আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"চিনি পড়া "

shamseerbd@yahoo.com

""চিনির দাম আরেক দফা বাড়লে আমি দায়ী থাকবনা "" ------------------------------------------------------------------------------- -------------------------------------------------------------------------------- আন্তঃনগর ট্রেনটা স্টেশনে এসেছে প্রায় তিন মিনিট হল। শ্বাশুরীর নেমে আসার কোন লক্ষনই দেখতে পেলনা মুনিয়া। তকিয়ে দেখে নিল ঠিক বগির সামনে আছে কিনা । না, বগিতো ঠিকই আছে। মনে মনে ভাবছে শ্বশুর ফ্যামিলীর সবার এই এক সমস্যা , কবে কোন এক আমলে কেউ একজন জমিদার ছিল -সেই ভাব এখনও এই পরিবারে সবার মধ্যে সমান ভাবে বহমান আচার আচরণে।

সব যাত্রির নামা শেষ হবার পর তার শ্বাশুরী নেমে আসলেন । পড়নের শাড়ী , চোখের চশমা সব কিছুতেই অভিজাত ছাপ টের পাওয়া যায়। পিছন পিছন নেমে আসছে বহুদিনের পারিবারিক সব কিছুর দেখার দায়িত্বে থাকা মালেক ভাই। তার পিছনে দুই কুলি -একজনের মাথায় লাগেজ, অন্যজনের মাথায় বস্তা, মুনিয়া নিশ্চিত ওটার ভিতরে আছে চালের গুঁড়া, নারকেল, কিছু সিজনাল তরকারী, খেজুরের মিঠার বয়াম। আগামী যে কয়দিন থাকবেন প্রতিদিন এক একটা পিঠা বানাবেন- সবাইকে নিয়ে খাবেন, ছেলেরা যেহেতু দুই একদিনের বেশী বাড়ীতে থাকেনা , এখানে বসে খাওয়াবেন-এটাই তার শ্বাশুরীর আনন্দ।

মুনিয়ার খুবি পছন্দের একজন মানুষ, তাকেও তিনি খুবই স্নেহ করেন। নামার সাথে সাথেই পা ছুয়ে সালাম করল মুনিয়া। মাথায় হাত রেখে আদর করে বুকে টেনে নিলেন তিনি পুত্র বধুকে। তার পরেই প্রথম কথা বউমা, সেলিম কোথায়। মা ও খুব ব্যস্ত , তাই আমাকে বলল আপনাকে রিসিভ করতে।

শ্বাশুরীর মনে কেমন যেন খটকা লাগল-এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল,তিনি ঢাকা এসেছেন আর বড় ছেলে তাকে নিতে স্টেশনে আসেনি। কিছু না বলে বউমার হাত ধরে তিনি হাঁটা শুরু করলেন। বাসায় আসার পর পর মুনিয়ার মোবাইলে সেলিমের ফোন। মা ঠিক মত পৌছেছেন শুনে আশ্বস্ত হয়ে সে ফোন রেখে দিল। শ্বাশুরী গোসল সেরে এসে একথা শুনে একটু অবাক হলেন ছেলে তার সাথে একটু কথা না বলেই রেখে দিল।

তিনি কিছু বললেন না। রাতে খাবার টেবিলেও সেলিম নেই। মুনিয়া বলল মা গত কয়দিন ধরে ও খুব ব্যস্ত কি একটা প্রজেক্টের কাজে। ছোট ছেলে শাকিল, বউমা সহ রাতের খাবার শেষ করলেন তিনি। এগারটার দিকে সেলিম ফিরল।

খুবই ক্লান্ত। মা কে জড়িয়ে ধরে সব খোজ খবর নিল। তবুও শ্বাশুরীর মনের খটকা দূর হলনা, যদিও কোন অস্বাভাবিকতা তিনি দেখলেননা। সকালেও সেলিম নাস্তার টেবিলে দু একটা কথাবার্তা বলে চলে গেল অফিসে। মুনিয়ার বিয়ে হয়েছে দুবছর।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার স্বামী। নিজের একটা ফার্ম আছে, ভালই চলছে। চমৎকার বোঝা পড়া তাদের মাঝে। নিজেকে সে সুখীই ভাবে। দায়িত্বে সেলিমের কোন উদাসীনতা নেই।

নিয়মিত সময় দেয়া, ঘুরতে যাওয়া সবই করে সে, কোন আজেবাজে স্বভাব ও নেই। কয়েক দিনের ব্যস্ততা খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছে মুনিয়া। তাদের সাথে থাকে একমাত্র দেবর শাকিল। ভার্সিটির শেষ বর্ষে পড়ে। সে ও খুবই ভাল।

খুব ভাল সম্পর্ক তাদের মাঝে। শাকিলের সাথে মুনিয়ার খুনসুটি আড্ডা সবই হয়, যদিও ইদানীং সে খুব ব্যস্ত লেখাপড়া নিয়ে। মুনিয়ার শ্বাশুরী ঢাকায় এলে সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া , বাইরে খাওয়া এগুলি কমন ঘটনা হিসেবেই যানেন শ্বাশুরী। কিন্তু এবার তেমন কিছু হলনা। সেলিম খুব ব্যস্ত।

বউমাকে নিয়ে তিনি এদিক ওদিক ঘুরলেন, আত্মীয়স্বজনদের বাসায় গেলেন। সেলিম সময় মত গাড়ী পাঠাতে না ভুললেও এবার সব কিছুতেই সে অনুপস্হিত । শ্বাশুরী যাতে রাগ না করেন তাই মুনিয়া সেলিমের হয়ে ওকালতি করে। শ্বাশুরী চলে যাবার প্রস্তুতি নেন। তার মনের খটকা দুর হয়না।

সেলিমকে কেমন অচেনা লাগে। তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। যাবার আগের দিন তিনি মুনিয়াকে রূমে ডাকেন। বউমা আমার সেলিম খুব ভাল ছেলে আমি জানি। তবুও আজকালকার ছেলে পেলে।

সারাদিন বাইরে থাকে, কত জনের সাথে ওঠাবসা। কি থেকে যে কি হয়ে যায় কিছু বলা যায়না। তুমি একটু খেয়াল রেখো। মুনিয়া বুঝতে পারেনা শ্বাশুরী কি বলতে চাইছেন। তার কাছে এখনও তেমন কোন পরিবর্তন চোখে পড়েনি।

শ্বাশুরী মুনিয়ার হাতটা কোলে নিয়ে আদর করেন। বউমা আমি জানি ও তোমারে অনেক পছন্দ করে, তবুও তমার একটু খেয়াল রাখা উচিত সবকিছু। শোন এই প্যাকেটে কিছু চিনি আছে। আমি মালেককে দিয়ে এক হুজুরের কাছ থেকে পড়িয়ে এনেছি। তুমি ওরে প্রতিদিন এই চিনি দিয়ে চা বানাইয়া খাওয়াবে।

তোমার প্রতি ওর আর্কষন আরও বাড়বে, তোমারে সময় আরও বেশী দিবে। মুনিয়ার মনে কোন দ্বিধা তৈরী না হলেও শ্বাশুরীর উপদেশ মেনে নিল। সে ভাবল আরেকটু বেশী সময় দিলে বেশী ভাল বাসলে সমস্যাতো নেই। পরদিন মুনিয়ার শ্বাশুরী চলে গেলেন। শাকিল আর মুনিয়া ওনাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে আসল।

সেলিম যেতে পারলনা জরুরী কাজ থাকায়। এবার যেন মুনিয়ার ও কেমন কেমন লাগল । পরদিন সকালে মুনিয়া টেবিলে নাস্তা রেডী করে সেলিম কে ডাকল। শাকিল ও বের হবে সকালে, তার ক্লাশ আছে। শ্বাশুরীর দেয়া চিনি দিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে নিয়ে আসল মুনিয়া।

এনে সেলিমের নাস্তার পাশে রাখল। সেলিম আসার আগেই শাকিল তারাতাড়ি এসে সে কাপে চুমুক দিয়ে বসল। সেলিমকে তাড়া দিয়ে আবার ডাইনিং এ ফিরে এ দৃশ্য দেখে মুনিয়ার তো চোখ কপালে উঠে গেল। চিৎকার করে মানা করার আগেই শাকিল সে চা শেষ করে বলল নাস্তা খাবার সময় নেই, আমার দেরী হয়ে ঘেছে। তুমি ভাইয়াকে আরেক কাপ বানিয়ে দাও আমি চললাম ।

মুনিয়ার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। এ কি হল । তার কপাল ঘামছে। সে কি করবে কি হয়ে গেল কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা। এখন কি হবে ।

সেলিম এসে নাস্তা খেয়ে বিদায় জানিয়ে চলে গেল। মুনিয়া তখনও টেবিলে বসা, নিজের নাস্তা খাবার কথা ভুলে গালে হাত দিয়ে বসে আছে, আর ঘামছে। সারাটা দিন তার টেনশনে কাটল, সে কোন স্বস্তি পাচ্ছেনা, এটা কি হয়ে গেল এই ভেবে, এখন কি হবে। ক্লাশ শেষে শাকিল আর লিসা ক্যাম্পাসে বসে আছে। লিসা বলে চলে , শোন বাবা মা আমার বিয়ে নিয়ে ভাবছে, কাল শুনলাম বাবার এক বন্ধুর ছেলে আছে, বাইরে থাকে, ওকে নিয়ে বাবা মা কথা বলছে।

দেখ , সব বাবার ই এমন দু একটা বন্ধুর ছেলে দেশের বাইরে থাকে, বিশেষ করে মেয়ের বিয়ের বয়স হলে এসব বন্ধুর ছেলেরা এসে হাজির হয়। বাবার বন্ধুর ছেলেরা এসে সব মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে গেলে আমাদের কি হবে। আমরা কি বিয়ে করবনা নাকি। তো তোমার কি ইচ্ছা। দেখ ব্যাপারটা সিরিয়াস।

তুমি ফাজলামি করবানা। এখন কি করবা সেটা ভাব। কি আর করব তোমার বিয়ে খাব। আমার বাবাও তোমার বাবার বন্ধু ছিলনা , আর আমিও দেশের বাইরে থাকিনা- সিরিয়াস মুডেই বলল শাকিল। রাগে ফেটে পড়ল লিসা।

বিয়ে খাবা, এত শখ তোমার ,আমার বিয়ে খাবার। আমি কি করব এখন, আরও এক সেমিষ্টার বাকী আমার, বিয়ের কথা বললে ভাইয়া আমার মাথা কেটে ফেলবে এখন। লেখাপড়া শেষ করে কিছু করার আগেই বিয়ের কথা বলা পাগলামী ছাড়া আর কি হতে পারে। তুমি তোমার বাবা মাকে বল, এখন বিয়ে করবেনা, তাহলেই তো লেঠা চুকে যায়। আর ঐ বিদেশীকে পছন্দ হলে বিয়ে ও করে ফেলতে পার।

বিদেশে নিশ্চিত জীবন, আরও কত কি। শোন তুমি ভাবিকে বল। তমি বললে ভাবি কিছু একটা করবেনই। দরকার হলে আমি ও যাব। এখনইত বিয়ে করার কথা বলছিনা, শুধু কথা বলে রাখা।

আচ্ছা দেখী। বাসায় সবই স্বাভাবিক। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে অন্যদিন মুনিয়া ঘুমোতে যাবার আগে একবার শাকিলের রূমে গিয়ে ফ্রীজে খাবার আছে, ক্ষুধা লাগলে খেয়ে নিও একথা বলে আসলেও আজ সে সাহস পেলনা। টেনশনে ঠিকমত ঘুমও আসছেনা তার। সে ভাবছে মার কথা শুনতে গিয়ে এটা কি হয়ে গেল।

পরম মমতায় ঘুমন্ত সেলিমের দিকে একবার তাকায়, আবার নিজের মধ্যেই কুঁকড়ে বসে থাকে। ভাল ঘুম হলনা তার। সকালে শাকিল কে ডাকতে গেলে সে জানায় আজ ক্লাশ নেই, সে আরও ঘুমাবে। মুনিয়া আবার ও কুঁকড়ে যায় নিজের মধ্যে। সেলিম নাস্তা শেষে বের হয়ে যায়।

মুনিয়া বেডরূম আর কিচেন, একবার বারান্দা এই করেই কাটায়। দশটার দিকে শাকিল উঠে বলে ভাবি নাস্তা খাব। সে নাস্তা দিতে বলে বুয়াকে। শাকিলের নাস্তা খাবার সময় মুনিয়া আবার ডাইনিং রুমে আসে। শাকিল বলে উঠে ভাবী তোমার সাথে আমার খুব জরুরী একটা কথা আছে।

মুনিয়া পরোপুরি কুঁকড়ে যায় ভিতরে ভিতরে, কি কথা আছে সে যেন বুঝতে পারে। এ কি হতে চলেছে, তার কান্না পায়। কান্না ঠেকিয়ে সে আচ্ছা পরে বলো বলে বেড রুমের দিকে হাটা দেয়। পিছন থেকে শাকিল বলে না আজই বলতে হবে। একটা ডিসিশান নিতে হবে।

তুমিই পার হেল্প করতে। লিসার সাথে পরিচয় থাকলেও তার একবার ও লিসার কথা মনে পড়েনা। রুমে এসে গালে হাত দিয়ে বসে থাকে। সেলিমকে হুজুরের পড়া চিনির চা খাওয়াতে গিয়ে এখন এটা কি হতে চলেছে। সে ঘামাতে থাকে।

ডাইনিং আর কিচেনে ঘোরাঘুরি করতে থাকে মুনিয়া। বুয়া কাজ করছে। শাকিল ও যেন আজ বেশীবেশী তার রুম থেকে বের হচ্ছে। একবার এসে বলল ভাবী চা খাব। চা খাবার কিছুক্ষন পর এসে বলে আজ কি রান্না করছ।

আজত দুপুরে বাসায় খাব, গরুর মাংস আছে, থাকলে খিচুরী করনা। মুনিয়া অবাক হয়, যার খাবর দাবার নিয়ে কখনো কোন উচ্ছাস নেই সে আজকে খিচুড়ী খেতে চাইছে। কপালে তার অনেক দুঃখ আছে, সে যেন দেখতে পাই। মুনিয়া টের পাচ্ছে তার হাত পা অবশ হয়ে আসছে। নিজের মধ্যে জোর ফিরে পাবার চেষ্টা করছে সে।

বুয়াকে বলল দুপুরে মাছ আর ভাত রান্না করার জন্য। অন্য দিন হলে সে নিজেই রান্না করত। নিজেকেই বলছে সে তাকে শক্ত হতে হবে। দুপুরে খাবার টেবিলে এসে শাকিল বলছে একি ভাবি তোমাকে না বললাম খিচুড়ী করতে। গরুর মাংস নেই, এ কথা বলে মুনিয়া নিজের খাবারের দিকে মনোযোগ দিল।

শাকিল শুরু করল, ভাবি তোমাকে একটা কিছু করতেই হবে, তুমি ছাড়া আমি আর কোন উপায় দেখছিনা। মুনিয়ার চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে আসছে। সে চুপ করে খাওয়া চালিয়ে যাচ্ছে। শাকিল যাই বলিক উত্তরে কঠিন ভাবে না বলতে হবে নিজেকে সে একথায় বারবার বলছে। শাকিল বলে চলে, আমার তো পাশ করার আরও এক সেমিষ্টার বাকী, মুনিয়া চুপ করে শুনছে।

এখন বিয়ের কথা মাথায় আনারও কোন কারন নেই, কিন্তূ। তুমি খাও, একথা বলে মুনিয়া নিজের প্লেটের দিকে তাকিয়ে থাকে। আরে ভাবী শোননা, ব্যাপারটা সিরিয়াস। পরে শুনব ,তুমি এখন খাও। তোমাকে না বললে আমি আর কাকে বলব, ভাইয়াকে আমি কিছু বলতে পারবনা।

তোমাকেই বলতে হবে। মুনিয়া একটু জোরেই বলে উঠে, তোমার ভাইয়াকে কি বলতে হবে, তুমি কোন ঝামেলা লাগানোর কাজ করোনা। বলেই মুনিয়া চোপ করে যায়। শ্বশুড়ী, ,হুজুর আর চিনি পড়াকে এক গাদা গালি দেয় মনে মনে। সে ঠিক করে শাকিল যদি তাকে কিছু বলে , তবে সোজাসুজি বলে দিবে, দেখ এসব কিছু হচ্ছে চিনি পড়ার চা খাওয়ার কারনে।

ভাবী লিসার বাবা মা ওর বিয়ে নিয়ে ভাবছে। মুনিয়া বেশ জোরেই বলে উঠে তো। ভাবী আমি ওকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারছিনা , তুমি ভাইয়াকে বলো ওর বাবা মার সাথে একটু কথা বলতে, ওনারা যেন ওয়েট করেন, আমাদের লেখাপড়া শেষ করে আমি ওকে বিয়ে করব। উত্তেজনায় কথা গুলো বুঝে উঠতে মুনিয়া বেশ সময় নেয়। ভাবী তুমি কিছু বলছনা কেন, শাকিলের কথায় মুনিয়া সম্বিৎ ফিরে পায়।

জোরে জোরেই বলে , তুমি কোন চিন্তা করোনা, আমি তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলব, কোন সমস্যা হবেনা। লিসার বিয়ে তোমার সাথেই হবে। আমি দরকার হলে ওদের বাসায় যাব। তুমি লিসাকে বাসায় আসতে বল। ওর সাথে আমি আগে কথা বলি।

এক নিঃশ্বাসে বলে চলে মনিয়া, শেষ করার পর ওর মনে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার অনুভূতি হল। শাকিলের প্লেটে এক টুকরো মাছ তুলে দিয়ে বলে এখন মাছ খাও, রাতে খিচুড়ী করব। স্বস্তি ফিরে আসে মুনিয়ার মনে। কত কিই না সে ভেবেছে। বিকেলে সেলিম ফোন দিয়ে বলে রেডী হয়ে থাকতে, রাতে বাইরে খাবে।

অনেকক্ষন সময় নিয়ে মুনিয়া রেডী হয়। ডিনার করতে করতে সেলিম জানায় সে প্রজেক্টটা পেয়ে গেছে। অনেক পরিশ্রম গেছে, ঠিকমত বাসায় মুনিয়াকে সময় দিতে পারেনি, তাই সামনে উইকএন্ডে ওরা কক্সবাজার যাবে। ভাল লাগায় ভরে উঠে মুনিয়ার মন। কি টেনশনেই না কেটেছে তার দুটা দিন।

খুশীতে সে শাকিল কে ফোন দিয়ে বলে, শোন তুই ফিরবি কখন, আমরা বাইরে থেকে তোর জন্য ডিনার নিয়ে আসব দেরী করিসনা। সেলিম অবাক হয়ে বলে, একি তুমি আবার ওকে তুই বল কখন থেকে। ছোট ভাইকে তুই বলবনাতো আপনি বলব নাকি। শোন ওর বিয়ে নিয়ে তোমার সাথে জরুরী কথা আছে। কি ওর বিয়ে মানে, লেখাপড়াই শেষ করেনি, এখন বিয়ে।

আরে এখন না, বিয়ে সময় হলে হবে, এখন শুধু কথা বলতে হবে। সব খুলে বলল সেলিমকে মুনিয়া। অন্যরকম ভাল লাগা নিয়ে বাসায় ফিরল মুনিয়া। ঘরে ফিরে সোজা কিচেনে গিয়ে চিনির প্যাকেটটা বের করে সব চিনি বেসিনে ফেলে দিতে যাবে এমন সময় কিচেনের দরজায় এসে শাকিল বলল ভাবী কাল সকালে লিসা আসবে। মুনিয়া একটা হাসি দিল, মনে মনে ভাবছে এই চিনি দিয়ে লিসাকে চা বানিয়ে খাওয়াবে, তাতে দুই জা য়ের সম্পর্কটা আরও মধুর হবে।

মনে মনে মুনিয়া আরও কিছুক্ষন হেসে নিল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।