আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধোবাউড়া থমথমে বিজিবি মোতায়েন আজ ধর্মঘট

ধোবাউড়ায় সংঘর্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান ফুরকান উদ্দিন সেলিম মৃধার মৃত্যুর পর গোটা এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধোবাউড়া থানা পুলিশ গতকাল ভোরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছয়জনকে আটক করেছে। এরা হলেন মিলন (১৮), মুরাদ (২০), ইদ্রিস আলী (৩৭), আবদুল জলিল (২৮), ইমরান (২৪) ও আল-আমিন (১৯)।

এদিকে ফুরকান উদ্দিন সেলিম মৃধা ওরফে পাহাড়ি সেলিমের (৪৫) জানাজা শেষে গতকাল বিকেলে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। প্রথম নামাজে জানাজা ময়মনসিংহ শহরের বড় মসজিদ, দ্বিতীয় জানাজা ধোবাউড়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ এবং তৃতীয় জানাজা গ্রামের বাড়ি গিলাগড়ায় অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সংসদ সদস্য প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, ময়মনসিংহ পৌর মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটুসহ হাজার হাজার মানুষঅংশ নেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যুসংবাদে গতকাল সকাল থেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে ছিল শোকার্ত মানুষের ভিড়। ভক্ত ও সমর্থকরা তার জন্য হাউমাউ করে কাঁদেন। সবাই ছিলেন অশ্রুসিক্ত। সেলিম মৃধার লাশ বিকাল ৪টায় ধোবাউড়ায় পেঁৗছালে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ধোবাউড়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে কেঁদেছেন ধোবাউড়ার মানুষ। সেলিম মৃধার পরিবারে চলছে মাতম। মা সামেলা খাতুন অঝরে কাঁদছেন। কেউ তার কান্না থামাতে পারছে না। বার বার বলছেন আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও। আমার বাবা তো কোনো অন্যায় করেনি। সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিল। কখনো বিশ্বাস করত না ওকে কেউ হত্যা করতে পারে। কিন্তু ক্ষমতালোভীরা ওর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ওকে হত্যা করেছে। সেলিমের অবুঝ সন্তান সজ্জামণি (৬) কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হারিয়েছে তার বাবাকে। হীয়ামণির (১৫) বুকফাটা আর্তনাদ 'আমার বাবাকে সবার সামনে ওরা হত্যা করেছে। আমার বাবা আমাকে আর আদর করবে না। আমার বাবার কোনো অপরাধ ছিল না। যারা বাবাকে খুন করেছে, তাদের বিচার চাই।' সেলিমের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া শিল্পী (৩৩) বলেন, 'আমার স্বামীর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত ছিলেন ধোবাউড়া আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদরা। বড় বড় নেতাদের ইন্ধনেই আজিজুল, আনোয়ার, মাজেদুল ও শহীদ আমার স্বামীকে খুন করেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।' ধোবাউড়ায় গতকালও ১৪৪ ধারা বহাল ছিল। এ ছাড়া রবিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১০ প্লাটুন পুলিশ ও গতকাল সকালে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

তিন দিনব্যাপী শোক, আজ ধর্মঘট : এদিকে সেলিম মৃধার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে উপজেলায় আজ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মান্নান আকন্দ জানান, তিন দিনব্যাপী শোক কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, বিক্ষোভ মিছিল ও আজ উপজেলায় ধর্মঘট।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য : ধোবাউড়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শুরুর আগে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন বলেন, সেলিম আমার ছেলের মতো। তার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পুনরায় যাতে আর কোনো সহিংসতা না ঘটে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য তিনি এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

এখনো মামলা হয়নি : ধোবাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ হক জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে প্রক্রিয়া চলছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.