ধুমপানে বিষপান
প্রতিদিন খবরের কাগজে দেশের কত খবরই না থাকে। আমার প্রবাস জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় যায় এই খবর নিতে যেয়ে! সারাদিন একটার পর একটা পত্রিকা, অনলাইন নিউজ, নিউজ আপডেট, ব্লগের নানা ধরনের পোষ্ট পড়া-একটার পর একটা চলতেই থাকে! এইসবের ফাকে আমার পড়াশোনাটা একেবারে গোল্লা্য় গেছে (কারন আমি পড়াশোনার ফাকে এইসব করি না বরং এইসবের ফাকে পড়াশোনা করার চেষ্টা করি)। সবকিছু ছাপিয়ে তবু সামনে চলে আসে আমার দেশ!
খবরের কাগজে পড়ি বৈশাখের খরতাপে তীব্র দাবদাহে জ্বলছে আমার দেশ আর ভাবি আমি আবার কবে সেই খরতাপে ৩ নং বাসে চড়ে গুলিস্থান থেকে ঘামতে ঘামতে মহাখালি যাব! কিংবা যখন দেখি বিদ্যুতের লোডশেডিং এ অতিষ্ট দেশের মানুষ তখন মনে হয় এই প্রবাসে অন্তত একটা দিন যদি অন্তত দশটা মিনিটের জন্য লোডশেডিং হতো!অন্ধকারে একবার আকাশটা দেখতে পেলে হয়তো আমার দেশের আকাশের মতো দেখাত! কিন্তু সে আশা পুর্ন হবার নয়,দশ মিনিট দূরে থাক-দশ সেকেন্ডের জন্য লোডশেডিং ও এখানে অসম্ভব। জানি দেশে অনেকের কাছে আমার কথাগুলো হয়ত পরিহাসের মত মনে হবে, আমি দেশে থাকলে আমারও তাই মনে হতো কিন্তু এখন আমার অনূভুতিতে সবকিছুই কেমন অদ্ভুত। সি এন জি ধর্মঘটে মানূষের দূর্ভোগের খবর দেখে ভাবি কোন এক ধর্মঘটে আবার যদি রিক্সা নিয়ে শেরাটন সোনারগাওয়ের সামনের ভি আই পি রোড দিয়ে ঘুরতে পারতাম! কিংবা কাওরানবাজার মোড়ে কোন পকেটমার বা ছিনতাইকারির ছিনতাই করে দৌড়ে পালাবার চেষ্টা বা ধরা খেয়ে গনপিটুনির দৃশ্য দেখতে উৎসুক জনতার ভীড়ে যদি হারিয়ে যেতাম!!!
দেশে ভিক্ষুকের উৎপাতের কথা শুনে ভাবি কতদিন কোন ভিক্ষুক এসে বলে না, ভাই একটা টেকা দেন! আবার কবে TSC র মোড়ে, ডাসের ক্যন্টিনের পিছনে সিংগারা বা লাচ্ছি খাব আর দুই তিনটা ছেলে এসে গেন্জি বা প্যান্ট ধরে টানাটানি করবে, বাধ্য হয়ে খাবারের অর্ধেকটা দিয়ে দিতে হবে! কত অদ্ভুত সুন্দরই না আমার দেশ, জীবন যেখানে বড়ই বৈচিত্রময়! ফুটপাতের ধারে ইচ্ছে হলেই চায়ের স্বাদ, কখনো কখনো লাশের বাক্সে ব্যবহৃত চাপাতার ঝাঝ তবু বার বার ইচ্ছে করে সেই চা খেতে খেতে পিচঢালা রাস্তার মরিচীকা দেখতে কিংবা পাশের লোকটির ভীষন পরিপক্ক রাজনৈতিক ভাষন শুনতে! বেশি আতলামি হয়ে যাচ্ছে মনে হয় কিন্তু অনুভুতিগুলো খুবি সত্যি।
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি.....................।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।