আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গজনী অবকাশ থেকে একবার ঘুরে আসুন

সোহেল আহম্মেদ

বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে মেঘালয়ের কোল ঘেষা অরণ্যরাজি তথা গারো পাহাড়ের পাদদেশে ঐশ্বরিক প্রাচুর্যস্নাত অববাহিকায় সমৃদ্ধ জনপদের নাম ঝিনাইগাতী(শেরপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত)। এ উপজেলার বিশাল অংশজুড়ে গারো পাহাড়ের বিস্তৃতি। লাল মাটির উঁচু এই পাহাড়ের পাদদেশেই গড়ে উঠেছে গজনী অবকাশ। এখানে গহীন জঙ্গল ও টিলার মাঝখান দিয়ে ছন্দ তুলে ছুটে চলেছে পাহাড়ী ঝর্ণা। পাহাড়, বনানী, ঝরণা , হ্রদ এতসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যেও কৃত্রিম সৌন্দর্যের অনেক সংযোজনই রয়েছে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে।

হ্রদের মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ । দ্বীপে নির্মিত হয়েছে লেকভিউ পয়েন্ট । দ্বীপে যাতায়াতের জন্য স্টিল রোপের ওপর নির্মিত দোদুল্যমান সেতু। নির্মাণ হয়েছে অবকাশ রেস্ট হাউস। সে সঙ্গে পেডেল বোটসহ ছোট-বড় ৩টি ময়ূরপঙ্খী নৌকা ভাসানো হয়েছে সে হ্রদে।

হ্রদের শেষ প্রান্তে রয়েছে সুবিন্যস্ত কজওয়ে । পাহাড় চূড়ায় রয়েছে সোলার বিদ্যুৎ, পযাপ্ত পানি ও অন্যান্য সুবিধাসহ বিশাল আয়তনের ছয় কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক দোতলা রেস্ট হউস। রেস্ট হাউস থেকে পহাড়ের পাদদেশে নমার জন্য আকাবাক প্রায় দুই শতাধিক সিঁড়িসহ অত্যন্ত আকষর্নীয় পদ্ম সিঁড়ি রয়েছে। পদ্ম সিড়ির পাশেই গজারী বনে কাব্য পেমীদের জন্য কবিতাঙ্গন। গাছে গাছে ঝোলানো আছে প্রকৃতিনির্ভর রচিত কবিতা।

পাহাড়ের পাদদেশে বর্ষীয়ান বটবৃক্ষের ছায়াতলে শান বাঁধানো বেদীসহ বিশাল চত্ত্বর। সুউচ্চ শীষ পাহাড় চূড়ায় নিমিত হয়েছে আধুনিক স্থাপত্য রীতিতে ৬৪ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন নয়নকাড়া সাইট ভিউ টাওয়ার । এ টাওয়ারের চূড়ায় উঠে এলে চারদিকে শুধু দেখা যায় ধূসর, আকাশী ও সবুজের মিতালি। সীমান্তবর্তী বনভূমির সবুজ গাছগাছালি। দূরের উপত্যকা ও অধিত্যকা ।

দূর ঝরণার রূপালি প্রবাহ । এখানে মেঘমুক্ত স্বচ্ছ আকাশে ভরা পূণির্মা রাতের পরিবেশ মোহময় । অবকাশ কেন্দ্রে প্রবেশপথের রাস্তার পূর্ব পাশ্বে সৃষ্ট ঘোড়ার খুড়ের ন্যায় ক্রিসেন্ট লেকের তীর থেকে পশ্চিমে অবস্থিত অন্য আরেকটি লেকের তীরে যাওয়ার জন্য পাহাড় ও রান্তার তলদেশে খনন করা হয়েছে রোমাঞ্চকর সুড়ঙ্গ পথ 'পাতালপুরী'। ক্রিসেন্ট লেকের মাঝখানে নিমির্ত হয়েছে জলপ্রপাত নির্ঝর । হ্রদ পেরিয়ে পশ্চিম পাহাড়ে যেতে চোখে পড়বে বণির্ল সংযোগ সেতু 'রংধনু'।

ইকো পার্ক, অকির্ড হাউস, মিনি চিড়িয়াখানার হরিণ, বানরসহ আরো অনেক কিছুই চোখে পড়বে ভ্রমণ পিপাসদের। শুক্রবারে জুমাসহ অন্যান্য সময়েও নামাজ আদায়ের জন্য রয়েছে রেস্ট হাউসের পিছনেই মসজিদ। প্রায় ৩২ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন বিলুপ্ত প্রাণী ডাইনোসরের প্রতিকৃতিও দাঁড়িয়ে আছে পূব পাহাড়ের চূড়ায় মাথা উঁচিয়ে। সন্ধ্যায় হঠাৎ দেখলে পিলে চমকে উঠার জোগাড়। বিশাল আকৃতির জিরাফ ও চোখে পড়বে দূর পাহাড়ের চূড়া থেকে।

প্রতি বছরই ভ্রমণ পিয়াসিদের কথা মাথায় রেখে এ অবকাশ কেন্দ্রে কতৃর্পক্ষ নতুন অনেক কিছুরই সংযোজন ঘটিয়ে যাচ্ছেন। এ পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী উপজাতীয়দের বিচিত্র জীবন প্রণালী সম্পর্কে পরিচিত হওয়া যাবে এখানে এলে। •ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শেরপুরের বাসে উঠুন। শেরপুর নেমে ক্যাব বা ট্যাম্পুতে চলে যান গজনী অবকাশ কেন্দ্রে। শেরপুর থেকে বাসে যেতে চাইলে ঝিনাইগাতী নেমে আপনাকে ট্যাম্পুতে অথবা রিক্সায় করে অবকাশ কেন্দ্রে যেতে হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।