আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোহেল ভাই ০০০০

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

আমাদের সবার ভেতরেই অস্থিরতা বেড়েছে, মারুফ আগের মতো প্রানবন্ত নেই, নান্টু কিংবা নান্নু সবাই আসে ময়না ভাইয়ের দোকানে কিন্তু কারো ভেতরেই সেই উচ্ছলতা নেই ইদানিং। আমরা সবাই আর কয়েক দইনের ভেতরেই দেশের জব মার্কেটে ঢুকবো, সবারই ভেতরে অনিচ্ছায় একটা প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি হয়ে যাচ্ছে। যদিও আমরা এখনও নিজেদের বন্ধুত্ব টিকিয়ে রেখেছি, এসএমএস, ইমেইল আর মাঝে মাঝে ফোনালাপে অনেক দুরের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখছি কিন্তু একই মহল্লায় থেকেও গত কয়েক দিন এক সাথে বসতে পারছি না। এটাই মনে হয় আমাদের কর্পোরেট জীবনের সূচনা। মারুফ ব্যস্ত সিভি বানাতে হবে।

ও আমাদের ভেতরে সবচেয়ে চৌকশ আর লাইনঘাট জানা ছেলে, আমরা সবাই জানি ও পাশ করে বের হওয়ার আগেই একটা কিছু ব্যবস্থা করে ফেলবে, কিন্তু আমি কিছু করতে পারবো না। সবার ভেতরে আমিও বোধ হয় একটু ল্যাবড়ামার্কা পোলা। আমার পাশ করার পরের একটা বছর ময়না ভাইয়ের চায়ের দোকানের সলতে ধরিয়ে যাবে এটা বিলক্ষণ উপলব্ধি করতে পারি আমি। চল সবাই মিলে একটা ব্যবসা শুরু করি, ছোটো খাটো, তেমন পরিশ্রম কিংবা দৌড়াদৌড়ি নেই, যাস্ট নিজেদের হাত খরচের জন্য যতটা প্রয়োজন ততটাই। দেখ না একটা ব্যবসা।

আমি আছি তোদের সাথে। নান্নুর কথা শুনে ভালো লাগলো, বিশ্বব্যপী মন্দার সময়েও আমরা নতুন একটা ব্যবসায়িক উদ্যোগের কথা ভাবছি, এটাই মনে হয় তারুণ্যদীপ্ততা। আর টিউশনি করতে ভালো লাগে না, বুঝলি প্রতিদিন নিয়ম করে যাও, কোনো স্বাধীনতা নাই, নিজের সময়কেও সেই টিউশনির সাথে মানিয়ে নিতে হয়। কোথাও যাবো ঘুরতে, তার আগে এটা মাথায় রাখতে হয়, আমার কোন দিন টিউশনি আছে, কবে গ্যাপ দিলে এটা পোষানোর জন্য কয় দিন বাড়তি সময় দিতে হবে। এইস হিসাব আর ভালো লাগে না।

শালার মানুষের বাসার দরজায় নক করে পয়সা কামাইতে ভালো লাগে না, মারুফের কথাটা মনে হয় সবারই মনের কথা। টিউশনি মানেই প্রতিদিন একটা সময়ে একটা অল্প পরিচিত মানুষের বাসায় দরজায় গিয়ে কন করো, আপনি কে, কি চাই পরিবর্তনশীল কাজের বুয়ার এইসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ভেতরে দাখিল হওয়া, সেখানে ১ ঘন্টা সোয়া ঘন্টা পড়তে অনিচ্ছুক একজনকে পড়ানোর ভান করে মাস শেষে নগদ গুণে নেওয়া। এই হলো টিউশনি। সেই মানুষের দরজায় করাঘাত করে পয়সা দাও পয়সা দাও বলতে কার ভালো লাগে। তার উপরে সব শালা খাটাশের জাত, একটা পার্ফিউম কিনতে ১০ হাজার উড়ায়া দিতে পারে কিন্তু প্রাইভেট টিউটরের বেতন ২৫০০ টাকা দেওয়ার সময় ব্যবসার অবস্থা খারাপ, বুঝলা না রিশেসন চলতেছে, কোনো অর্ডার নাই, একটু দেরি হবে, বুঝতেছো তো।

নাহ শালার টিউশনিই করবো না, তোরা দেখ, যদি কোনো ব্যবসা থাকে আমিও আছি। সবার ভেতরেই বেনিয়া হয়ে উঠবার তাগিদ দেখে আমরা সবাই পরস্পরকে নতুন করে চিনতে পারি। ময়না ভাই একটা চা। সোহেল ভাইয়ের গলা অনেক দিন পরে শুনলাম। মাঝে কোথায় ডুব দিয়েছিলেন সেটাও আমরা জানি না।

অবশ্য সোহেল ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ এখন একটু কম হবেই, বিসিএসের রিটেন শুরু হয়ে গেলো গেলো ভাব। আর কয় দিন পরেই পরীক্ষা, এইসময় খেয়ে না খেয়ে পরীক্ষার পড়া পড়বে সোহেল ভাই কি রে কি নিয়া ব্যস্ত তোরা? আমারে দেইখ্যা চুপ খায়া গেলি যে? কি যে বলেন না সোহেল ভাই, আলসে ভাবতেছিলাম কিছু একটা করা দরকার। কি করতে চাস তোরা? ছোটোখাটো একটা ব্যবসা। তোগো দিয়ে আর যাই হোক ব্যবসা হইবো না। তোগো ভিতরে সেই এলিমেন্ট নাই।

তোগো কাজ হইবো দালালি করা, তোরা এই কামটাই পারবি। আমাগোর কারো ভিতরেই আসলে বেনিয়া ব্যপার নাই, পারলে এক মারুফ পারবো, কিন্তু তোগো দিয়া সেইটা হইবো না। কি যে বলেন সোহেল ভাই। আমাদের দিয়া সব হইবো বুঝলেন। রাখ ব্যাটা ছাগল দিয়া হাল চাষ হয় না এমন না তয় করতে গেলে ফসল ভালো হইবো না।

তোগোরে দিয়া ধর ফুটপাতে চা বিক্রি চলতে পারে, এর চেয়ে বড় ব্যবসা করবার হ্যাডম তোগো নাই। আমরা অপমানিত বোধ করে গম্ভীর হয়ে গেলাম। সোহেল ভাই সুরুৎ করে বিশ্রী ভাবে চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, তোরা যদি সিরিয়াস হইস তাহলে একটা ভালো ব্যবসার কথা কই। পূঁজি কম লাগবে কিন্তু এইটার চাহিদা কমবে না। কি ব্যবসা কন তো একটা ট্রেনিং সেন্টার খুল, কাজের বুয়া ট্রেনিং সেন্টার।

কাজের বুয়া ট্রেনিং সেন্টার মানে কি কইতে চান? আপনি কি আমাদের নিয়া ফাজলামি করেন মিয়া? বড় ভাই কইয়া যা ইচ্ছা তাই কইবেন নাকি? তোগো নিয়া সমস্যা একটাই, তোরা কথা না বুইঝ্যা ফাল পারোস। কথা একখান কইছি, সেইটা কি না বুইঝ্যা কইছি মনে হয়। চিন্তা কইরা দেখ, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমিক কোথায়? ঘরের কাম করে যারা তারা। বাংলাদেশ থেইকা বিদেশের রপ্তানী হয় মানুষ। সেই সব মানুষ, যারা দেশে কিছু করতে পারে না বইলাই জায়গা জমি বেইচ্যা বিদেশে যায় ঘরের কাম করতে না তো বিল্ডিংয়ের দেয়ালে চুন-সুরকি লাগাইতে।

বছরে গার্মেন্টস সেক্টর থেইকা কত আসে দেশে? ১২০০ কোটি ডলার, কিন্তু সেইটার সবটাই রপ্তানী আয় না। এইটার একটা অংশ যায় বিদেশে, বিদেশ থেইক্যা জিনিষ আমাদানী করতে হয়। কিন্তু বছরে ৯০০ কোটি ডলার পাঠায় বিদেশী শ্রমিকেরা, তাদের আলাদা কইরা ট্রেনিং না দিলে হবে? আমরা মাথা চুলকাই, কথাটা মিথ্যা না, আমাদের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্র গার্মেন্টস, সেখানে হাজার হাজার মানুষ কাজ করছে, তাদের জন্য আলাদা ট্রেনিং ইন্সটিটিউট খোলা হইছে। এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বছর বছর টাকা ঋণ দেয়,সেই টাকায় বাংলাদেশে রাস্তা হয়, মাইল মাইল হাইওয়ে দিয়ে গ্রাম আর শহরের ভেতরে যোগাযোগ ভালো হয়েছে, কিন্তু গ্রাম আর শহরের ব্যবধান কমে নি। এডিবির কল্যানে দেশের এই মাথা ঐ মাথায় পাকা পীচ ঢালা রাস্তা হচ্ছে, সেই রাস্তায় বাস পৌঁছে গেছে, সকালে কোনো মতে টিকেট কেটে উঠে পড়লেই সন্ধ্যার ভেতরেই ঢাকা শহরে পা রাখা যায়।

গ্রাম থেকে উঠতি যুবতি, রমনী কিংবা কিশোরী পাশের বাড়ীর মেয়ের মোবাইলে কথা বলে চলে আসছে ঢাকা শহরে। শহরের চাকচিক্য, শহরের জোচচুরি বদলায় নি, যে মেয়েটা রাতের বাসে চেপে সকালে শহরের রাস্তায় নামছে, সেও নিশ্চিত তার একটা গতি হয়ে যাবে, নতুন নতুন গার্মেন্টস হচ্ছে, তাদের শ্রমিক প্রয়োজন। এইসব মেয়েদের অভিজ্ঞতা কি, সূঁইয়ের পেছনে সুতা ঢুকাতে পারে। আর নিয়ম মতো পা চালাতে পারে, এই যোগ্যতাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। কিন্তু পরিস্থিতি বদলাবে একদিন।

তখন সূঁইয়ের পেছনে সুতা নির্ভুল ভাবে ঢুকাতে পারার দক্ষতা কোনো কাজে আসবে না। সেদিন কি হবে? কিন্তু ছোটোখাটো গার্মেন্টসের কথা বাদ দে, যে সব বড় বড় গার্মেন্টেসের কর্তারা কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচন করে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হয়, তাদের সবাই পরীক্ষামূলক ভাবে হলেও অটোমোটেড সুইং এন্ড কাটিং ম্যাশিন নিয়ে এসেছে। অনেক আগে শিল্প বিপ্লবের সময়ে ইউরোপে বেশ্যাবৃত্তি বেড়ে গিয়েছিলো, বেড়ে গিয়েছিলো হানাহানি, লুণ্ঠন, তখন হঠাৎ করেই যন্ত্র এসে দখল করে নিয়েছিলো সমস্ত কারখানা। যারা কায়িক শ্রমে জীবন চালাতো তাদের সবারই পেটে লাথি পড়েছিলো সে সময়ে, দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়তো ফুরাবে না, কিন্তু চীন থেকে আমদানি করা এইসব অটোমোটেড ম্যাশিনের কল্যানে এখন এত শ্রমিকের প্রয়োজন নেই। যাদের ১২টা ৬ তলা ফ্যাক্টারি তারা যদি হঠাৎ করেই লোক নিয়োগ বাদ দিয়ে দেয়, কস্ট ইফেকটিভ নয়, কিংবা শ্রমিকেরা রাজনীতি করে উৎপাদনের ১২টা বাজাচ্ছে ভেবে, তাহলে হঠাৎ করেই ১৫ থেকে ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে, সুঁইয়ের হোগায় নিপূন ভাবে সুতা ঢুকানোর অভিজ্ঞতা কোনো কাজে আসবে না।

এইসব মেয়েরা কোথায় যাবে? তাদেরও একটা ঠিকানা প্রয়োজন, সম্মানজনক একটা জীবিকা, যাতে নিজের পেট পিঠ আলাদা রাখতে পারে। এইসব মেয়েদের জন্যই আসলে ট্রেনিং ইন্সটিটিউট খোলা দরকার। সোহেল ভাইয়ের বক্তৃতা শুননাল মনোযোগ দিয়ে, তার আবেগ মিথ্যা না, বাংলাদেশের সীমিত ভূখন্ডে এত মানুষ, জমি কমছে, আর জোতদার শ্রমিকের ব্যবধান বাড়ছে, সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ , বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটা। এই ধনী এবং দরিদ্রের ব্যবধান দারিদ্রকে স্বীকার করে নিতে মানুষকে ধর্মন্যাস্ত করে কিংবা দারিদ্রকে জয় করতে যেকোনো ছোটোখাটো রাহাজানি করতে উস্কানি দেয়। প্রকাশ্যে সম্মানজনক জীবিকায় বাঁচতে না পারলে মেয়েরা শরীর বেচবে, শহর জুড়ে প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য বেশ্যালয় খুলে বসবে মানুষ, এটাই হয়তো বাস্তবতা।

প্রতিদিন সকালে যে মানুষগুলো দুই চাষের মাঝের সময়টাতে শহরে আসে, তারা শরীর বেচতে আসে, এটা কোদাল দিয়ে মাটি কোপাতে শিখেছে, এরবেশী যোগ্যতা তাদের নেই। মেয়েরা আসছে সেলাই ম্যাশিন চালাতে শিখছে। আর শহরের প্রতিটা বাসায় অন্তত ১ থেকে ২টা গৃহপরিচারিকা। তাদের কদর এখন অনেক বেশী। এদের অনেকেই প্রাক্তন গার্মেন্টস শ্রমিক।

গর্ভবতী কিংবা সদ্যপ্রসুতি, যাদের গার্মেন্টসগুলো ১৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা নগদ ধরিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেয়। সোহেল ভাই চায়ে চুমুক দিয়ে পুনরায় শুরু করলো, বুঝবি না এখন, একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর। তাহলে বুঝবি এই ব্যবসা খুব একটা খারাপ না, অনেকটা সামাজিক সহায়তার মত হবে। তোরা সমাজ সংস্কারকের মর্যাদাও পাইতে পারিস। যে বাসায় একটা ছোটো বাচ্চা আছে, সে বাসার মানুষের পকেটে পয়সা থাকলে তারা ৫ থেকে ১০ বছর বয়েসী ছেলেমেয়েদের বাসায় রাখে, ছেলে মেয়েকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য, আদতে সেটুকু তাদের উপরি দায়িত্ব, এরা পানি আনে, ফুটফরমাশ খাটে, এই পাশের গলির মুদির দোকানে গিয়ে সিগারেটটা , লবনটা, চিনিটা, চিপসটা নিয়ে আসবার কাজ করে, পানি এগিয়ে দেয়।

এবং এদের শতকরা ৬০ শতাংশ বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হয়, সেটা যৌননির্যাতন হতে পারে, শাররীক নির্যাতন হতে পারে। একটা পরিসংখ্যান দেখলাম, ঢাকা শহরের বাসায় কাজ করা ৪০ শতাংশ গৃহকর্মী অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং এদের অর্ধেকেরও বেশী কোনো না কোনো সময় নির্যাতিত হয়েছে। তোদের লক্ষ্য থাকবে এদের শেখানো, কিভাবে কাজ করলে নির্যাতিত হতে হবে না, কোন কোন আচরণ গ্রহনযোগ্য, কোনটা গ্রহনযোগ্য না, এবং এর সাথে শিখাতে হবে, কোনো সময় যদি নির্যাতিত হয় তবে প্রতিকারের ব্যবস্থা কি হবে। শহরের পিশাচ মানুষগুলো যখন মাংস পোড়াবে খুন্তি দিয়ে তখন সেটা চারপাশে প্রাপ্ত উপকরণ দিয়ে কিভাবে নিরাময় করা যায়। নিজের শাররীক নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করতে হয়।

এইসব সার্ভাইবাল টেকনিক শেখাটা তাদের জন্যই প্রয়োজনীয় বুঝলি। এটা মোটেও ব্যবসা না, বরং অন্য সব এনজিওর মতো এটাও সমাজ সেবা ধরতে পারিস। আমাদের সবারই অবস্থা বাকরুদ্ধ। আমরা রোজকার মতো সস্তা রসিকতা করতে পারি না, বরং সোহেল ভাইয়ের মুখে দিকে তাকিয়ে থাকি। সোহেল ভাই বলছে- বাংলাদেশের সমস্যা একটাই, এখানে মানুষকে মানুষ হিসেবে বড় হতে শেখানো হয় না।

হাতের সামনে যা কিছু আসে, সব কিছুই মেনে নিতে শেখানো হয়, সেটা কোনো সময়ই ভালো হতে পারে না। কিন্তু এমনটাই হয়ে আসছে , হবে। ময়না ভাই সামনের ছেলেটার গালে কষে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে বললো, হারামজাদা পোলা তোরে কি ওগোর কথা গিলতে পয়সা দেই, বান্দরের বাচ্চা নিজের কাজ কর। সোহেল ভাই কোনো কথা না বলে ছেলেটার দিকে ইঙ্গিত করলো।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।