আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিশ্চুপ যারা (জাকারিয়া তামেরের গল্প)

soroishwarja@yahoo.com

[সিরিয়ার গল্পকার জাকারিয়া তামেরের আরো কিছু গল্পের অনুবাদ পর্যায়ক্রমে এখানে দেয়া হবে] জুহাইর সাবরির সঙ্গে এক নারীর দেখা। সবুজ ডালের লাল ফুলের মতো সেই নারী কাঁপা কাঁপা গলায় তাকে বলল, সে তাকে ভালবাসে, তাকে ছাড়া আর কাউকে ভালবাসতে পারবে না। সে ওই নারীকে বলল, নিজের ভবিষ্যৎ ছাড়া কোনোকিছুতেই তার কোনো আগ্রহ নেই। ঠিক তখনই তার ঘাড়ে কে যেন কষে একটা থাপ্পড় মারল। চমকে উঠল সে।

চারপাশে তাকাল, কিন্তু থাপ্পড়দাতাকে খুঁজে পেল না। এ রকম থাপ্পড় সে আবার খেল। একটা ধনী লোককে সে যখন বলল, দেশে জন্ম নেয়া মানুষদের মধ্যে তিনিই সেরা। এবারও সে যে থাপ্পড় দিল তাকে খুঁজে পেল না। তৃতীয়বার সে থাপ্পড় খেল বুকে নেমে আসা দীর্ঘ দাড়িওয়ালা লোকটির হাতে গভীর শ্রদ্ধায় চুমো খেতে গিয়ে।

লোকটির কাছে সে দোয়া চাইল। কিন্তু এবারও সে থাপ্পড়দাতাকে দেখতে পেল না। থাপ্পড়দাতাকে দেখতে না পেলেও এভাবে প্রতিদিন জুহাইর সাবরি অসংখ্য থাপ্পড় খেতে লাগল। কেউ যাতে তাকে ভেংচাতে না পারে বা তাকে পাগল না মনে করে_ এজন্য সে এসব গোপন থাপ্পড়ের বিষয়ে কাউকে কিছু বলল না। জুহাইর সাবরি এটাও নিশ্চিত হল যে তার মতো প্রত্যেকেই এভাবে গোপনে থাপ্পড় খেয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সবাই চুপচাপ।

[আরব বিশ্বের প্রধান গল্পকার সিরিয়ার জাকারিয়া তামের। ১৯৩১ সালে দামেস্কের আল বাশা জেলায় তার জন্ম। ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্প। মানুষের প্রতি মানুষের অমানবিকতা ও নারীদের প্রতি অমানবিকতা নিয়েই তার অনেক গল্প আছে। আরবি সাহিত্যে আঙ্গিকের গুরু জাকারিয়া তামের বর্ণানাত্মক ভঙ্গির মাধ্যমে বিষয়ের একবোরে অন্তরে পৌঁছে যেতে পারেন।

এ পর্যন্ত প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ১১টি। এছাড়া দুটি প্রবন্ধের বই ও অনেকগুলো ছোটদের বই লিখেছেন তিনি। তার এই গল্পটি সাহিত্য সাময়িকী ‘বানিপাল’ প্রকাশ করে গত বছর। লেখাটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ইব্রাহিম মুহাওয়ি। গল্পটি নেয়া হয়েছে জাকারিয়া তামেরের সর্বশেষ প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘আল হুসরুম’ (টক আঙ্গুর) থেকে।

]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।