আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডাকাত

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-)

"মা ডাকাত কি"? রাতে ঘুমুতে যাবার আগে শেষবারের মত বাইরে গিয়ে মা'কে প্রশ্নটা করে রুনি। মা রুনির পিঠে ধুম ধুম করে কয়েকটা কিল বসিয়ে দিয়ে বললেন "ঘরে যা পোড়া মুখী"।

বাইরে যতক্ষন ছিল ততক্ষনই রুনি একধরনের অসস্ততি বোধ করছিল, মনে হয়েছে চারদিক থেকে কয়েক জোড়া চোখ তার দিয়ে নজর রাখছে। উঠোন ভরা ছিল বিড়ির গন্ধে। ব্যাপারটা তেমন পাত্তা দেয়নি। রুনি স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকে। কিন্তু নামেই ঢাকায় থাকা।

সর্বোচ্চ পনের দিন ও ঢাকায় থাকে। তার পরেই বাড়ীতে চলে আসে। এবারও ছেলে নাহিন ও মেয়ে মোনা কে নিয়ে বাড়ীতে এসেছে। শ্বশুর বাড়ী একেবারেই কাছে। ঘটনার দিন ও ছিল বাবার বাড়ী।

সবাই কাজ সেরে ঘরে ঢুকছে এমন সময় দরজা দিয়ে হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকলো একদল লোক। সবার মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল। সবার হাতেই ছিল চাইনিজ কুড়াল/দা। ঘরে ঢুকেই লাইট মারে রুনির দিকে। রুনির ভাই বাধা দিলে তার কাধে কোপ দেয় একজন।

এক ফাঁকে ঘর থেকে বের হয়ে শ্বশুর বাড়ীর দিকে দৌড় দিল রুনি। এর মাঝেই একটা মাত্র চিৎকার দিয়েছিল যা ওর দেবর মেহরাব এর কানে যায়। মাঝ পথে থেমে যেতে হয় রুনিকে। চিন্তা করল ওকে না পেয়ে যদি ওর বাচ্চাদের নিয়ে মেরে ফেলে তাহলে এই বেঁচে থাকার কোন অর্থ নেই। এসবের মাঝেই গলার এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইনটা কয়েকটা টান দিয়েছিল ছিঁড়ে ফেলোর জন্যে।

পরে হঠাৎ করে মাথায় আসল প্রথমেই ওর দিকে লাই মেরে ওরা দেখেছে ওর সাথে কি আছে। এখন চেইন না দেখলে পরে মার খেতে হবে। বাড়ীতে ফিরে এলে দলের একজন ওর গলার চেইনটা ছিড়ে নেয় তবে কিছু অংশ গলায় ই রয়ে যায় যা ওরা চলে যাওয়ার পরে খেয়াল করেছে। নাহিনের একটা খেলনা পিস্তল যা দেখতে ছিল অবিকল আসলের মত। অন্য সব কিছুর সাথে এক জন সেটা হাতে নিলে নাহিন কেঁদে বলে উঠে, "আম্মা আমার পিস্তল নিয়ে যায়" রুনি নিষেধ করাতে পরে তা দিয়ে যায়।

এত কিছুর মাঝে কেউ আসতে পারেনি সাহায্যের জন্যে। বাড়ীর চার পাশ ঘেরাও দিয়ে রেখেছিল। মেহরাব একবার বলেছিল, "মা ভাবীর গলা শোনা গেল, দেখে আসি কি হল" কিন্তু রুনির শ্বাশুড়ী ভয়ে ছেলেকে ঘর থেকে বাইরে যেতে দেননি। সব চলে যাওয়ার পরে এবার খোজ পড়ল রুনির কয়েক মাস বয়সী মেয়ে মোনার। বিছানায় না পেয়ে রুনি চিৎকার করে বলে উঠল "আমার মেয়েকে ওরা নিয়ে গেছে, মাঠর মধ্যে নিয়ে মেরে ফেলবে"।

অনেক খোজা-খুজির পরে ওর চাচা শ্বশুড় দেখেন খাটের নিচে কাঁথায় মোড়ানো কিছু একটা পরে আছে। বের করে এনে দেখেন ছোট্ট মোনা নিশ্চন্তে ঘুমুচ্ছে। বাড়ীর এই একমাত্র সদস্যা যাকে কিছুক্ষন আগে বয়ে যাওয়া ঝড় স্পর্শ করেনি। সেদিন সন্ধ্যায় মাকে করা প্রশ্নের জবাব রুনি এভাবেই হাতে কলমে তাৎক্ষনিক ভাবে পেয়ে যায়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।