আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাসীদের ঘামের টাকা, সচল রাখে দেশের চাকা। কাজেই বন্ধ হোক তাদের নিয়ে সব প্রতারণা। খবরের অপেক্ষায় রইলাম



বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। রেমিটেন্স পাঠিয়ে তারা গ্রামীণ অর্থনীতিও বদলে দিয়েছেন। কিন্তু এই প্রবাসীরা বিদেশে কতোটা কষ্টে জীবন যাপন করেন,কতো সমস্যায় পড়েন, সেগুলো শুনলে চোখের পানি আটকে রাখাই দায়। দেশের প্রতি কি অসীম ভালোবাসা থাকলে দিনের পর দিন কষ্ট করে দেশে টাকা পাঠানো যায় সেটি তাদের না দেখলে বোঝার উপায় নেই। দুর্ভোগের শুরটা হয় তখনই যখন, বাংলাদেশের কোন এক গ্রামের কোন এক সহজ-সরল লোক চিন্তা করেন তিনি আর দশজনের মতো দেশের বাইরে গিয়ে নিজের ভাগ্য বদলাবেন।

এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই আসতে থাকে একের পর এক সমস্যা। কেউ কোথাও তাকে সাহায্য করে না। সরকারি অফিসের দীর্ঘসূত্রিতা, ভোগান্তিমহ নানান ঝামেলা। প্রথম সমস্যার নাম পাসপোর্ট। সেখানে ভয়াবহ দুর্ভোগ।

পুলিশের হয়রানি, যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়া, দালালসহ আরো নানান সমস্যা। এরপর আছে কাকে কোথায় কিভাবে টাকা জমা দেবেন তার কোন স্বচ্ছতা নেই। কতো টাকা লাগবে সেই নীতিমালাও নেই। দালালদের ভয় তো আছেই। ফলে প্রচুর লোক প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হয়ে যান।

জমি-জমা সহায় সম্বল বিক্রি করে জমানো টাকা যখন দালালরা নিয়ে উধাও হয়ে যায়, তখন দিশেহারা এই মানুষগুলো কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। এই দালালদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে যারা সত্যিকারভাবে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পান, ভিসা পান, টিকেট পান তারা আসলেই ভাগ্যবান। কিন্তু ভিসা, টিকেট নিয়ে এই মানুষগুলো যখন জিয়া বিমানবন্দরে যান তখন শুরু হয় আরেক ভোগান্তি। কাষ্টমস, ইমিগ্রেশন, কঠিন সব ফর্ম, নানা জিজ্ঞাসায় তারা বিপর্যস্ত হন। এর ওর কাছে ধমক খেয়ে ফরম পূরণ করে এই মানুষগুলো যখন প্লেনে ওঠে তখন যেন তারা আকাশের চাঁদ হাতে পেলো।

বিদেশে নামার পর তারা দেখেন, দেশ থেকে যা শুনেছেন বেশিরভাগ সময়ই তা মিথ্যা। ভালো কোম্পানি, এসির ভিতরে চাকুরি, এসব শুনলেও বাস্তবে কঠোর পরিশ্রম, মালিকের গালিগালাজ, বেতন কাটা, পুলিশের ভয়সহ নানান সমস্যায় থাকেন আমাদের কর্মীরা। এরপরেও জীবনের সব স্বাদ আল্লাদ বিসর্জন দিয়ে ঘামের টাকায় রোজগার করা টাকা জমিয়ে দেশে পাঠান তারা। তাই দিয়ে চলে আমার দেশ। সুখে থাকেন আমাদের নেতারা।

মন্ত্রীরা। আমরা এই শ্রমিকদের নিয়ে তখন বড় বড় কথা বলি। এই দেবো, তেন দোব, ওয়ান স্টপ সার্ভিস দোবো। কিন্তু কথার ঝুরিতেই হারিয়ে যায় সব। সারাজীবন কষ্টের পর একজন শ্রমিক যখন দেশে ফেরেন জিয়া বিমানবন্দরে শুরু হয় আবার সেই দুর্ভোগ।

দালাল। ট্রাক্সি ক্যাব, পুলিশ-সব যন্ত্রনা। বাংলাদেশের ৬৫ লাখ শ্রমিক এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। এদের বেশিরভাগই মূলত মধ্যপ্রাচ্যে। এই শ্রমিকদের দুর্ভোগ, যন্ত্রনা শোনার কেউ নেই।

আমি বেশ কিছুদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে রিপোর্টিং করছি দেশের একটি প্রধান দৈনিকে। ইতিমধ্যে সৌদি আরব, লিবিয়া, কুয়েত, মরিশাসসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে আমি সংবাদ করেছি। আমি চাই বিদেশে থাকা এসব মানুষের যে কোন ঘটনা, যে কোন কষ্ট, দুর্ঘটনা, জেলে যাওয়া, প্রতারণা এসব নিয়ে সংবাদ করতে। তাই প্রবাসী ভাইদের বলছি, আপনারা যে কোন ঘটনা জানলে আমাকে ফোন করুন। মেইলে জানান বিস্তারিত।

জানান আমাদের দূতাবাসগুলোর অবস্থা। নিয়মিত যোগযোগ রাখুন। আমি চাই বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিখাতটা ঠিক হোক। ফিলিপাইন, ভারতের মতো আমাদের কর্মীরাও মাথা উচু করে বাঁচুক। তাই প্রবাসী ভাইয়েরা, আপনারা আপনাদের যে কোর বিষয় নিয়ে যেটি নিউজ হতে পারে, আমাকে জানান।

একই সঙ্গে দেশে থাকা সবাইকে অনুরোধ জনশক্তি নিয়ে যে কোন ঘটনা, প্রতারণা তথ্য প্রমাণসহ আমাকে দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাষ্টার্স করে, জীবনের সব ফার্ষ্ট ক্লাস নিয়ে আমরা এই তরুন প্রজন্ম সবকিছু বাদ দিয়ে সাংবাদিকতা করছি- দেশটাকে কিছু দেবার জন্য। তাই সবার সহযোগিতা চাইছি। আমার এই ঠিকানাটা যতো বেশি সম্ভব প্রবাসীদের জানান। সবাই ভালো থাকুন।

আমার সঙ্গে যোগযোগের ঠিকানা: শরিফুল হাসান স্টাফ রিপোর্টার, প্রথম আলো মোবাইল: ০১৫৫২-৩১৬৩৯৯

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.