আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইচ্ছের পালক পুত্র : শিরোনাম-২

আমি বোহেমিয়ান বালক। মানবিক ভালবাসার বড়ই কাঙাল। ব্যস এটুকুই। ও হ্যা, ভালবাসি আশ্চর্য মেঘদল।

রাজা রাণীর বিয়ে হলো অনেকদিন।

এখনো তাদের কোল আলো করে কোন চাঁদের টুকরো আসেনি পৃথিবীতে। সেটা নিয়ে সবাই চিন্তিত। মন্ত্রী পরিষদ, রাজন্যবর্গ, আত্মীয়-স্বজন, সমস্ত রাজ্যের একটাই চিন্তা- কখন আসবে তাদের প্রিয় অথিতি। ভাবতে ভাবতে একদিন সারা রাজ্যে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল, চারিদিকে সারা পড়ে গেল। নতুন অথিতি এসেছে।

তাদের বহুপ্রতিক্ষীত চাঁদের চুকরো পৃথিবীতে আগমন করেছে। সবাই খুশিতে আত্মহারা। কিছুদিন পর সারা রাজ্যে আবারো হৈ চৈ। এবার উৎসব নয়, উঠলো কান্নার রোল। তাদের ছোট্ট চাঁদের কনা,তাদের পিচ্চি রাজপুত্রের ভীষণ অসুখ।

মারা যাবে যাবে অবস্থা। চারিদিকে হাহাকার আর হাহাকার। হিন্দুরা মন্দিরে পুজো দিতে ব্যস্ত, খ্রীষ্টান বৌদ্ধরা গির্জা আর পেগোডায় প্রার্থনারত,আর মুসলমান প্রজারা মসজিদ-মাজারে প্রার্থনা করছে অবিরাম। সবার প্রর্থনায় আবারো বেচেঁ উঠলো রাজপুত্র। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলো চাঁদের কনা।

আনন্দ উৎসব শুরু হলো পুরোরাজ্যে। তারপর দিন যায়, রাজপুত্র বড় হয়। আনন্দে থাকে সারারাজ্যের প্রজারা। পরবর্তীতে অন্যসব রাজপুত্রের চেয়ে বড় রাজপুত্রের উপর সবাই আকাশ সমান আশার ডানা বিছিয়ে দেয়। দিন যায়,মাস যায়, বছর যায়।

একটু একটু করে বড় হতে লাগলো রাজপুত্র। শৈশব পেরিয়ে কৈশর, বালক হলো রাজপুত্তুর। সবাই খুশি তাদের চাঁদ বড় হচ্ছে এই আনন্দে। কিন্তু কেউ দেখলো না, সবার আশার কাছে রাজপুত্রের খুব সাধারণ আশাগুলো চাপা পড়ে তার ছোট্ট বুকে কষ্টের পাহাড় গড়ে তুলছে দিন দিন। একেকটি দিন যায়, বাড়ে পুরো রাজ্যের আশা রাজপুত্রকে ঘিরে, আর অভিমানে পাথর হতে থাকে চাঁদ।

বালক চাঁদ একদিন ছুঁয়ে দেয় তরুণকাল। আর স্বপ্নভঙ্গের কষ্টগুলো বড় হতে হতে ছুঁয়ে দেয় তার কষ্টে নীল হওয়া নীল আকাশ। কিন্তু মন্ত্রীপরিষদ, রাজন্যবর্গ, আর প্রজাদের আশার কোন হেরফের হয়না তাকে ঘিরে। বরং তাদের আশাগুলি ডালপালা গজিয়ে মজবুত হয়। ছোট্ট থেকে বিশাল হয়।

তারা খুশীতে আত্মহারা, তাদের রাজপুত্র বড় হলো-এবার তাদের মূখ রক্ষা করবে, তাদের মাথা উচু করবে। এতসব সূখ ভাবনায় তারা বিভোর। এসব দেখে রাজা-রাণী সুখে আটখানা। কিন্তু কেউ বুঝেনা দিন দিন পাথর অভিমানী হচ্ছে তাদের রাজপুত্র। আস্তে আস্তে একাকী চুপচাপ হতে থাকে সে।

ধুসর মলিন হতে থাকে রাজপুত্রের স্বপ্নরাজ্য। স্বপ্ন ভাঙ্গার যন্ত্রণায় দিশেহারা হয় চাঁদ। মহাকাল পেরিয়ে রাজপুত্র একদিন বড় হয়ে যায়। সীমাবদ্ধতার শেকল পরানো থাকে রাজপুত্রের সোনার দুটি পায়ে। এই শেকলের ভার বইতে বইতে ক্লান্ত হয় চাঁদ।

তারুণ্য ছোঁয়া চাঁদের খুব সাধারণ ইচ্ছেগুলো সাধারণের বৃত্তের ভেতর বড় হয়ে যায়। সীমাবদ্ধতার ভেতরে থেকে প্রচন্ডতা পায় আশাগুলো। কিন্তু স্বপ্ন ভঙ্গের আক্রোশে সারারাত জেগে থাকে রাজপুত্র। গভীর রাতে যখন সমস্ত পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়ে, নিজের সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ঘুম পাড়িয়ে ঈশ্বর নিজেও যখন ঘুমের কোলে ঢলে পড়েন, তখন রাজপুত্র নির্বাক নি:ষ্প্রাণ নি:স্বপ্ন জেগে থাকে চুপচাপ। নিজের স্বপ্নগুলোকে দুহাতের মুঠোয় নিয়ে দলিয়ে মলিয়ে রক্তাক্ত করে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষোভে।

বাঁচার সব আশা হারিয়েও রাজা-রাণীর মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে থাকে স্বপ্নহীন বালক। হঠাৎ একদিন আধারে ঢাকা রাজপুত্রের জীবনটাকে আলোয় আলোয় ভরিয়ে দিতে বন্ধুত্বের ছায়া নিয়ে এগিয়ে এলো এক রাজকন্যা। আলোকিত হলো চাঁদ। সৃষ্টি হলো সুখের সমুদ্র। স্বপ্নহীন বালক হলো স্বপ্নের নিপুন কারিগর।

রাজপুত্রের পাথর হওয়া চড়ুই বুকে ফুটলো স্বপ্নীল ফুল। রাজকন্যার ছোঁয়ায় বালকের কষ্টগুলো,দূ:খগুলো,হতাশাগুলো,ক্ষোভগুলো সব নাই হয়ে গেল। আশারা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনে মন। সাদাকালো জীবনটা রঙিন হয়ে উঠে ধীরে ধীরে।

রাজকন্যাকে ঘিরে পার হয় রাজপুত্রের সূখের তরী। কিন্তু রাজপুত্রকে ঘিরে প্রজাদের আশাগুলো থেকে যায় আগের মত, সেদিকে খেয়াল থাকেনা রাজপুত্রের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।