আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাসে বাংলা ভাষার ব্যবহার

ঈদ মোবারক, সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছ

প্রবাস জীবনে ভাষা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ, যে যত সুন্দর ভাবে তা প্রয়োগ করতে পারবে তিনিই চচ্ছেন সবচেয়ে সফল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এ কোন ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, যার জন্য সেই বায়ান্নর ভাষা আন্দেলন থেকে শুরু করে একাত্তর এর স্বাধীনতা সংগ্রাম এর মাধ্যমে শেষ করেছি। না না না, সেটা শুধু আমাদের গর্বের ভাষা মাতৃ ভাষা হয়েই রইল। যার জন্য এত রক্ত জরিয়েছি, হারিয়েছি কত প্রান, লাখে মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলা ভাষা। আজ সেই ভাষায় কথা বলার লোক খুজে পাইনা।

মনখুলে বলতে পারিনা আমার হৃদয়ের কথা, সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত বিদেশীদের শিখানো বুলি তোতা পাখির ন্যায় বলতে আছি। যেখানে খুঁজে পাইনা নিজস্ব স্বাধীনতা, এত সংগ্রামের পরেও আজ মনের ভাষায় কথা বলতে পারিনা। কারন আমরা প্রবাশী, আমরা অন্যের দেশে এসেছি আর্থ উপার্জন এর জন্য, তাই তাদের কর্ম সম্পাদন করিতে হইলে তাহাদের ভাষায় কথা বলিতে হইবে, এটাই সাধারন নিয়ম। আরব দেশের ভাষা আরবি, এটা নবীর ভাষা, আমরা যারা মুসলমান আমরা সবাই এ ভাষা কে শ্রর্ধা করি, এবং চেষ্টা করি শিখতে কারন এটা কোরআনের ভাষা। মধ্যপ্রাচ্যে যারা কাজ করতে আসেন তারা সবাই ভাষাগত সমস্যাই ভুগেন।

এটা স্বাভাবিক ব্যাপার ভাষা না জানলে মনেরভাব লেনদেন করা যায় না, আর মনের ভাব যদি লেনদেন নাই করা যায় তাহলে তাদের সাথে কাজ করবেন কিভাবে। আর কি ধরনের সমষ্যায় আমরা বাঙ্গালীরা সম্মুখীন তা এখানে তুলে ধরা হলো আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে ভাষা না জানার কারনে আমাদের শ্রমিক রা বসের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতে পারে না, আর এ না পারার কারনে সে ঐ কাজ ভালো ভাবে শেষ করতে পারেনা তখন হয় কি বস বলে তুমি কাজ পারনা এই বলে তাকে ট্রেডধারী মেস্তুরী থেকে হেলপার করে দেয়া হয়। কিন্তু দেখা গেছে এই লোকটা কাজ টা চাহিদা মোতাবেক সম্পন্ন করতে পারত, কিন্তু সে কাজ জেনেও তা পারে নাই কারন সে মালিকের চাওয়াটাই বুঝতে পারে নাই। যদি একজন শিক্ষিত বাঙ্গালী মেস্তুরী হওয়ার পরেও সে এক অশিক্ষিত পাকিস্তানী লেবারের আওতায় কাজ করতে হচ্ছে, কারন সে বলতে পারে না বুঝতে পারেনা। আর পাকিস্তানী তার নিজের ভাষায় কথা বলতেছে।

উল্লেখ থাকে যে, এখানে ৭৫% মানুষের ভাষা হচ্ছে উর্দু এবং হিন্দি। আর এ দুই ভাষা হচ্ছে মামাত ফুপাত ভাই, তাই তাদের কোন সমস্যা নেই। বাকী টা হচ্ছে আরবী এবং ইংরেজি। ইংরেজির ব্যবহার হচ্ছে মুষ্টিমেয় জায়গায় বিশেষ করে আমরা যারা অফিসিয়াল কাজ করি তারাই ব্যবহার করি, আর এদের মধ্যে আমরা বাঙ্ঘালীর সংখ্যা খুবই নগন্য। বেশির ভাগ হচ্ছে শ্রমিক শ্রেনীর।

এখন বলতে হয় যে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছি ঠিকই কিন্তু উর্দূর বিরুদ্ধে আমরা আজও পরাধীন বিশেষ করে আমরা যারা প্রবাশী। পাইক্যারা আজও আমাদের শোষন করতেছে। আজ বিকেলে আমার এক দেশী ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত তখন দেখলাম সে কাঁদতে আছে, জিগ্যেশ করতেই বলল তার ২দুই দিনের হাজিরা কেটে দিয়েছে কারন তার পাইক্যা ফোরম্যানের কথা শুনেনাই বলে, আমি তাকে জিগ্যেস করলাম আপনার সমস্যা কি তখন সে বলল ভাই আমি নতুন মানুষ হিন্দি বলতে পারি না সে কি বলেছে তাই বুঝতে পারিনি। আমার খুব খারাপ লেবার মানুষ কতই আর বেতন পায় তার উপর দুই দিন, অথচ লোকটা সারা দিন কাজ করেও তার ন্যার্য আদায় পাচ্ছে না। এমনি করে আমরা এখনও পাইক্যার কাছে জিম্মি শুধু তাদের ভাষার কারনে।

এই যদি হয় আমাদের প্রবাশে ভাষার ব্যবহার তাহলে তো বিদেশি ভাষার যাতাকলে পড়ে এক দিন আমাদের নিজের মাতৃভাষাকে হারিয়ে ফেলব। অবশেষে বংলা ভাষার জন্য যারা নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এখানে বিদায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।