আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টুটুলের বাবার গল্প

জড় এক প্রসঙ্গ কাঠামোর নিবিড় পর্যবেক্ষক :P রহিম সাহেব জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন । কুঁচকানো ভ্রু গুলো তার কপালের বলিরেখার সাথে মিলেমিশে সীমাহীন বিরক্তি প্রকাশ করছে। জানালা দিয়ে তার ছেলে টুটুলকে দেখা যাচ্ছে। সে আপন মনে বৃষ্টিতে ভিজছে। ভিজছে না বলে ময়লা পানিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে বললেই ভালো হবে।

তবে রহিম সাহেবের বিরক্তি এই কারনে না। এককাপ চায়ের কথা বলেছেন আধাঘন্টা হল অথচ চায়ের কোন খবর নেই। ফটিক নামের নতুন যে কাজের ছেলেটা রেখেছেন সে আবার সুযোগ পেলেই পাশের বাসার বুয়ার মেয়ের সাথে ইটিশ-পিটিশ করে। টুটুলের মা এইসব লোকজন দিয়ে কি করে যে কাজ করাত আল্লাহ মালুম। টুটুলের মা যেদিন ডিভোর্স পেপার নিয়ে রহিম সাহেবের সামনে এসে দাড়িয়েছিল সেদিনও এমন ঝুম বৃষ্টি নেমেছিল।

- "কি এটা?" -"ডিভোর্স পেপার। " টুটুলের মায়ের গলায় যন্ত্রের নির্লিপ্ততা ছিল সেদিন "সাইন করো, আমি আমার ভাইয়ের বাসায় চলে যাচ্ছি। " - সাইন করে দিচ্ছি। এককাপ চা দিতে পারবে? দশ মিনিট পর রহিম সাহেব আবিষ্কার করলেন তিনি চায়ের কাপ হাতে বৃষ্টিতে ভিজছেন। টুটুলের মা আগেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিল।

আর সেদিনই ছিল রহিম সাহেবের শেষ "চাহিবা মাত্র চা হাতে পাওয়া"। -"নেন স্যার। ঘরে চিনি আছিলো না। হেল্লাইগ্যা দেরি অইলো। " এতক্ষনে কাজের ছেলেটা চা নিয়ে আসলো।

রহিম সাহেব এমন বৃষ্টির দিনে কারো উপর রাগ করেন না। না টুটুলের মায়ের উপর না ফটিকের উপর। চা হাতে তিনি আবার জানালায় চোখ রাখলেন। টুটুল এখন বৃষ্টির পানিতে বসে আছে আর থেকে থেকে লাফিয়ে সামনে যাবার চেষ্টা করছে। এটা নাকি ওর "ব্যাঙ-ব্যাঙ খেলা"।

মৃদু হেসে রহিম সাহেব চায়ের কাপে চুমুক দিলেন। ফটিক ছেলেটা দেরিতে হলেও ভালই চা বানায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।