আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিউ - "The Book of Eli:Religion is Power"

আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনই,তুমি কি অপরুপ রুপে বাহির হলে জননী পারমানবিক ধ্বংসযজ্ঞে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া পৃথিবীর বুক চিরে ছুটে চলেছে এক মুসাফির । গন্তব্য তাঁর পশ্চিমে । যে পৃথিবীতে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে,সেই পৃথিবীতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো প্রাণ বাঁচিয়ে রাখতে গড়ে তুলেছে লুটের রাজত্ব । চারপাশে লুটেরাদের হিংস্র থাবাকে সমান্তরালে রেখে মুসাফির তাঁর গন্তব্যে যাচ্ছেন এক অতীব গুরুত্বপুর্ণ বই সাথে করে,যেটা পৌঁছে দিতে হবে যোগ্য ব্যক্তির হাতে । মুসাফির তাঁর গন্তব্যের শেষ আসলে কোথায় জানে না ।

তাঁর ভেতর কোন দৈবশক্তি যেন তাঁকে পশ্চিমে যেতে বলছে । তাঁর মুখ থেকে শোনা সে আদেশের কথা- “One day,I heard a voice. The voice told me to carry the book out West. Told me I’d be protected against anyone or any thing that stood in my path.” Hughes brothers পরিচালিত “The Book of Eli” এমনই এক মুসাফিরের কাহিনী । মুভিটি যেদিন দেখার সুযোগ হয় সেদিন পুরোটা দেখে বোধ হল, এই মুভিটি আলোচনার দাবি রাখে । ইদানিং আমাদের দেশে ধর্ম নিয়ে আলাপ আলোচনা তুঙ্গে । নিজেদের সুশীল,সচেতন এবং সমাজের বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবী দাবী করা অংশটি ধর্মীয় রীতি নীতি বাস্তব জীবনে চর্চাকারী অংশের যে কোন তৎপরতাকে মৌলবাদ,জঙ্গীবাদ এবং সহিংস সন্ত্রাসের উত্থান হিসেবে দেখতে পাচ্ছেন ।

আমাদের বাঙ্গালী সংস্কৃতি,বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এবং প্রতিষ্ঠিত সভ্যতার ধ্বংস দেখতে পাচ্ছেন তারা প্রতিনিয়ত । দেশে যেহেতু মুসলমানের আধিক্য বেশী, তাই তারা বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে পাকিস্তান,আফগানিস্তানের প্রতিরুপ বাংলাস্তান হওয়ার আশংকাও করছেন । এসব ব্যাপারে এইজন্য আলোচনা করছি যে,ধর্মকে সন্ত্রাসবাদের স্রষ্টা এবং মুক্তচিন্তা, মুক্ত বুদ্ধিচর্চার অন্তরায় হিসেবে দেখা হচ্ছে বহুবছর ধরে । আর “The Book of Eli”-তে এই দৃষ্টিভঙ্গির জবাব দেওয়া হয়েছে । সিনেমাটিতে পারমানবিক যুদ্ধের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবী দেখানো হয়েছে ।

যে পৃথিবীতে ভয়ানক সংঘাতে জড়িয়ে যাওয়ার পর ধর্মগ্রন্থগুলোকে পুড়িয়ে ফেলা হইয়েছিল উস্কানিদাতা হিসেবে গণ্য করে । কিন্তু বেঁচে যায় ‘কিং জেমস বাইবেল’ এর একটা কপি । এক্ মুসাফির সেটাকে কুড়িয়ে পান এবং পূর্বে বর্ণিত আদেশপ্রাপ্ত হন । নতুন সভ্যতার সৃষ্টিকল্পে তিনি এই কপিটি যোগ্য লোকের হাতে পৌঁছে দিতে যাত্রা শুরু করেন পশ্চিমে । তাঁর প্রতি আদেশটি যেন কবিতার সেই পংক্তির মত- “কালের বিবর ছিড়ে যে পৃথিবী উন্মুখ বিকশিত হবার জন্যে তাকে বয়ে আনবার দায় তোমাকেই নিতে হবে মানুষের এই মহারণ্যে” যাত্রাপথে তিনি দেখা পান একদল লুটেরার ।

যারা অসহায় মহিলার প্রতি সাহায্যে এগিয়ে আসাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে । এরপর তিনি দেখা পান একটি টহল দলের যারা কিছু একটা খুঁজছে এবং সেটা খুঁজতে গিয়ে নির্দ্বিধায় মানুষ খুন করছে, সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে এমনকি নারীর ইজ্জত । চলতে চলতে মুসাফির এক শহরে এসে পৌঁছান পানির খোঁজে । সেখানে পথে দেখা টহল দলের সাথে তার মারামারি হয় এবং এর মধ্য দিয়ে পরিচয় হয় শহরের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিয়ন্ত্রকের সাথে । শহরের নিয়ন্ত্রক খুবই বিগ ও বিদ্বান মানুষ ।

তার প্রচুর পড়াশোনার অভ্যাস আছে এবং তিনি সেটা মুসাফিরের মধ্যেও দেখতে পান । তাই তার পোষা গুন্ডারা মুসাফিরের হাতে নিহত হলেও তিনি মুসাফিরকে আতিথেয়তা দেন । তিনি আশা করেন এমন একজন বিদ্বানকে যদি তিনি সহচর হিসেবে পান তাহলে শহরকে নিয়ন্ত্রণ করা তার জন্য আরো সহজ হয়ে যাবে । মুসাফিরকে প্রলুব্ধ করতে সে তার রক্ষিতার মেয়েকে পাঠায় । অথচ ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা মেয়েটি পরদিন মাকে নিয়ে নাস্তা করতে বসে আগে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে ।

নিয়ন্ত্রক তখন জানতে পারেন এতদিন ধরে তার লেলিয়ে দেওয়া গুন্ডারা যে বইটি খুঁজে আনতে পারেনি;সেই বইটী আছে মুসাফিরের কাছে । নিয়ন্ত্রক স্বপ্ন দেখেন এই শহরের মতই আরও অনেক শহর তিনি প্রতিষ্ঠা করবেন , ধীরে ধীরে একটা নতুন সভ্যতা তার অধীনে জন্ম নিবে । বিদ্বান এই নিয়ন্ত্রক তাই ব্যাকুল হয়ে ‘কিং জেমস বাইবেল’ এর কপিটি খুঁজছিলেন । এই বইটি পাওয়ার জন্য তার ব্যাকুলতা দেখে তার প্রধান সহকারী আক্ষেপ নিয়ে জিজ্ঞেস করে এত কিছু কি-“For fuckin’ book?” নিয়ন্ত্রক জবাবে বললেন- “It’s not a fuckin’ book! It’s a weapon. A weapon aimed right at the hearts and minds of the weak and the desperate. It will give us control of them. If we want to rule, more than one small, fuckin’ town, wehave to have it. People will come from al over, they’ll do exactly what I tell them if the words are from the book. It’s happened before and it’ll happen again. All we need is that book.” পরিচালক শুরু থেকে বইটিকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুললেও পরে পরিষ্কার করে দেন যে বইটি নয়, গুরুত্বপুর্ণ হল এর অন্তর্নিহিত শিক্ষা । বইটিকে অর্জন করলেই নিয়ন্ত্রক হোয়ার ক্ষমতা অর্জিত হয় না ।

অর্জিত হয় এর শিক্ষাকে আত্মস্থ করার মধ্য দিয়ে । মূল চরিত্র মুসাফিরকে নামকরণ করা হয়েছে ‘Eli’ হিসেবে । স্যামুয়েলস-এ Eli কে চিহ্নিত করা হয়েছে সিলোহ এর উর্ধ্বস্থন ধর্মযাজক হিসেবে । যদিও তালমুদ তাঁকে নবী হিসেবেই চিহ্নিত করে । তাই বোধহয় সিনেমাতে এই চরিত্রটিকে তেমন করেই উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে ।

সিনেমাটি অনলাইনে দেখতে পারবেন এই লিংকে- Click This Link চাইলে ট্রেইলার দেখতে পারেন এই লিংকে- http://www.imdb.com/video/imdb/vi862650905/ অভিনয়ে Eli - Denzel Washington Solara - Mila Kunis Carnegie - Gary Oldman Claudia - Jennifer Beals Redridge - Ray Stevenson চিত্রনাট্য- Gary Whitta সিনেমাটোগ্রাফি- Don Burgess মুভির youtube লিংক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.