আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহিত্যে- আক্ষেপ, কৈফিয়ত,আমন্ত্রণ



চৌধুরী হাফিজ আহমদ একজন মানুষের জীবনে সাহিত্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভু’মিকা পালন করে। জীবনের পূর্ণতা এনে দেয় সাহিত্যে। আর এই সাহিত্যে নিয়ে আবহমান কাল থেকে চর্চা অব্যহত রয়েছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সব ক্ষেত্রেই কবিতা অগ্রনি ভুমিকা পালন করে আসছে, সাহস যুগিয়েছে সৈন্যদের রনাঙ্গনে। অস্ত্র হয়ে প্রতিরোধ করেছে, অন্যায় অবিচারের।

যুগে যুগে স্বৈরাচারদের বিষদাত ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। শাহী দরবারের অহংকার দিয়েছে শিক্ষা সভ্যতার- শুরু থেকে অদ্যাবদি ভুমিকা রাখছে সমাজ সংস্কারের। তৃপ্ত করেছে প্রেমের হৃদয়। কবিতা, সাহিত্যের নেই কোন সীমানা, জাত কিংবা পরিধি। আর সেটা অদ্য প্রমাণ হয়ে গিয়েছে গত ২৪ অক্টোবর, স্ট্রাটফোর্ড লাইব্রেরীতে সেবা ট্রাস্ট আয়োজিত মাল্টিকালচারেল কবিতা পাঠের আসরে।

যেখানে বিভিন্ন ভাষার কবিদের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পুরো রুমটি। কবিতা নিয়ে যখনি ভাবি, দেখতে পাই সর্বত্র এক সুখকর আমেজ। সাহিত্যে আলোচনা ছড়িয়ে দেয় সু-গন্ধ বিশ্বময়। দেশ থেকে দেশান্তরে কবি, সাহিত্যেকদের বিচরন আলোড়ন সৃষ্টি করে। দেশ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ সব কিছুর সম্মিলন ঘটানোর দারুন এক মাধ্যেম কবিতা ও সাহিত্যে।

একজন কবি ভিন্ন দেশ ভ্রমনে গেলে তার লেখনি থেকে জাতি জানতে পারে ঐ দেশ ও জাতী সম্পর্কে। আমি নিজেই প্রবাসী হওয়ার আগে ভ্রমণ কাহিনী পড়ে জেনেছি গোটা দুনিয়ার অর্ধেক মনের খোরাক যুগাতে কবিতা সাহিত্যে ভিটামিনের মত কাজ করে। পাঠ্যশালায় শিক্ষা অর্জনে যে গুলো আমরা সহজে শিখতে কিংবা বুঝতে পারি না তা খুব সহজেই আয়ত্বে এনে দেয় সাহিত্যে ও কবিতা। ইমরুল ক্বায়েস থেকে এ পর্যন্ত কবিদের মধ্যে এক ধরণের ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে, কবি সাহিত্যেকদের মধ্যে এক ধরণের যুগ সূত্র কাজ করে। সেখ সাদী, বর্তমান বিশ্বেও তার আমিরী, গরীবি তফাৎ আমাকে খুবই ভাবায়।

কবি সাহিত্যেকদের মধ্যে যে বিনয়, নম্রতা, সহনশীলতা, উদারতা খুঁজে পাই- তা দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ মানুষদের মধ্যে তেমন একটা পাওয়া যায় না। কবিতা, সাহিত্যে দূর করে মনের কালিমা ও সংকৃর্ণতা। হিংসা বিদ্ধেষ, পাপচার থেকে বিরত রাখে সাহিত্যেপ্রেমীদের। তাই সময় পেলে ছুটে যাই সাহিত্যে আড্ডায়, সেটা হোক দূরে অথবা কাছের কোন মাহফিলে। কবি সাহিত্যেকদের সান্নিধ্য আমাকে আন্দোলিত করে।

যখন নিজেকে নিয়ে তাদের মধ্যে নিয়ে যেতে পারি না বড় ব্যথিত হই। একটা বিষয়ে আজ নিজের কাছে নিজেকে বেশ অপরাধী মনে হচ্ছে। গত ২৯ অক্টোবর আমার শহরে দেশ বিদেশের অনেক কবি সাহিত্যেকদের আগমন ঘটেছিল, অথচ আমি তাদের সান্নিধ্যে থেকে বঞ্চিত। বিশ্বে সমদৃত উইলিয়াম শ্রেক্সপিয়ারের বাড়ী দেখতে আসা তৃতীয় বাংলার কবি, সাহিত্যেকদের আনন্দ মিছিলে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে না পারার বেদনা আমাকে অনেক দিন কুড়ে কুড়ে খাবে। প্রথম বাংলার দু’জন খ্যাতিমান কবিদের থেকেও আমি হলাম বঞ্চিত।

আমি যখনই জেনেছি তখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম নিজেকে হাজির করতে। কাজের চাপ প্রচুর তবুও বলেছিলাম কবি শাহনাজ সুলতানাকে উনার মুঠোফোনে যে আমি আসব। পৌঁছে আমাকে জানালে আমিও এসে যোগ দেব কবি সাহিত্যিকদের মিছিলে। পৌছানোর পর জানলাম, এমন কি আমার শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক কলামিষ্ট শ্রদ্বেয় বাসন ভাইকে বললাম জ্বি আমি এই তো রওয়ানা দিচ্ছি। কিন্তু সড়ক সন্ত্রাসীদের দাপটে আমরা গাড়ী নিয়ে এগুচ্ছিলাম খুবই ধীর গতিতে।

আমাদের প্রবল আগ্রহ ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো যায়নি সময়ের স্রোতের কারণে। যখন পৌছালাম তখন জানতে পারলাম তুতীয় বাংলার কবি সাহিত্যিকদের পরিবার এই মাত্র লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছেন। আহ! কি যাতনা মনে পারলাম না আমার প্রিয় মুখগুলো দেখতে, পারিনী দেখা করতে দেখিনি যাহাকে বহুদিন। বলা হল না কথা যাদের সাথে বলিনি কথা অনেক সময়। আমি ও আমার সঙ্গীরা একা একা হাটলাম বিখ্যাত ইউলিয়াম শ্রেক্সপিয়ারের এভ্যন নদীর তীরে কিছুক্ষণ।

স্মৃতির পাতায় যোগ হলো আরেকটি বেদনা। চেষ্ঠা করেছি, কিন্তু পারিনী। তবুও ক্ষমা চাই তবে হতাশ নই। করব দেখা হবে কথা। এবং রইবে অপেক্ষা সান্নিধ্যে পেতে সবার।

যাহাদের লেখনি আমাকে পথচলা শেখায়, যাদের সান্নিধ্যে আমাকে অনুপ্রাণিত করে, যাদের সংস্পর্শ আমাকে আন্দোলিত করে তাদের সাথে অবশ্যই আগামীতে কোন না কোন একদিন মিলিত হব বিখ্যাত ইউলিয়াম শ্রেক্সপিয়ারের বাড়ীর আঙিনায়। শ্রেক্সপিয়ারের বাড়ীতে আবারো আমন্ত্রণ রইলো সবাইকে। কলামিষ্ট চৌধরী হাফিজ আহমদের এই লেখাটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে বিধায় আমার ব্লগে রাখলাম পাঠকদের জন্য। আমার বিশ্বাস আপনাদের ভালো লাগবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।