আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট-৩



ট্রেনের ভেতরে আরেক বিস্ময় অপেক্ষা করছিলো মতিনের জন্য। ট্রেন হচ্ছে দোতালা তারপরে অনেকে আবার উলটা দিকে মুখ করে গভির মনোযোগে পেপার বা বই পড়ছে। উলটা একটা সিটের কাছে যেয়ে মামা সিটটা কে ধরে সোজা করে দিলেন। ট্রেনের মাইকে কি যেনো একটা বললো আর সাথে সাথে কে যেনো ট্রেনের কামড়ার দরজা বন্ধ করে দিলো। এখন সামনের স্টপেজে দরজা কিভাবে খোলে সেটা দেখার জন্য সেদিকে ঠিক তাকিয়ে নয় নজর রাখছিলো মতিন।

ট্রেনে ওঠার সময় রকিব সাহেবের কথায় মামার মুখ এখনও কালো হয়ে আছে মতিন তা টের পায় কিন্তু মনে মনে ভাবে মামা নিজে ত আনেই নাই আবার আসতেও মানা করছিলো। আসলে ঠিক মানা করে নাই বলছিলো গ্রাজুয়েশন শেষ করে আরো কেমনে কেমনে করে আসতে তাতে করে অবশ্য বছর দুয়েক লেগে যেতো হিসাব করে দেখেছিলো মতিন। কিন্তু তাতে কি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হয়ে রিতিমত সব্বাইকে দেখিয়ে দিয়েছে মতিন ৫০ তম হলেও ঠিক ফেলনা নয় সে। এমন সময় তার ভাবনায় ছেদ পড়ে রকিব সাহেব আর তার মামার ফিসফিসানো কথায়। আরে ভাই বলবেন না কি যে দিনকাল পরছে কেনো কি হয়েছে জানতে চায় মতিনের মামা কালকে ত এক ঘটনা হয়ে গেছে আমাদের বাসায় মানে আমাদের নিচ তলায় অন্যদিকে তাকিয়েও কান খাড়া করে রাখে মতিন পরের ঘটনা শোনার আগ্রহে ওই যে আমাদের নিচতলার তিন নাম্বার ইউনিটে যে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ছিলো না কতগুলি! ওদের দুইটারে ইমিগ্রেশন ধরে নিয়ে গেছে কাল রাতে।

বিশ ঘন্টার ওপরে কাজ করছিলো নাকি আর বাকি দুইটারে ইন্টারভিউ এর ডেট দিছে। ইমিগ্রেশন টের পেলো কিভাবে প্রশ্ন করেন মতিনের মামা আর বলবেন না ইয়াং পোলাপান প্রায় ফ্রাইডে নাইটেই বেশ চিল্লা ফাল্লা করছিলো তাদের পাশের ইউনিটে থাকে এক গ্রিক বুড়া সে নাকি তাদের বেশ কয়েকবার নিষেধ করছে নয়েজ করতে তারপরেও যখন মিউজিক বন্ধ হয় নাই বুড়া রিং দিছে পুলিশে তারা এসে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট দেখে খবর দিয়ে আনছে ইমিগ্রেশনকে তাদের একজন নাকি ইমিগ্রেশনের অবজারভেশনে ছিলো অনেকদিন সেই ভিত্তিতে তারা বাড়ী তল্লাশি করে আর তখন পায় দুই জনের তিরিশ আর চিল্লিশ ঘন্টার পে স্লীপ আর এক জনের মনে হয় কলেজে এটেন্ডেন্স কম ছিলো সব মিলিয়ে রিতিমত শনির দশা। আমি দেখি আজকে কাজ শেষে তানভির কে নিয়ে একটু ভিলাঊড যাব ওদের দেখতে। কি যে করে ছেলেপেলে গুলো!!! কেনো ভিলাউডে কি জানতে চায় মতিনের মামা অস্ট্রেলিয়ার অনেক ব্যাপারেই এতদিনেও ধাতস্থ হয়ে ঊঠতে পারেন নি শামিম সাহেব। আরে জানেন না ভিলাউডে হলো অস্ট্রেলিয়ার ডিটেনশন সেন্টার অনেকটা বাংলাদেশের জেলখানার মত তবে শুনছি ব্যাবস্থা নাকি অনেক ভালো ফাইভ স্টার হোটেলের মত।

তবে ছোট বড় সব অপরাধারীরেই নাকি ভাড়া দিয়ে থাকতে হয় ওই জেল খানায়। কি আজব জেল খানা ভেবে মনে মনে আপ্লুত হয় মতিন বিদেশের কাজকারবারই আলাদা!!!!!!!! এমন সময় আরেকটা স্টেশন আসে লোকজন ওঠে কিছু নামে আবার নিজে নিজে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এই রকম নানা গল্প কাহিনী শুনতে শুনতে এক সময় মতিনের মামা উঠে দাড়ান রকিব সাহেব কে বলেন ভাবি বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় আসবেন রকিব ভাই। রকিব সাহেব ও বলেন চলে আসবেন যেকোনো সময় শামিম সাহেব। মামা ভাগ্নে দুই জন এক সাথেই নামে ট্রেন থেকে।

শুরু হয় মতিনের জীবনের নতুন এক অধ্যায়ের

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.