আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোহেল ভাই ০০০১

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

তুই ফারুক খানের কাজবারডা দেখছোস? কেন কি হইছে, হেইডা আবার কে? আরে ব্যাটা সমন্বয়কারী, বিডিআর ম্যাসাকারে সরকারের পক্ষ ও সামরিক বাহিনীর তদন্তদলের ভেতরে সমন্বয় করে ঐ ব্যাটা। আরে ঐ টাকলা, হে তো উল্টাপাল্টা কথা কয় খালি। হ ঐটাই কইতেছিলাম, হ্যার কথা শুইন্যা কিছু বুঝবার উপায় নাই। প্রথম বার মন্ত্রী হইছে শালায়, আগে ছিলো মিলিটারি, মাথায় এমনি ঘিলু কম, তার উপরে মনে হয় ওরে ডাইক্যা কইছে, একটু পলিটিক্যাল ডায়ালোগ দিতে হবে। ওর প্রেসব্রিফিং শুনলে মনে হয় নির্বাচনের বক্তৃতা চলতেছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি গোষ্ঠী সক্রিয়, এটা এই সেটা সেই।

আমার কি মনে হয় জানিস, নান্নুর কথা শুনে সবাই ওর দিকে তাকাই আমরা। আমার মনে হয় ফারুক খানের কানটা একটু লম্বা হয়ে ঝুলে গেছে। টিভিতে একটু খেয়াল করে দেখলেই বুঝবি বিষয়টা। ওর প্রথম দিকের ছবি আর এখনকার ছবি দেখলেই বুঝতে পারবি। ব্যাটা ভয়ে ভয়ে আছি, কোনদিন দেখবো ঐ ব্যাটার টাক ফুড়ে এক জোড়া শিং বের হবে।

খালেদার সময় একটা ছিলো ব্যাবরানো বাবর, এখন হাসিনার আমলে একটা জুটছে ফারুক খান, সমান স্টুপিড। টিভির সামনে আসলেই উল্টাপাল্টা কথা বলে। আমি বলে দিলাম, দেখে রাখিস, ঐ ব্যাটার টাক ফুড়ে একদিন সত্যি সত্যি শিং বের হবে। শালা একটা আস্তা উজবুক। কথা মিথ্যা না, ফারুক খান, এইবারই প্রথম মন্ত্রী হয়েছেন, এর আগে সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, এবং মনে হয় সেই যোগ্যতাতেই সরকার পক্ষ থেকে সমন্বয়কারী হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়েছে।

বিডিআরের নতুন চীফ আর ফারুক খানের কথা শুনলে মনে হয় সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের ঘিলু আগে যতটুকু ছিলো, এই ঘটনার পর সেটাও নাই হয়ে গেছে। মারুফের সামনে এইসব সমালোচনা আগে করলে ও কিছু মনে করতো না কিন্তু ওর খালাতো বোনের জামাই নিহত হওয়ার পর থেকে পরিস্থতি বদলে গেছে, এখন আর্মি অফিসারদের নিয়ে কোনো কথা বললেই ও আহত বোধ করে, আজকে আড্ডায় ও নেই বলেই এত স্বাচ্ছন্দ্যে মিলিটারির মুন্ডুপাত করা যাচ্ছে। নান্টু চুপচাপ বসে ছিলো সিগারেট জ্বালিয়ে, এই ব্যাটা সিগারেট দে এই দিকে, তোরে কি সিগারেট বেইচ্যা দিছি না কি? তুই বেচবি কি ব্যাটা, বেচছে তো ময়না ভাই, কথা না বাড়ায়া তুই সিগারেট দে। একটা কথা ভাইব্যা দেখছোস, নতুন বিডিআর ডিজি কইছে, বিডিআরের মোরাল ভেঙে গেছে পিলখানার ঘটনায়। বিডিআরকে ঢেলে সাজাতে হবে।

অনেক বিডিআরকে ছাঁটাই করবে ওরা। হ তাতো করবেই, অনেকরে মারবে, অনেকরে বরখাস্ত করবে, এইসব পাওয়ার পলিটিক্সের অংশ। সোহেল ভাইয়ের বিজ্ঞ মন্তব্যের অভাব ছিলো এতক্ষণ। আড্ডাকে এখন আবার আড্ডা মনে হচ্ছে অনেক দিন পরে। এত দিন যে গুমোট অবস্থা ছিলো , সেটা কেটে যাচ্ছে, আমরা আবার স্বাভাবিক হচ্ছি, আজকের আড্ডাই তার প্রমাণ।

তোদের কি মনে হয়, বিডিআরের নাম বদলানো উচিত হবে। নাম বদলালে কি মানুষ বদলে যাবে? মানসিকতা বদলাবে সোহেল ভাই? তাতো বদলায় না কোনোদিন, কিন্তু বুঝতে হবে যাদের হাতে বন্দুক থাকে, তাদের বন্দুক চিন্তা করে, মাথা দিয়া ওরা কোনো চিন্তা করে না। সো ওরা ওদের মতোই ভাববে, ধরেন ১০০০ বিডিআর ছাঁটাই করে দিলো, এই ১০০০ বিডিআর কি করবে? এইটাই তো ওদের জীবিকা ছিলো। ওরা তো প্রাইভেট সিকিউরিটি ফার্মে জয়েন করতে পারবে না। বরখাস্ত হওয়া কোনো সেনাসদস্যকেও সিকিউরিটি ফার্ম এলাও করে না।

এরাতো আরও নিচু পদের সৈন্য। সামরিকও না বেসামরিক না। পুলিশ আর আর্মির ক্রসব্রিডিংয়ে তৈরী হওয়া খচ্চর বিডিআর। চলে মিলিটারি শাসনে আর হর্তাকর্তা সবাই সরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের। বেসামরিক কতৃপক্ষের কাছে ওদের দায়বদ্ধতা আর অফিসার সব সামরিক বাহিনীর।

দুটোর ডিসিপ্লিন আলাদা, দুটোর কাঠামো আলাদা। এইটা বদলাতে চাইছে সামরিক বাহিনী, কিন্তু যারা এখন এক্সিসটিং ফোর্সে আছে, তাদের বাতিল করে দিলে ওরা কি করবে? আমাদেরও প্রশ্ন কিন্তু এইটা সোহেল ভাই। ওদের বাতিল করে দিলে ওরা কি করবে? ওদের বাদ দিয়ে দিলে ওরা কি করবে এইটা নিয়া ভাববার কি দরকার? মারুফ কখন এসে উপস্থিত হয়েছে এটা খেয়াল করি নি আমরা। ওর মন্তব্য উঠে না আসলে হয়তো আমরা ওর উপস্থিতিই ধরতে পারতাম না। তুই কথাটা ঠিক বললি না, ওদের নিয়া ভাবার দরকার আছে, ওরা সমর্থ মানুষ, ভিক্ষা তো করবে না, অস্ত্র চালাতে পারে, বন্দুক চালানোর অভিজ্ঞতা আছে, হয় চোরাচালানীদের দলে ভিরবে কিংবা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়বে, ওদের এভাবে এমন পথে ঠেলে দেওয়ার যৌক্তিকতা কোথায়।

ওরা যা করছে সেইটা ক্ষমার অযোগ্য। কতগুলা মানুষ মারা গেলো, স্বাধীনতা যুদ্ধেও এত সামরিক কর্মকর্তা মারা যায় নি। তুই এই কথায় কথায় স্বাধীনতা যুদ্ধ আনবি না , স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে ছিলো , তাদের কয় জন নিজের ইচ্ছায় যুদ্ধ করছে সেটা বল? ওদের অন্য কোনো উপায় ছিলো না বলেই যুদ্ধ করছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যদি ওদের বিশ্বাস করতো তাহলে ওরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হয়েই যুদ্ধ করতো। ওদের নিরস্ত্র করছে বলেই ওরা আতংকিত হইছে। না হলে বাংলাদেশে যুদ্ধ করবার জন্য প্রচুর বাঙালী সেনাকর্মকর্তা পাইতো পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

নিয়াজী সবাইরে বিশ্বাসঘাতক ভাবছিলো কিন্তু কথাটা সত্য না। পাকিস্তানের প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আনুগত্য স্বাধীনতার ৩৮ বছর পরেও বিন্দুমাত্র কমে নাই। তোর কি মনে হয় সামরিক বাহিনীর কোনো হাত নাই এই ঘটনায়? যারা মারা গেছে আর যারা মারা যায় নাই, তারা সবাই আঁচ করছিলো এমন একটা ঘটনা ঘটবে এখানে। কিন্তু এইটা বুঝে নাই যে এমন সাংঘাতিক ভাবে ঘটবে ঘটনাটা। ভাবছিলো দাসগুলা একটু হাউকাউ করে থেমে যাবে, ওরা যে বুকে গুলি করবে এইটা বুঝলে দরবার হলে গ্যারিসন বানাইতো সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

ওরা অবহেলা করছিলো বলেই মারা গেছে বেশী। নিজেদের যতটা সুরক্ষিত মনে করছিলো ওরা আসলে তা না। ওরা আসলেই উজবুক। মারুফের মুখের পেশী টানটান হয়ে যায় সোহেল ভাইয়ের মন্তব্যে, সোহেল উত্তেজনায় বিষয়টা খেয়াল না করেই কথা শুরু করেন- তোর কি মনে হয় শুধু বিডিআরের দাবি দাওয়া এইখানে আছে। এইটার পেছনে আরও কারণ আছে, পুরাটাই টাকা পয়সার মামলা।

অনেক টাকার অস্ত্র কিনবার কথা, সেইটার টেন্ডার হবে, সেই টেন্ডারের ভাগবাটোয়ারার হিসাব নিয়ে ঝামেলা এইটা। এইটাতে যারা লাভবান হবে তাদের বদলানো প্রয়োজন, আর এই সম্পূর্ণ পরিস্থিতিতে , তোর কি মনে হয় জানি না, কিন্তু আমার মনে হয়, বিডিআর জাওয়ানদের লাভবান হওয়ার কিছু ছিলো না। ওরা অন্য কারো প্ররোচনায় এই কাজ করছে। উফফ জটিল জিনিষ, দেখছেন সোহেল ভাই, কি ড্রেসটা পড়ছে মাইয়াটা। কোন মাইয়া, হঠাৎ করেই কথা ভুলে সোহেল ভাই রাস্তায় মনোযোগ দিয়ে তাকালেন।

কই গেলো মাইয়াটা? আরে ভাই একটু উপরে তাকান। রাস্তায় লাইটপোস্টের পাশে কোনো এক বুটিকের বিজ্ঞাপনের মেয়েটা বেশ আলুথালু হয়ে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছে। নান্নুর নজর সেই দিকে। ও ঐটা, এইসব দেখায়াই তো তোগোর মতো পোলাপাইনরে ভেড়া বানাইয়া ঘুরাইতাছে, নাইলে একটা জিনিষ ভাইব্যা দেখে, বাইদানী আর কানিজ আলমাসের ভিতরে কোনো পার্থক্য আছে। কানিজ আলমাসের চেহারা স্মরণ করবার চেষ্টা করলাম আমি, নাহ তেমন মিল নাই কোনো, তবু সোহেল ভাইয়ের কথা, ফেলতেও পারি না।

মানুষের নোখ কাইটা, মুখ, চোখ, কানের ময়লা পরিস্কার কইরা পয়সা কামাইতাছে, বাইদানিরা রাস্তায় একটা বাক্স নিয়া ঘুরে আর কানিজ আলমাস গাড়ী নিয়া ঘুরে, এই পার্থক্য। কানিজ আলমাস ঢাকা শহরে কয়েকটা বিউটি পার্লার খুলেছে, তার কাস্টমার বেজ অনেক শক্ত। হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশের সৈন্দয্য বিশেষজ্ঞ বলতেই বুঝে কানিজ আলমাসের নাম। সে আবার ফ্যাশন পত্রিকা বের করে, সেটা ঢাকা শহরে ৫০০০ কপি বিক্রী হয়। বাংলাদেশের একদল মানুষ অলস হয়ে গেছে, তারা মুখের ময়লাও ঠিক মতো পরিস্কার করতে পারে না।

তাই নিয়মিত যায় লোম ফেলাইতে আর ময়লা পরিস্কার করতে। দেখ আগের বাইদানীরা বাসায় আসতো, বৌ সাজাইতো, পায়ে আলতা লাগাইতো , মুখে স্নো পাউডার, পায়ের নোখ কেটে দিতো, হাতের নোখ কাটতো, বাসার সবার হাত পায়ের নোখ কেটে পায়ের ময়লা পরিস্কার করে পায়ে আলতা দিয়ে পেতো ৫ সের চাল আর একটা আধুলী, সেই একই কাজ কানিজ আলমাস করছে এতদিন, এখন অনেক সাগরেদ জুটছে কিন্তু কাজ সেই একটাই, পায়ের নোখ কাটা আর ময়লা পরিস্কারের জন্য কানিজ আলমাসের চার্জ ৩০০ টাকা। মুখের ময়লা পরিস্কার করতে ২০০ টাকা। সাবান দিয়া মুখ ধুয়ে দিতে ২০০ টাকা নেয়, এই টাকা দিয়া তো একজন সারা বছর মুখ ধুইতে পারবে দিনে ২বার করে। কিন্তু ঐ যে কইলাম বাঙালী আইলসার আইলসা, নিজে যা করতে পারে সেইটা করবে না কোনো দিন।

হ ওর বিজ্ঞাপন দেখছেন, পহেলা বৈশাখে সকাল ৫টায় দোকান খুলবে, মেকাপ আর শাড়ী পড়াইতে নিবে ৭০০ টাকা। ঢাকা শহরের কত মানুষ পহেলা বৈশাখে শাড়ী পড়তে আর মেকাপ করতে ভোর ৫টায় কানিজ আলমাসের দোকানে হাজির হবে এইটা ভাব। কানিজ আলমাস শাড়ী পড়াচ্ছে, নখ কাটতেছে, বাঙালী পটের বিবি সেই সাজুনি দিয়ে রমনায় গিয়ে পান্তা ভাত খাচ্ছে- এই হচ্ছে বাংলাদেশের চরিত্র। রমনা বটমূল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে বর্ষবরণের উৎসব, সেই উৎসবে সামিল হতে আসবে যারা, তারা সবাই টিভিতে মুখ দেখাবে বলেই ৭০০ টাকা খরচ করে এই মাঝ রাতে দোকানে লাইন দিয়ে বসে থাকবে। অহেতুক একটা উন্মাদনা তৈরি করতে মানুষ।

যাদের সামর্থ্য আছে তারা আগে যেমন শোভন ভাবে নিজেদের বড়লোকি দেখাইতো, এখন ডজন ডজন টিভি চ্যানেলের যুগে এই বড়লোকি দেখানোর বিষয়টা অশোভন প্রতিযোগিতা হয়ে গেছে। পহেলা বৈশাখ আপনার ভালো লাগে না সোহেল ভাই। ভালো লাগবে না কেনো বল, মানুষ জন উৎসব করে গত ৪০ বছর ধরে একটা অনুষ্ঠান করতেছে, এইটা একটা প্রথা, একটা ঐতিহ্য, লোকজন এই প্রথা আর ঐতিহ্য নিয়ে ব্যবসা খুলে বসেছে, এক হাজার বুটিকের দোকান বৈশাখী ফ্যাশান বিক্রী করতেছে। মুদির দোকানেও এখন ডিজাইনারস ক্লথিং পাওয়া যায়, মানুষ দিন দিন সৃজনশীল দর্জী হয়ে যাচ্ছে। কাঁচি নিয়ে ঘ্যাসঘ্যাস কাপড় কাটতেছে আর সেলাই করতেছে, সেলাইয়ের মাপ আর কাপড়ের ছাটের ভাবনার দিন কাটাচ্ছে মানুষ।

এই অশোভন বিষয়টা বাদ দিলে, সম্পূর্ণ বিষয়টাই আনন্দের। বছরের একটা দিন সবাই নিজেদের সেরা সাজ দিয়ে রাস্তায় ঘুরছে এটা দেখবার মতো একটা দৃশ্য। আপনার তো পরীক্ষার টাইম টেবিল দিলো, পরীক্ষা দিবেন না। সরকারী চাকুরি করতে আর ইচ্ছা করে না রে, সিকিউরড জব বুঝলাম, কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হইতে অনেক সময় লাগবে, এর চেয়ে ভালো বেসরকারী চাকুরী, পরিশ্রম অনেক কিন্তু কুইক শাইন করা যাবে। বিসিএসের রিটেন দিবো, কিন্তু সাথে সাথে মাল্টিন্যশনাল কোম্পানিগুলাতেও সিভি দিবো।

সোহেল ভাই আপনি বরং ইলেক্ট্রিশিয়ান হয়ে যান, ডেসায় যোগ দেন। কেনো মিটার রিডার হইলে অনেক পয়সা কিন্তু সেইটাতে সম্মান নাইরে ভাই। একটু সম্মানের চাকরি খুঁজতেছি। আরে না ভাই সেই জন্য না, ধরেন ইলেক্ট্রিশিয়ান হইয়া সারাদিন বাত্তি জ্বালাইবেন, এরচেয়ে কুইক কোথাও শাইন হইতে পারবেন না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।