আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিছু বলার আছে কী......



কোথায় আমায় দেশের তথাকথিত সূচিল সমাজের জ্ঞান পাপীরা, যারা কথায় কথায় দাদাবাবুদের উদাহরণ টানেন কিছু বুঝে থাকলে আপনা আমাকে বলবেন প্লিজ.. চারদিন আগেই লালু প্রসাদ যাদব হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন, সরকার বিলটি পাস করাতে গেলে পার্লামেন্টে 'যুদ্ধ হোগা'! তার দাবি, ভারতের পুরুষশাসিত সমাজে এই আইন চলতে পারে না! মহিলাদের আবার নিজস্ব রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ কিসের। আমি যাকে ভোট দিতে বলব রাবড়ি দেবী (লালুর স্ত্রী) তাকে ভোট দেবে না তো কাকে ভোট দেবে! গতকাল ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপনের পর রাষ্ট্র্রীয় জনতা দল-আরজেডির লালু প্রসাদ যাদব আর সমাজবাদী পার্টির মুলায়ম সিং যাদবদের তুলকালাম। হৈচৈ, বিশৃঙ্খলা, চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির দিকে আক্রমণের জন্য তেড়ে যাওয়া, বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলার মধ্যে দফায় দফায় অধিবেশন মুলতবি। শেষ পর্যন্ত বিলের ওপর ভোটাভুটি আজ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা। বিপরীতে লালু প্রসাদের আরজেডি আর মুলায়ম সিংয়ের এসপির কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা আর রাজ্য বিধান সভায় এক-তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণের বিলটি আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ উপলক্ষে গতকালই পাস করতে চেয়েছিল সরকার। সকাল ১১টায় অধিবেশন শুরুর পর লালু-মুলায়ম গং আর লোকজনশক্তি পার্টি ও জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডি-ইউ) এক বহিষ্কৃত সদস্যের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি আইনমন্ত্রী এম ভিরাপ্পা মোইলিকে বিলটি উত্থাপনের আহ্বান জানান। সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীরা বিলের সব কাগজপত্র ছিঁড়ে চেয়ারম্যানের দিকে ছুড়ে মারেন। তাদের দাবি, দলিত আর সংখ্যালঘু নারীদের জন্যও কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। এক পর্যায়ে তারা স্নোগান দিতে দিতে চেয়ারম্যানর পোডিয়ামের দিকে এগিয়ে যান।

তুমুল বিশৃঙ্খলার মধ্যেই আইনমন্ত্রী মোইলি বিলটি উত্থাপন করেন। এ পর্যায়ে লালু-মুলায়মের দলের কিছু সদস্য আইনমন্ত্রীর কাছ থেকে বিলটি ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে বল বানিয়ে চারদিকে নিক্ষেপ করতে থাকেন। সমাজবাদী পার্টির নন্দ কিশোর যাদব তেড়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের ডেস্কে ওঠার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে প্রতিহত করেন। আরজেডির সুভাষ যাদব চেয়ারম্যানের পাশে বসা পার্লামেন্ট সচিবকে মারধরের চেষ্টা চালান। অবশেষে প্রথমে ৩টা, পরে ৪টা এবং তারপর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি।

সন্ধ্যা ৬টায় অধিবেশন আবার শুরু হলে ফের হট্টগোল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আর সমঝোতা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিলের ওপর ভোটাভুটি আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। অধিবেশনের আগে আজ সকালে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। নারী কোটা সংরক্ষণ বিল ভারতীয় সংবিধানের ১০৮তম সংশোধনী হিসেবে পরিচিত। বিলটি পাস হতে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন।

তার মানে রাজ্যসভায় বিলের পক্ষে পড়তে হবে নূ্যনতম ১৫৫ ভোট। তবে ২৩৩ আসনের রাজ্যসভায় ১৬৫ জন সদস্যের স্পষ্ট সমর্থন আছে বিলটির প্রতি। আর বিরোধীপক্ষে আছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। প্রত্যেকের ১২ জন করে, আরজেডির ৪ আর জনতা দলের ২ জন। এছাড়া লোক জনশক্তি ও মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের ১ জন করে সদস্য বিলটির বিপক্ষে।

প্রসঙ্গত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের এক হিসাবে দেখা যায়, রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের দিক থেকে বিশ্বে অনেক পিছিয়ে আছে ভারত। এক্ষেত্রে দেশটির অবস্থান ৯৯তম। প্রতিবেশী বাংলাদেশ-পাকিস্তানও এক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে। ভারতের লোকসভায় নারী সদস্য ১০.৮ শতাংশ আর রাজ্যসভায় ৯ শতাংশ। পাকিস্তানে এই হার যথাক্রমে ২২ ও ১৭ শতাংশ।

আর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নারী সদস্য ১৮.৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৭তম। উল্লেখ্য, নারী কোটা সংরক্ষণ নিয়ে কার্যত ছত্রভঙ্গ বিরোধী বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবির। বিজেপি বিলের সমর্থক। কিন্তু সংযুক্ত জনতা দলে এই ইস্যুতে ফাটল স্পষ্ট।

দলের নেতা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার বিলটি সমর্থন করলেও অন্য নেতা শারদ যাদব হাত মিলিয়েছেন লালু-মুলায়মের সঙ্গেই। এনডিএর আর এক শরিক শিবসেনাও বিলের বিরুদ্ধেই সোচ্চার। সব মিলিয়ে বিলের বিরোধিতায় 'ঐক্য' সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম সরকার। তবে নারী কোটার বিল নিয়ে পার্লামেন্টে মারমুখী অবস্থা এই প্রথম নয়। ১৯৯৯ সালে বাজপেয়ি সরকারের আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানি লোকসভায় এই মহিলা বিল পেশ করতে গেলে লালু-মুলায়ম-শারদ যাদব বাহিনী তার হাত থেকে বিলটি কেড়ে ছিঁড়ে সভাকক্ষে উড়িয়ে দেয়।

লালুর দোসর সমাজবাদী 'সুপ্রিমো' মুলায়ম সিং যাদব রোববার সাম্প্রদায়িক ও জাতপাতের সুর চড়িয়ে বলেছেন, 'মহিলা সংরক্ষণ বিল মুসলিমবিরোধী এবং দলিতদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার। তাই কংগ্রেস ও বিজেপি হরিহর আত্মা হয়ে রাজ্যসভায় এটি পাস করানোর ষড়যন্ত্র করেছে। সাহস থাকলে আইন করে রাজনৈতিক দলগুলোর মহিলাদের ভোটে প্রার্থী করাটা বাধ্যতামূলক করা হোক? তা না করলে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বীকৃতি বাতিল করার ব্যবস্থা রাখা হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।