আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে



দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্রেস্ট ক্যান্সার। যথাযথ চিকিত্সার অভাবে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নারীর মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ দেশে ক্যান্সার রোগীর প্রকৃত সংখ্যা কত তার কোনো পরিসংখ্যান নেই সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ, চিকিত্সক ও গবেষকদের কাছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয় করা গেলে তা প্রায় শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিন্তু দেশের শতকরা ৬৫ শতাংশ নারীর ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই।

অশিক্ষা ও সচেতনতার অভাবে দেশের ৯৫ শতাংশ মহিলা এ রোগের লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা রাখে না। ব্রেস্ট ক্যান্সার আছে কিনা তা প্রাথমিকভাবে ঘরে বসেই পরীক্ষা করা যায়, কিন্তু এ সহজ পরীক্ষাটি ৯৫ শতাংশ মহিলাই জানে না। গত শনিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেমিনারে প্রধান গবেষণা পত্র পাঠ করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খন্দকার একে আজাদ। সেমিনারে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ব্রেস্ট ক্যান্সরের ওপর চালানো এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় ক্যান্সার সাপোর্ট সোসাইটি চমেক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খন্দকার একে আজাদের অধীনে এ জরিপ হয়। ২২ হাজার ১৭৬ জন নারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। জরিপে ৪৫৪ জন নারীকে প্রাথমিকভাবে ব্রেস্ট ক্যান্সার থাকতে পারে বলে শনাক্ত করা হয়। এদের মাঝে ৩৭৭ জনকে পূর্ণাঙ্গরূপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২১ জনের ক্যান্সার শনাক্ত করা হয়। এদের মাঝে ২ জনের বয়স বিশ বছরেরও কম।

একই সঙ্গে ১৪৩ জনের ফাইব্রোমা, ২৫ জনের ফাইব্রোএডিনোমা, ৩ জনের যক্ষাজনিত টিউমার শনাক্ত করা হয়। অর্থাত্ এ উপজেলায় প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে একজন ব্রেস্ট ক্যান্সারে ভুগছে। এ হিসেবে বাংলাদেশে ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর যে সংখ্যা দাঁড়াবে তা রীতিমত আতঙ্কজনক। উন্নত বিশ্বে প্রতি লাখ নারীর মাঝে ৩০০ জন এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি লাখে প্রায় ১৫০০ জন নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে ভুগে থাকে। আমেরিকায় প্রতি আটজনে একজন ক্যান্সারে ভুগে থাকে, যাদের ৮০ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের বেশি।

অন্যদিকে ইন্ডিয়া সাব-কন্টিনেন্ট অঞ্চলে প্রতি ১২ জনে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যাদের ৭৫ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের বেশি। কিন্তু পটিয়ায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত তাদের প্রায় সবার বয়সই ৫০-এর নিচে, যা এখন ভাবনার বিষয় বলে মতামত ব্যক্ত করেন সেমিনারের বক্তারা। উন্নত বিশ্বে ক্যান্সারের জন্য দায়ী অনেক সম্ভাব্য কারণ থাকলেও বাংলাদেশে ঠিক কী কারণে ক্যান্সার আক্রান্তের হার বাড়ছে, তার সঠিক কোনো কারণ এখনও খুেঁজ পাননি গবেষকরা। সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সঠিক সংখ্যা জানা নেই।

এই ধরনের রোগীদের রেজিস্ট্রেশনের বিধান চালু করাসহ যথাযথ চিকিত্সা সুবিধা সৃষ্টির জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তারা। ১৯৭১ সাল থেকে আমেরিকা এ ব্যাপারে আইন প্রণয়ন করলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা নেই। সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের ডা. মোঃ মোস্তফা জামান, হেলথ এডুকেশনের ব্যুরো চিফ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ, অধ্যাপক ডা. উমর ফারুক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শল্য চিকিত্সাবিদ অধ্যাপক ডা. এএসএম ফজলুল করিম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.