আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচারক হয়ে অপরাধিদের শাস্তি দিতে চাই- এসিডদগ্ধ আয়েশা

mojnu@ymail.com

ছোট শিশু আয়েশা সিদ্দিকা। এবার ছয় বছরে পা দিয়েছে। ওর চোখজুড়ে শুধুই আতঙ্ক। মানুষ দেখলেই আঁৎকে উঠে। সবাইকে মনে হয়, ভয়ঙ্কর কিছু একটা।

শিশুসুলভ দুরন্তপনা নেই, নেই উচ্ছ্বাস তার মধ্যে। অজানা আতঙ্ক তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। মাত্র চার বছর বয়সে এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছে আয়েশা। এসিড কি তাও জানে না। তবে শরীরে এসিড পড়ার ভয়াবহ যন্ত্রণা অনুভব করেছে এ বয়সেই।

এসিড সন্ত্রাসের ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে। তার মুখ, পিঠ, হাত ও পুরো শরীর এসিডদগ্ধ। অন্য শিশুদের চেয়ে তার আচরণ ও স্বভাব কিছুটা ভিন্ন। কথা কম বলে। চুপচাপ থাকতেই পছন্দ করে বেশিরভাগ সময়।

বড় হয়ে কি হতে চাও- এ প্রশ্নের উত্তরে আয়েশা জানায়, ‘আমাকে এসিড মারার বিচার পাইনি, তাই বিচারক হতে চাই। অপরাধীদের শাস্তি দিতে চাই। ' আয়েশার বাবা সাইফুল ইসলাম। বালু শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। মা আরজুমান, গৃহিণী।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চৌমুহনীতে তাদের বাড়ি। দু’ভাইবোনের মধ্যে আয়েশা বড়। তার নানির বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সারাদিগর গ্রামে। নানি আর খালার কাছেই থাকতো আয়েশা। আয়েশার খালা শামীমা খাতুন।

২০০৪ সালে প্রেম করে বিয়ে করেন সেকেন্দার নামে এক যুবককে। ওই যুবকের সঙ্গে পরবর্তী সময় তার মনোমালিন্য হয়। তখন আয়েশার বয়স চার বছর। ২০০৭-এর ৪ অক্টোবর রাতে নানি ও খালা শামীমার সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে আয়েশা। ওই দিন রাতে জানালা দিয়ে তাদের ঘরে এসিড নিক্ষেপ করা হয় তাদের ওপর।

এসিডে তিনজনেরই শরীর ঝলসে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় শিশু আয়েশার। তাদের বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ঢাকায় তাদের চিকিৎসা করানো হয়। দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় শরীরের কাঁচা ঘা শুকিয়ে গেছে।

কিন্তু মুখের বাম পাশ, বুক, পিঠ ও পায়ের পুরোটায়ই ক্ষত রয়েছে। তার খালা এসিডদ্ধ শামীমা অভিযোগ করে জানান, সেকেন্দার ও তার বন্ধু মুক্তা তাদের ওপর এসিড মারে। এ ব্যাপারে তার বাবা আলীমুদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। মুক্তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও দু’বছরেও সেকেন্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং তাদের পাল্টা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

তাদের মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। তিনি চান অপরাধীরা শাস্তি পাক। তিনি আরো জানান, এ মামলাটি দুর্বল করার জন্য সাক্ষীদের ম্যানেজ করা হয়েছে। - খবর' যায়যায়দিন, ১৯ জুন ২০০৯।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।