায় বেহেস্তের কূপন সংগ্রহের জন্য যে চরমতর নাস্তিকও ভোঁ দৌড় দিবেননা সে নিশ্চয়তা কোথায়। কেননা, ঘোরতর নাস্তিক বন্ধুরে যখন কৈলাম- দোস্ত মানলাম তোর কথা খোদা, পরকাল সবই ভুয়া। কিন্তু যদি থাকে? এই যদি থাকের কারনেও কিছু মানুষ অল্টারনেটিভ/ ব্যাকআপ 'ফায়দা' হাসিলের জন্য শিথিল চামড়া নিয়ে অন্তিমকালে মসজিদে ধরনা দেয়। একটা না একটা পর্যায়ে চরম অত্যাচারী স্বৈরাচারী শাসক, দুরাচারী নরনারী, ঘুষ/ দুর্নীতির পাহাড়পতি ও নানাবিধ কালিমাচ্ছন্ন মানুষও স্রস্ঠার কাছে মাথা ঠোকরায়। দুনিয়ার গাছের ফল পুরোটাই খেয়েছেন, এবার আখেরাতের তলা কুড়ানির মহান সুযোগটা থেকে ক্ষমাশীল মহাপ্রভু যেন ডিসকোয়ালিফাইড না করেন।

এহেন মোক্ষম সামাজিক, সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় জীবনের গোধুলীবেলায় একখানা বদনা ও পরিমানমত খেতাবালিশ, হাড়িঁপাতিল সমেত কটা দিন মসজিদে কাটিয়ে দিলে ল্যাঠা চুকার ওয়াজ কেউ করলে তা বাজারে না বিকোয়ে উপায় আছে। কিন্তু আমি এক হাদাঁরাম ক্রেতা বটে! সমাজের বেশীরভাগই বোধ করি হাঁদারাম!! গাট্টি হেগোরে টানেনা। টানেনা মওলানা সাঈদীর সুরেলা বয়ানও। এহেন গোস্তাকীর কি কারন- মানুষ হিসেবে আল্লাহর কাছে কমপ্লায়েন্ট, সৎ, গ্রহনযোগ্য হওয়াই ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের মূল কাজ। রাস্ট্র ইসলাম কি জৈন ধর্ম দ্বারা পরিচালিত হৈল তা না।

-এক। সমাজের বেশীর ভাগ মানুষ 'ভাল' হৈয়া গেলেই রাস্ট্র ভাল মানুষ ও ভাল আইন দ্বারা আপনা আপনি পরিচালিত হৈবে। তার জন্য এক্সট্রা পেরেশানী করার কোন দরকার নাই। -দুই। সুতরাং, গায়ের জোরের তালেবানী পন্থা ও ভোটের রাজনীতি নির্ভর জামাতি পন্থা দুটিই পরিত্যাজ্য বরং বটম টু টপ তাবলীগী পন্থাই বেহতর।

-তিন। এনসিলারী কামটা নিয়াই কথা বলি। হে বেকুব! রোমান, গ্রীক, তুর্কি, উমাইয়া, মোঘল, ব্রিটিশ খেলাফতের দোর্দন্ড প্রতাপ শেষে গোটা পৃথিবীর মুসলিম, হিন্দু, নাস্তিক, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, সাদা, কালো নির্বিশেষে সকল দেশে সকল মানুষের মাঝে নাগরিকের সরাসরি ভোটে দলীয়/নির্দলীয় প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে স্থানীয় বা জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে রাস্ট্র পরিচালনার নীতি মোটামুটি স্থায়ী রূপ লাভ করেছে। শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের কতিপয় 'আইয়ামে জাহেলিয়াত' অঞ্চলেই তা অনুপস্থিত। ভোটচুরি, দলবাজী, হাংগামা, মাঝে মাঝে আর্মির ঝাপটা সহ নানাবিধ অপুর্নতা ও সমস্যা থাকা স্বত্তেও পানামা থেকে ফিলিপাইন, নিউজিল্যান্ড থেকে নরওয়ে শত কোটি মানুষ এটাকেই তুলনামুলক ভাল একটা ব্যবস্থা হিসেবে মেনে নিয়েছে।

বাংলাদেশেও পরিবারতন্ত্র, চুরি, গলাবাজী নানান সমস্যা রয়েছে। তবুও উন্নতি যা করার এ সিস্টেমের মধ্য দিয়েই করতে হবে। ধারালো তলোয়ার নিয়ে একদা সকালে দৌড় দিয়ে বংগভবন দখলও যেমন নয়, তেমনি এমন কোন সন্ধ্যা আসবেনা যে দিন ৫১% লোক কাকরাইল মসজিদে এসে রাতভর চিল্লা দিবে আর পরদিন প্রত্যুষে বাংলাদেশ আপনা আপনি পাল্টে যাবে! সুতরাং, দেশের সকল চোরেরা মিলে চোরতন্ত্র করতে চাইলে 'গনতান্ত্রিক' ভাবেই করতে হবে। চোরেরা দল গঠন করবে, সিঁদ-কাটার শাবল মার্কা নিবে ও ভোটারদেরকে দলে টানার প্রচার প্রচারনার চেস্ঠা করবে। অপরাপর সব মত ও মতবাদ নিয়ে চিল্লা মারা, চিকা মারা বা ব্লগানো চলছে ও চলবে, ফলাফল ঘোড়ার ডিম।

জটিল এ পার্থিব রাস্ট্রটি নিয়ে আসলে কমবেশী সবাই আমরা ভোগান্তির শিকার। মিঠা মিঠা কথা বলে স্বদেশী বিদেশী প্রভুরা বারে বারে চেয়ার দখল করেছে ও তারপরদিন থেকেই তিতা তিতা কাজ করছে। শুদ্ধ সিস্সটেম ও শুদ্ধ শাসকের প্রত্যাশায় কত শত প্রবন্ধ, নিবন্ধ যে আমরা লিখেছি তার কুল নেই। তবুও যেন অবস্থা যে তিমিরে সে তিমিরেই। এর উত্তরন একটাই দেখে শুনে ভাল মানুষ ও ভাল দলকে মনোনয়ন দেয়া আর কাউকেই যদি পছন্দ না হয় তাহলে এ লক্ষ্যে নিজেই এ গিয়ে যাওয়া।

জামায়াত বহির্ভুত অনেক ইসলাম পছন্দ দল রয়েছে, ইসলাম বহির্ভুত ধর্ম-নিরপেক্ষ অনেক দল রয়েছে; রয়েছে জয়নাল হাজারী ব্যতিত অনেক প্রার্থী। আমার মনে হয় না কারো পছন্দে খোদা তালা মেরেছেন, বরং মানুষেরাই লীগ, দল, তাব, জামাত, জাপা নানান মতের শৃংখলে নিজেকে কারারুদ্ধ করেছে। আশা করি ব্যাপারটা আক্কেলমানদের বুঝে আসবে। তবে না বললেই নয়, তাবলীগ জন্ম থেকেই পার্থিব সমস্যাকে এড়িয়ে চলেছে। বালুভুমের উটের মত মাথা গুঁজে ভাবছে 'কোথায় ঝড়?' রাস্ট্র ও রাজনীতি নিয়ে তাদের চিন্তার ত্রি-সীমানায়ও কোনো উচ্চারন নেই।

জনৈক ধর্মগুরুর লেখা একটি মাত্র 'সওয়াবধর্মী' পুস্তক সম্বল নিয়ে তান্ত্রিক একটা গোস্টি গঠন করেছে মাত্র। মহান আল্লাহর কিতাব, রাসুলের সুন্নাহ, তদপরবর্তী জ্ঞানী গুনী মানুষের রচনা, সমকালীন বিশ্বব্যবস্থার বিজ্ঞান, সমাজ, আইন এবং আরো হাজারো টেকনিক্যাল বিষয়াবলীর আলোকে সামগ্রিক আলোকিত ও মানবিক মানুষ গঠন, পর্যায়ক্রমে সমাজের পরিবর্তনের ধারেকাছেও তারা নেই। গোটা তন্ত্রটাই 'পলায়নপর মনোবৃত্তি' সম্পন্ন। এদের চেয়ে ঢের ভালবাসি আমি সে কিশোরীটিকে যে সমবয়সী বান্ধবীর বাল্যবিবাহ ঠেকানোর আন্দোলন করে, নওগাঁর সে যুবকটিকে যে পাখিদের অভয়াশ্রম বানায়, জারের স্বৈরশাসনের পতনের মিছিলে যে কিশোর ছুটে গিয়েছিল, ঘাতক টিক্কা, ইয়াহিয়া খান ও দোসরদের নৃশংসতা রুখেছিল টাংগাইলের যে যুবক। হতে পারে তাদের অনেকের মৌল বিশ্বাস বা পরবর্তী কর্মকান্ডের সাথে কেউ একমত নয়।

আবাল তবলীগ জামায়াতের লোটা ও কম্বল সর্বস্ব 'মৃত' সে চেতনার চেয়ে অনেক ধারালো, অনেক মানবিক, অনেক শুদ্ধ, অনেক ধার্মিক। বেকায়দায় পড়ে 'সব মানুষ ভাল হলেই রাস্ট্র ভাল হৈবে' ধরনের 'আবাল' ধ্বনি মুখের উচ্চারন মাত্র। তবলীগের সিলেবাসে বস্তুটা সপ্নেও নাই। আছে শুধু কবর ও আসমান আর সওয়াব আর সওয়াব! লাখ নিস্পেষিত মানুষ হয়ত এদেরকেই বলবে- তোরা সওয়াব কাধেঁ নিয়ে দুরে গিয়ে মর!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.