আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রদের রাজনীতি করা উচিত

রাতের আকাশের নগ্নতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি কিন্তু পারি না মনের আকাশ দেখতে।

সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশী ছাত্রদের রাজনীতি করা উচিত। অভাব এবং চাহিদা শব্দদুটোর সাথে Economics, BBA, Social work, Sociology এর ছাত্ররা খুব ভাল ভাবেই পরিচিত। আমি অভাব এবং চাহিদা শব্দদুটো ব্যবহার করব। কিন্তু জ্ঞান গর্ভ আলোচনা করব না।

সেজন্য মিডিয়াতে টক শোর ব্যবস্থা আছে। আমি শুধু শিরোনামের পক্ষে কিছু মোদ্দা কথা তুলে ধরব। কেন রাজনীতি করা উচিত সেটা জানলে কেন ছাত্ররা রাজনীতিতে জরায় এবং কিভাবে এ থেকে তাদের কে নিবৃত্ত করা যায় তা স্বজ্ঞান ব্যক্তি মাএই বুঝতে পারবেন। সেই সাথে আমার উদ্দেশ্যটাও। তাহলে শুনুন:: ১. প্রথমেই নিরাপত্তা।

পাবলিক ভার্সিটির কোন ক্যাম্পাসে নতুন কেউ এসেই চারপাশ থেকে হোঁচট খায়। রাগিং, চাঁদাবাজি, মেস পায় না। তারা যায় সিনিয়র ভাইদের কাছে। সিনিয়ররা বিষয়টা কাজে লাগায়। পরিস্থিতি বোঝার আগেই জুনিয়র ছেলেটি জড়িয়ে পড়ে।

জুনিয়র হয়ে সিনিয়রদের কথা অমান্য করার অসভ্যতা বা দু:সাহস তাদের কচি মগজে থাকে না। এদিকে আবার নিরাপত্তা চাই। কোন অঘটন ঘটলে, সাহায্য চাইলে প্রক্টরিয়াল বডি মোবাইল বন্ধ করে নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়। বেশির ভাগ সময় তারা জানতে পারেন পত্রিকা পড়ে। কাজেই মাথার উপর ছাতা চাই।

চাই কাধেঁ হাত রাখার মত ভন্ড রাজনীতিক বড় ভাই। ২. হলে সিট। থাকা এবং সুলভে খাওয়া অন্য একটি বড় ব্যাপার। বুয়েট ছাড়া বৈধভাবে কোথায় কেউ কোন হলে সিট পেয়েছে আমার জানা নেই। তাই সিট পেতে পরিচিত কোন বড় ভাই তা যে কোন দলের ব্যানারে থাকুক না কেন, সে ভাইয়ের সাথে গিয়ে ঐ দলে নাম লেখাতে হয়।

প্রথম প্রথম মিছিলে গলা ফাটিয়ে স্লোগান, মাঝে মাঝে পিকেটিং, মিটিং এ ডাক পড়লে সময় মত উপস্থিত হওয়া। ব্যাস, দুই তিন মাসের মধ্যে কেল্লা ফতে। একখান সিট তাহার। ৩.নিরপেক্ষ থাকা অনেক রিস্ক। গন্ডগল বাজলে নিরীহ (রাজনীতির ধারে কাছে নেই) কেউ স্পটে থাকলে: নির্ঘাত মরতে হবে।

নিরপেক্ষ নিরীহ সাধারণ ছাত্রকে মারার একটা সুবিধা আছে রাজনীতিকদের। এ রকম কোন ছাত্র মারা গেলে নিজের দলের কর্মী হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়। আর দ্বিতীয়ত নিজের দলের বলা না গেলেও "ছাত্রদের উপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদাসীন" এই উস্কানী কথা বলে দল এবং নিজে ভাল থাকা যায়। আবার আন্দোলন করে পরিস্থিতিও ঘোলাটে করা যায়। কাজেই রাজনীতির একটা লোগো গায়ে লাগিয়ে ঘুরলেই মৃত্যুর রিস্ক অনেকটা কমে আসে।

৪.ভাল রেজাল্ট করতে হলে দুটো উপায়। হয় নিয়মিত প্রচুর পড়তে হবে। নয়তো ভাল নেতা হতে হবে। শিক্ষকদের সাথে ভাল যোগাযোগ থাকলে, শুধু পরীক্ষায় উপস্থিত থেকেই যে কোন নেতা ভাল রেজাল্ট করতে পারবে। কম পরিশ্রমে বেশি প্রফিট যাকে বলে।

৫.কোন সুন্দরী মেয়ের ওড়না ধরে টানতে চাইলে বা বাংলা সিনেমার নায়কদের মত ঊন্মুক্ত চুম্বন করতে চাইলে, রাজনীতির কোন বিকল্প নাই। ৬.প্রেম টিকিয়ে রাখার জন্যেও রাজনীতি ছত্রছায়ায় থাকা দরকার। তাহলে মনের মানুষের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। শিশ দিতে পারবে না, বাজে মন্তব্য করতে পারবে না। বরং স্বপ্নকণ্যার জন্যে ছোট ভাইদের কাছ থেকে গিফট পাওয়া যাবে।

৭.অফ টাইমে ওনার উনি কোথাও কারও সাথে টাংকি মারছে কিনা তারও খবরা খবর সহজে বিশ্বাস যোগ্যতার মাধ্যমে জানতে পারবে। ৮.হল ক্যান্টিনে বা ক্যাফেটেরিয়ায় বিল কম দিতে পারবে। সেরকম হলে মাগনাও খেতে পারবে। ৯.হলেসিট দেবে বলে গোপনে জুনিয়র দের কাছ থেকে টাকা নিতে পারা যাবে। যাকে সেকেন্ড ইনিংন্স সিট বাণিজ্য বলা যেতে পারে।

ছাত্র অবস্থায় বৈধ্য ইনকাম। ১০.ভর্তি যুদ্ধে টিকতে না পেরে হয়ত মেডিকেল স্টুডেন্ট হতে পারেননি। কিন্তু প্রতিভা তো চাপা থাকার জিনিস না। হাত পায়ের বা গলার কোন রগ কাটলে কিংবা বুকের কোন অংশে একটা গুলি করে নিমিশে কাউকে মেরে ফেলা যায়। তা হাতে কলমে শিখতে পারবেন।

১১.আবার আপনি যদি মুরগী কামালের রেকর্ড ব্রেক করতে চান। তবে ওয়ান টাইম ইউজ নীতি পালনে অভ্যস্ত হতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ উপায় হল প্রথম শ্রেনীর নেতা হওয়া। অন্য সুবিধা হল, থানা কোন রেপ কেস নেবে না। তাই কোন ঝামেলা নেই।

উপরন্তু রঙ্গিলা হোটেলে গিয়ে টাকাও খরচ করতে হবে না। হাতের কাছেই ফ্রেস জিনিস পাচ্ছেন। ১২.ভার্সিটির প্রত্যেক ইটে আপনাদের স্মরনীয় স্মৃতি গাঁথা থাকবে। আপনারাও দেশ তথা ভার্সিটির তথা ভবিষ্যৎ ভাইদের কথা ভেবে টেন্ডারবাজি করবেন। উন্নয়ন প্রকল্পে অংশ নিয়ে আপনি মানসিক শান্তি পাবেন।

১৩.যদি নিয়োগ পেতে চান তবে সরকারী চাকরীতে মন্ত্রীদের রেফারেন্স লাগবে। আর প্রাইভেট ফার্ম হলে ধনী বা ব্যাংকার মামু থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতি খুবই ফলপ্রসু। কারন রাজনৈতিক পরিমন্ডলে অনেক আপন মামু জন্মায়। ১৪.সংগঠন করার অভিজ্ঞতা থাকার জন্যে যেসব এন্জিও দলবদ্ধভাবে কাজ করার অভিজ্ঞ ব্যক্তি চায় সেখানে সরাসরি সি.ভি জমা দিতে পারবেন।

কেননা কন্ট্রল করার ক্ষমতা সবার থাকে না। তাই অবশ্যই অগ্রাধিকার বলে নিয়োগ পাবেন। ১৫.বাংলা সিনেমার নায়ক হতে না পারেন, রাম দা, চাইনিজ কুড়াল বা এ কে ৪৭ রাইফেল নিয়ে ফটোসেশন করবেন। দেখবেন নায়কদের চাইতেও আপনি খ্যাতিমান হয়ে গেছেন। কারণ পত্রিকার প্রথম পাতায় আপনার রঙিন ছবি ছাপা হবে।

অনেক তো বললাম। আসলে সব যদি আমি বলি তাহলে ভাল দেখায় না। কিছু ব্যাপার গোপন রাখলাম। ব্যাপারটা বুঝতে হবে। তবে মনে রাখবেন, বাংলাদেশে যার কেউ নাই তার জন্যে পলিটিক্স আছে।

*শর্ত প্রযোজ্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.