আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অগ্নিসংযোগ করে ১ হাজার ২০০ বস্তা ধান পুড়াল ছাত্রলীগ:বগুড়া সরকারী আযিযুল কলেজ ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির সংঘর্ষ

চামবাজি সহ্য করতে পারি না।

বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজে ছাত্রলীগ-শিবির চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজ কতৃêপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস স্থগিত ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল ছাত্রলীগ আযিযুল হক কলেজ শাখার উদ্যোগে আমার দেশ পত্রিকা পোড়ানোর কর্মসূচি শেষে বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের একটি মিছিল বের করা হয়।

এরপর ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে একটি মিছিল বের হয়। এ সময় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি ্ল্লোগান দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিবিরের মিছিলের পেছনে হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় কলেজের অনার্স পরীক্ষাথীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ দিকে ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজের তিতুমীর ছাত্রাবাস এলাকায় একত্রিত হয়।

তারা বেলা প্রায় সোয়া ১টায় শিবির কর্মীদের ধাওয়া করলে শিবির কর্মীরা পাল্টা ধাওয়া করে আবারো ছাত্রলীগ কর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের সহায়তায় শিবির কর্মীদের ধাওয়া করলে শিবির কর্মীরা কলেজের বিপরীতে জামিলনগর এলাকায় চলে যায়। এ সময় শিবির কর্মীদের ওপর পুলিশ প্রায় ৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বেলা ২টায় শিবির কর্মীরা আবার পুরো ক্যাম্পাস দখলে নেয়। এ সময় দফায় দফায় ছাত্রলীগ ও শিবির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

বেলা ৩টায় অতিরিক্ত পুলিশ কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছে কমপক্ষে ৬০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে শিবির কর্মীদের হটিয়ে দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজের কাছে একটি কোল্ড স্টোরেজে অগ্নিসংযোগ করে। এর মালিক সাবেক মন্ত্রী মামদুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আগুনে তার দুই হাজার মণ ধান পুড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন আয়ত্তে আনেন।

বেলা সোয়া ১২ থেকে সংঘর্ষ চলাকালে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। জেলা ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন এ প্রসঙ্গে বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিনা উসকানিতে শিবির কর্মীরা আমাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, রবিউল ইসলাম লিটন, নূর হোসেন, সাজেদুর রহমান সিজু, শিলু, মাশরাফি হিরোসহ প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

কলেজ শাখার শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বাদশা এই ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে বলেন, মিরাজুল, ইয়াকুব, আনোয়ারসহ শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এর মধ্যে কলেজ সেক্রেটারি মানিক, ওবাইদুলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মানিকের চোখে গুলি লেগেছে। কলেজের অধ্যক্ষ ড. সুলতান আলী জানান, হঠাৎ করে কিভাবে ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের এএসপি কাজিমুদ্দিন জানান, পুলিশের সঠিক ভূমিকার কারণে বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটতে পারেনি।

এ দিকে সংঘর্ষের পর কলেজের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিকেলে কলেজ একাডেমিক কাউসিলের জরুরি সভায় এ সিন্ধান্ত নেয়া হয় বলে অধ্যক্ষ সুলতান আলী জানিয়েছেন। এ দিকে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে শিবির নেতারা জানিয়েছেন, তাদের শতাধিক নেতাকর্মী ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে। এ সময় শহীদ আকতার আলী মুন, শেরেবাংলা ও তিতুমীর হলের শিবিরের ৫১টি কক্ষ ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের তিনজন নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

পুরান বগুড়ায় আটটি ছাত্রাবাসে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এতে তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তারা কলেজ খুলে দেয়াসহ তিন দফা দাবি জানান। আরো দেখুন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.