আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা কামনা নিজেদের অযোগ্যতার বড় প্রমাণ

জানি না কেন লিখি! তবু লিখি মনের খেয়ালে, পরিবর্তন করার মানসে, পরিবর্তিত হওয়ার মানসে। যদিও জানি সব ব্যর্থ হচ্ছে। তবুও আমি আছি সেদিনের সেই আলোকময় প্রত্যুষার আগমনের অপেক্ষায়

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানকল্পে উভয় পক্ষই মনে করছে উদ্যোগ নিতে হবে অপরপক্ষকে। এমতাবস্থায় কেউই যে এগিয়ে আসবে না তা নিজেরাই ভাল করে জানেন। এমতাবস্থায় সমাধানের জন্য উভয়পক্ষই তাকিয়ে আছেন তৃতীয় কোন পক্ষের দিকে।

আর সেটা হচ্ছে বিদেশী কূটনীতিবিদগণ। অন্ততঃ নেতা-নেত্রীদের বক্তব্য থেকে তাই প্রমাণ হয়। এভাবে অতীতেও কোন সংকট আবির্ভূত হলে দেখা গেছে অন্যদের হস্তক্ষেপের দিকে তাকিয়ে ছিল এদেশের রাজনীতিকগণ। কিন্তু তাদের হস্তক্ষেপ এ পর্যন্ত কোন শুভ ফল বয়ে এনেছে বলে জানা নেই। ২০০৭ সালে এমনি এক পরিস্থিতি ওয়ান ইলেভেন খ্যাত রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে কূটনীতিকরা কোন ভাল ভূমিকা নিতে পারে নি-যা একটি বড় উদাহরণ।

এখন যেমন বিশেষ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশের রাষ্ট্রদূতগণ খুব দৌঁড়াঝাঁপ শুরু করেছেন, সেই সময়েও তারা তাই করেছিলেন। এমন নয় যে তখন তারা এদেশে অবস্থান করছিলেন না। কিন্তু তারা আসলে তেমন কিছু করতে পারে নি। সামরিক বাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতেই হয়েছিল। এবারেও যে তারা কোন আহামরি কাজ করতে পারবে তার প্রতিও অধিকাংশ মানুষের আস্থা নেই।

বরং পর্দার আড়ালে যদি তারা সমস্যাকে আরো ঘণীভূত করে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, বিদেশীদের দৃষ্টি থাকে যার যার জাতীয় স্বার্থের দিকে। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত মানুষ তারা নন। তা তাদের কাজও নয়। তাই ঘোলা পানিতে তারা যদি মাছ শিকারেও নামেন তাহলে এদেশীয়দের কিচ্ছু করার থাকবে না।

তখন এর দায়ভার কিন্তু বহন করতে হবে এদেশীয়দেরকেই, যেমন তারা করেছিলেন সাবেক সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। আশা করি তখনকার কথা তারা ভুলে যান নি। আবার আশা করেও লাভ নেই। কারণ কোন ঘটনা থেকে যখন শিক্ষা গ্রহণ না করা হয় তখন কার্যতঃ তাকে ভুলে যাওয়াই ধরে নেওয়া উচিত। কেউ যদি সাপের গর্তে পা দিয়ে কামড় খায় এবং আবারো সেই সাপের গর্তেই পা দেয় তাহলে তাকে পাগল আখ্যা দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

আমাদের রাজনীতিকগণ জেনেশুনে তাই করছেন। হাজারো সতর্কবাণী উপস্থাপন সত্ত্বেও তারা এমন একটি গর্তে নিজেদের পা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন যে হয়তো দেখা যাবে সেখান থেকে ফিরতে হলে পা রেখেই ফিরতে হচ্ছে। অপরদিকে যাদের পানে তারা চেয়ে আছেন তারা যে খুব ভালো মানুষ- তা নয়। এদের বেশিরভাগই সা¤্রাজ্যবাদী নীতির পৃষ্ঠপোষক। আমাদের নেতা-নেত্রীদের অনৈক্য ও দুর্বলতার সুযোগে তারা আমাদের সামনে উপদেশমালা উপস্থাপন করতে পারছে।

আর নিরুপায় হয়ে আমাদেরকে তা গলাধগরণও করতে হচ্ছে। তাদের প্রকৃত চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস আমাদের নেই। এরা নিজেদেরকে গণতন্ত্রের ধারক-বাহক মনে করে থাকেন। আমাদেরকে যত্রতত্র গণতেন্ত্রের পথে নসিহত করেন। কিন্তু বড় বড় ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা নিজেরাই গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গণতন্ত্রের গোষ্ঠী উদ্ধার করে থাকেন।

সামরিকতন্ত্র, রাজতন্ত্র যা গণতন্ত্রবিরোধী সেই সব শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি মিশরের মুরসি নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতে সেনাবাহিনীর অপকর্মকে অভ্যুত্থান আখ্যা না দেওয়া, গণহত্যায় কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া এবং সৌদি রাজ পরিবারের সাথে বিশেষ সখ্যতাই তার বড় প্রমাণ। অথচ সেই সব দেশের কূটনীতিকদের দ্বারস্থ হওয়ার মানসিকতা আমাদের নেতা-নেত্রীদের কিভাবে হয় তা এক বড় প্রশ্ন। এটা আসলে আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দের যোগ্যতার ব্যর্থতারই এক বড় প্রমাণ। নিজেদের অবস্থান যদি ভালো থাকত, মেরুদ-ে বল থাকতো, তাহলে আমাদেরকে তাদের কাছ থেকে এসব অমৃতবাণী শ্রবণ করতে হোত না।

আমাদের নেতা-নেত্রীদের এ ব্যাপারে যত দ্রুত হুঁশ ফিরবে, সচেতনতা আসবে ততই আমাদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।