আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোংরা যেই সময়ে চোখের জল অবান্তর

আমি এমন এক সাধারন মানুষ হতে চাই যে অসাধারন হবার পেছনে দৌঁড়ায়না এবং বিনা প্রশ্নে কিছু গ্রহন করেনা ।

জানলা খুলে দিয়ে মৃদু বৃষ্টির স্পর্শে সিক্ত হতে চেয়েছিলো । ভেবেছিলো নোংরা যেই সময়গুলো সেই সময়ে কাটাচ্ছিলো বৃষ্টির পানিতে তাকে ধুয়ে মুছে দিতে পারবে । দগ্ধ অনুভূতি থেকে মুক্তির আকাঙ্খায় মৃদুমন্দ বাতাসে ঋগ্ধ হবার বাসনা ছিলো । পারলোনা , লোমশ এক জোড়া হাত জানলার কাঁচ শক্তভাবে বন্ধ করে দিলো ।

অথচ কখনো এমনটি হতে পারে ভাবেনি । কল্পনায় নোংরার স্থান থাকেনা , কল্পনার রাজ্য মানেই ইউটোপিয়ান জগতে হাবুডুবু খাওয়া । সেই জগতের সাথে ধুঁলি - কাঁদা , পেট্রোল , গান পাউডার , শুক্রাণূর সোদা আঁশটে গন্ধ সংবলিত পৃথিবীর দেখা হয়না । কলাপাতা রঙের সালোয়ার কামিজে আয়নায় নিজেকে নায়িকা ভেবে সেখানেই ভাবনাকে স্থানু করে রাখতে মন চায় । পারেনা ।

উপরে ষন্ডামার্কা শরীরের একজন ক্রমশ উঠছে , উঠেই যাচ্ছে । তার শরীর নিয়ে মনের খুশীতে যা করে যাচ্ছে তাকে ' প্রেম - ভালোবাসা ' বলে আখ্যায়িত করা হলে সেই প্রেম - ভালোবাসার মুখে পেচ্ছাব করে দেওয়া দরকার । উপলব্ধিটা বড্ড দেরীতে এসেছে ভেবে বিষাদ আরো বেশী গাঢ় হলো তার । মনে পড়লো ক্রিকেট খেলায় বলকে উড়িয়ে বাউন্ডারী ছাড়া করলে ধারাভাষ্যকার চোস্ত ইংরেজী একসেন্টে বলে উঠে " There she goes . " বাক্যটার মর্ম আজকে প্রথমবারের মতো অনুভব করে । ' শি ' মানেই কেউ আঘাতপ্তাপ্ত হবে , সে নিজেই তো হচ্ছে !!!!! সেই সময়ে বাইরে থাকলে দেখতে পেতো বৃষ্টিতে রাস্তা থ্যাকথেকে কাঁদাময় হয়ে যাওয়াতে অফিসফেরতা মানুষ প্যান্ট গুটিয়ে নিয়েছে ।

কতোটা বীতশ্রুদ্ধ মনে অন্য সবাইও রাস্তায় চলাচল করছে । অন্য কিছু ভাবতে চেষ্টা করলো কাজ হলোনা । এক ঘন্টা যাবত উপরে অনাকাঙ্খিত এক শরীরের ভার কোনভাবেই নিতে চাইছেনা । আবার সংস্কারবশত না বলতেও পারছেনা । শিহরিত হবার ভান করতে চেষ্টা করলো কিন্তু অভিব্যক্তি কো - অপারেট করলোনা ।

কিছু দূরে একটা বই অবহেলায় পড়ে ছিলো । বইয়ের শেষের দুই পাতায় খুনীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর হবার পরবর্তী সময়ে কিভাবে অভাব অনটনে সংবিধান , আইন - কানুন খুনীর স্ত্রীকে বেশ্যা বানিয়ে দেয় তার বিবরণ ছিলো । খুনীর মৃত্যুদন্ডের আগে কিংবা পরে আইন - কানুন , সংবিধান যেমন তার স্ত্রী - পরিজনদের নিয়ে ভাবেনা নিজের অবস্থানকেও তেমনই মনে হলো তার । তার শরীর নিয়ে খেলা করার আগে বা পরে তাকে নিয়ে নিজের প্রণয়ী বলে যাকে ভুল করে চিনে এসেছে এতোকাল সে আদৌ ভাবিত ছিলোনা কখনো । এই বিবমিষা দানা বাঁধতে আরম্ভ করতে করতে নিজের শরীরের উপর আরেক শরীরের ভার থেকে অবশেষে মুক্ত হলো ।

কিন্তু সেই শরীর সাথে সাথে পাশ ফিরলে নিজেকে শুয়োপোকা ভেবে কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকতে চাইলো । চোখের কোন দিয়ে তার জল গড়িয়ে পড়ছিলো কিনা সেই প্রশ্ন কিংবা কৌতুহল নিতান্তই অবান্তর ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।