আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মজৈবনিক প্যাঁচাল -১ (ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো ...)

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

মাতুয়াইল-ডেমরা-কাঁচপুর-শনিরআখড়া-মাতুয়াইলের বিশাল গোলরুট হাঁইটা গিয়া আবার বিকালে আড্ডা মারতেও বেরুইছি । সেইরাতে ভালো ঘুম হৈছিলো ঠিকাছে । কিন্তু মনে হয় নাই যে শরীরটা ক্লান্ত , আর হাঁটতে পারতেছিনা, একটা রিকশা নিই । বেশিদিনতো হয় নাই তারপর । ন-দশ বছর আর এমনকি সময় ।

বাসস্ট্যান্ড থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটার পথটার দুই মিনিট হাঁটার পরেও খালি রিকশা দেখলে চাইপা বসার মত ক্লান্তি গ্রাস করার কি হৈল বুইঝা পাই না । তাও অব্যর্থভাবে উইঠা বসি । একদিন দুইদিন প্রতিদিন । বিনোদনে হোক আর নিজের চিন্তায় মগ্ন থাকার অবসর কাটানির জন্য হোক মাইলের পর মাইল হাঁটা আমার নিত্যনৈমিত্তিক ছিলো যখন প্রায় নিয়মিত ইশকুলে যাইতাম তখনো । ইশকুলে যাওয়ার আগে পাঁচ দশমাইল হাঁইটা আসার মধ্যে মাইলের হিসাব রাখার মত গুরুত্বও দিই নাই কোনদিন।

হাঁটতে হাঁটতে কি দেখছি আর কি ভাবছি সেইসব এখন আর সচেতনে মনে নাই । অবচেতনে থাকতে পারে । মানুষের চোখের দিকে চেয়ে থাকা না । বরং প্রতিদিনের জীবনে ব্যস্ত থাকা মানুষের বিভিন্ন কাজের সময়ে অথবা দৈনন্দিনের বিভিন্ন ঘটনার সময় তার মুখের রেখার কিরকম পরিবর্তন হয় সেইসব হয়ত দেখছি । তবু যখন অন্যকেউ আমার মুখে বিষাদ বা রাগ বা অন্তর্গত গভীর দুঃখের ছাপ দেখে সেই অনুযায়ী প্রশ্ন করে বসে তখন বিহ্বল হয়ে পড়ি ।

লজ্জা লাগতে থাকে মনের ভেতরের ছায়া মুখে কেন চলে আসলো এই ভেবে । নিজের ভিতরবাড়ি আগলাইয়া রাখতে চাই । অথচ পথে পথে মুখ দেখে ভিতরের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করে গেছি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর । কথা এইসব না । কথা সেই আমার মধ্যে পথযাপন নিয়া ক্লান্তি কোন কুক্ষণে উদয় হওয়া শুরু করলো সেইসব নিয়া ।

দশবছরে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্য সূর্যের তেজে আর বাতাসের শুষ্কতায় একেবারে রাইত দিন তফাৎ চৈলা আসছে সেইটা মানতে রাজি নই । রোদের জ্বলায় চামড়ার এমন কোন ক্ষতি হৈয়া যাইবো সেই চিন্তা তখনো ছিলোনা এখনো নাই । নাই মাথাব্যাথা করতে পারে সেই চিন্তাও । তবু গনগনে রোদ দেইখা কেন হাতপা ছাইড়া দেয় সেইটাই বুঝতে পারি না । পথের ধূলাতে ফুটবলের মত লাত্থি মাইরা , দি সোর্ড অফ টিপু সুলতানের গোলার মত ধূলি ছড়াইয়া উল্লাস করছি আরসব পথচারী রাস্তার পুলাপানের লগে ।

এখন ধূলা দেখলে বিরক্তি আসে কেনো । মনের ক্লান্তি নিয়া লোকে নানান কথা নানান যুগেই বৈলা বেড়ায় । তার কিছু শুনছি বুঝছি এবং পরে ভাইবা দেখছি । কিছু এককানে শুইনা অন্য কান দিয়া বাইর কৈরা দিছি । সেইসব নিয়া এত ভাবার বয়সতো এখনো হয় নাই ।

তবু ফজলে রাব্বি হল থাইকা টিএসসি পর্যন্ত রিকশা ছাড়া পা উঠেই না । কাজের কাজ হয়তো একটাই হৈছে । কোনদিন পকেট ফাঁকা থাকলে অত দুঃশ্চিন্তা লাগে না । পুরাতন স্মৃতি মাথা মনে না রাখলেও , পায়ের পেশী ঠিকই রাকছে । ক্লান্তি চাইপা বসে সম্পর্কের অন্দরেও ।

হাজার হাজার ভিন্নমাত্রিক সম্পর্কের অন্য পাশের লোকটি আমার মনের মত হবেনা, আমার মনের কথা বুঝবেনা, আমার একপক্ষীয় পরিকল্পনামত সবকাজ করবেনা সেতো জানা কথা সেই শিশুকাল থাইকাই । সেই জানা কথার উল্টা কখনো ঘটলে সেইটাই বরং পরম পাওয়ার মত ভোগ কৈরা আসছি । এখন এইজাতীয় পরিকল্পনাই কেনো আসবে না । শতভাগ পূর্বাভাসবিহীনতা নিয়া সম্পর্ক চালানিতে যন্ত্রণা কম না । যন্ত্রণার মধ্যে একটু বাতাস এখনো অনেক মানুষের সাথেই কোন কথাবার্তা না বলেই কেবল বসে থাকতেই ভালো লাগে ।

এইটুক হারাইয়া না যাওয়াতে কৃতজ্ঞতা কিসের উপ্রে থাকবে সেইটা যদিও এখনো নিশ্চিতনা । কথাবার্তা না বলেইটা এখন অনেক ক্ষেত্রে অবশ্যপ্রয়োজনীয় শর্ত হৈয়া দেখা দিছে । কথা না বলে বসে থাকতে ভালো লাগে । কথা বলা শুরু হৈলে ক্লান্তি আসে । ক্লান্তি আসে দীর্ঘসময় ব্যাপি কোন অনুরোধে অথবা অনুরোধিত হৈলে ।

ক্লান্তি আসে অপেক্ষার প্রলম্বনে । সবার উপরে আবাল্য দেদ্দৌড় মনের মধ্যেও দিগন্ত বিস্তার পথ দেইখা হতাশ কৈরা দেয়া ক্লান্তি আসে । আর সব হারায়া যাক, তবু এইটা না আসুক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।