আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইরান নিয়া ক্যাচাল, এক আরব যুবক কি বলে?

এডিট করুন

আমরা ইদানিং ইরান নিয়া বহুত ক্যাচাল করতাছি। বলতাছি ইরানে একজন মহান প্রেসিডেন্ট আসছেন। মুসলিম বিশ্ব একজন ভাল প্রেসিডেন্ট পাইছে। এইসব আং বাং ছাং। তা আমরা বাঙ্গালী যুবকেরা তো বহুত ফালাইলাম।

এইবার দেখি এক ইয়ামেনী যুবক কি বলে। তার দৃষ্টিতে ওবামা এবং আহমেদিনেজাদের অবস্থান কি। সে কি ভাবছে। মুহাম্মাদ আমার সাথেই এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ইয়ামেনের সর্বোচ্চ মেধাবী ছাত্রদের একজন সে।

আমরা প্রায়ই একসাথে সিগারেট খাই। সিগারেট খাইতে খাইতে তার সাথে পলিটিক্স নিয়া আলোচনা হয়। সাধারণ দশটা আরবের মত সেও ঘৃণা করে ইসরাইলকে। ঘৃণা না করলেও অপছন্দ করে আমেরিকাকে। তার সাথে কথার কিছু অংশ তুলে ধরলাম এখানে।

আমিঃ ওবামতো গেল বেড়াইতে, তুই কি ভাবস এইডা নিয়া? মুহাম্মাদঃ কিছুই হইব না। সব ফাকিবাজী। আই ওয়াশ। কেন কি কারনে তোর এইরকম মনে হইতাছে? আরে ওবামা সবই বলল। আমাদের সাথে আছে তাও বলল।

চিনি দিয়া ভিজানি কথা বলল। কিন্তু সব গন্ডগোল বাধাইল শেষে গিয়া। কেমনে? ওবামা কয়, আমি এইহানে অনিরাপত্তা দেখতে পাইতাছি। এখনও পরিস্থিতি ঠিক হয় নাই। এর মানে কি? এর মানে হইল, আমেরিকা যেমনে আছে তেমনেই থাকব।

পরিস্থিতি বদলাইব না। এই আমেরিকানরা বহুত চালাক। ওবামা যেই দিন ভাষন দেয় তার আগেই আল জাজিরায় লাদেননের হুমকির ভিডিও প্রচার করে। মনে ওবামা যে বলছে এইখানে বিপদ আছে সেইটা সাপোর্ট করার জন্যই যেন লাদেন সব কাম ফালাইয়া থুইয়া ভিডিওর সুটিং করছে। লাদেনের আর টাইম আছিল না তার ভিডিও দেহানির।

হুমম। তা ইরানই তো এখন আরব দেশগুলির মধ্যে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তাছে। লড়তাছে না কচু গাছ কাটতাছে। ইরানের কি এমন আছে যে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়ব। ইসারায়েল যদি একঝাক এফ-২২ পাঠাইয়া দেয় আধা ঘন্টার মধ্যে ইরাকের সব নিউক্লিয়ার ফিউক্লিয়ার কই যাইবগা উইড়া।

আরে না। রাশিয়া ইরানের সাথে আছে। ঐদিন ইরানের নিউক্লিয়ার ষ্টেশনের একটা ভিডিওতে দেখলাম দেয়ালে সিগারেট না খাওয়ার চিহ্ন দেয়া আর তার নিচে রুশে লেখা "ধুমপান নিষধ"। আরে এই রাশিয়া আমেরিকা একসাথে সব। আমেরিকা ইরানরে বাড়তে দিতাছে।

কারন পুরা মধ্যপ্রাচ্যে আরবদের শক্তিশালী শত্রু কেবল একজন। সেটা ইসরাইল। ইরানও যদি শক্তিশালী হয় তখন সারা আরব বিশ্ব ইরানের হাত থিকা বাচার জন্য আমেরিকার পাও ধরব। তাই আমেরিকার দরকার একটা শক্তিশালী ইরান। উত্তর কোরিয়া আর দক্ষিন কোরিয়া দেখস না।

আমেরিকা কেমনে লাইগা আছে দক্ষিন কোরিয়ার লগে। এই ইরান শক্তিশালী হইলে পুরা আরবরা আমেরিকারে তোয়াজ করব। কারন বাচতে হইলে শক্তিশালী বন্ধু দরকার। রাশিয়া যেহেতু ওগোর লগে গেছে, সেহেতু আমেরিকাই আরবগোর শেষ ভরসা। আমেরিকা তখন ডুগডুগি বাজাইব।

হুমম। ভাববার বিষয়। তা ইরান কি তোগোর শত্রু দেশ? ইরান আমাগো শত্রুও না বন্ধুও না। তবে ওগোরে কোন আরব পছন্দ করে না। কেন? সমস্যাটা কি? ওরা তো তোগরে আর আক্রমন করে নাই।

আরে ওরা আক্রমন করে অন্যভাবে। ওরা হাদীস মানে না। নিজেদের দার্শনিক, চিন্তাবিদ দিয়া ফর্মূলা বাহির করে আর সেইটা দিয়া চলে। তবে ওরা আমাগো শত্রু না। আমরা চাই ওরা যাতে ঠিক পথে ফিরা আসে।

তা সমস্যা হইল তোরা সুন্নি আর ওরা শিয়া। দুই দল দুই দলের মত থাকবি। ওরা ওগোর মত চলব। আক্রমন হইল কই? আরে ওরা কি খালি নিজেরাই পালন করে? ওরা ওদের মতবাদ সুন্নিগোর মধ্যেও ছড়াইয়া দিতে যথেষ্ট সক্রিয়। ওদের কিছু কাহিনী কই শুন।

মুতা বিয়া চিনস তো। হ জানি। বুখারীতে পড়ছিলাম। এক যুদ্ধে এই বিয়ার প্রচলন হইছিল। তারপর এই বিয়া চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ কইরা দেয়া হয়।

হ এই মুতা বিয়া ওরা এখনও পালন করে। এই বিয়ারই এক ঘটনা শুন। ইরানের ঘটনা। এক মাইয়া এই বিয়ার মাধ্যমে এক পুরুষের সাথে সংসর্গ কইরা আইছে বাড়ীতে। আইসা তার মারে কইতাছে আমি আজকে কিছুক্ষনের জন্য এক লোকের সাথে মুতা বিয়া বইছিলাম।

মাইয়ার মা জিগায় লোকের নাম কি? কোন জায়গার? মাইয়া বিবরণ দেয়ার পর মায়ে কয়, ঐ লোক তো তোর বাবা! এইবার বোঝ কি অবস্থা। এরা পাচ মিনিটের লেইগা বিয়া করে। কাজ শেষ হইলে ছাড়াছাড়ি হইয়া যায়। মাইয়াডা কিছু টেকা পায়। সাক্ষী মাত্র দুইজন থাকলেই হয়।

আর কিছু লাগে না। এইডা তো অনেকটা পতিতাবৃত্তির মত হইয়া যায়। সংসর্গ হইল, টেকা পাইল, বিদায় নিল। না ঠিক তা না, এইখানে দুইজন সাক্ষী থাকে। তারপরেও তো জিনিসটার সাথে পতিতাবৃত্তির মিল আছে।

না আসলে এইটাও বিবাহ, কিন্তু নিষিদ্ধ বিবাহ যা করা নিষেধ। আর তা ছাড়াও ওগোর কিছু চিন্তাবিদ হোমোসেক্সুয়ালিটিরে বৈধতা দেয় যা আমাগোর পক্ষে কোন মতেই মাইনা নেয়া সম্ভব না। আর আমরা যেমন কিতাবী বিয়া করতে পারি, মানে ইহুদি, খ্রীষ্টান বিয়া করতে পারি ওদের ক্ষেত্রে তা নিষিদ্ধ। আর ওরা কোন হাদীস মানে না। নিজেরা চিন্তা কইরা আইন বানায়।

কোরানের বা হাদীসের সাথে মিলায়া কিছু করে না। আচ্ছা এখন যদি আমেরিকা ইরান আক্রমন করে তোরা কি ইরানরে সাহায্য করবি? ইরাকরেই করলাম না আবার ইরাক!! তা ওবামা যে প্রেসিডেন্ট হইল তোরা কি মনে করতাছস? আরে সব সমান। কারন দিনের শেষে সব প্রেসিডেন্টই কইব আমি আমার দেশের জন্য সব করব। তাই ওবামা বুশ আমাগোর জন্য কোন পার্থক্য আনে না। তবে বুশ ছিল ভ্যাম্পায়ার রক্তচোসা।

এইদিকে ওবামা তা না। তবে সোজা কথা দুই জনই আমাগোর লেইগা সমান। দুইজনই ইসরাইলরে সাহায্য করব আর আমাগোরে বাশ দিব। আইচ্ছা যাই রে। বহুত ক্ষণ সিগারেট খাইলাম।

পরে আবার খামুনে। হ আমারে ডাক দিস খাওয়ার সময়। দুইজনে যার যার রুমে চলে গেলাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.