"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"
গরিলা
আমি মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। সভ্য বলেই বিবেচিত তাই অহংকার
আমার মজ্জাগত। তুমি গরিলা, নিতান্তই কালো ও কুৎসিত। মোটেও
আমার মতো সুদর্শন নও। তোমার লোমশ শরীরে প্রচন্ড শক্তি তবুও
বুদ্ধিতে তুমি পরাজিত আমার কাছে।
তুমি মোটেও হিংস্র নও, বনের
মধ্যে থেকেও তুমি আমার মতো বন্য হতে পারোনি। তোমার স্বভাবে
সেই বুনো আদিমতা নেই, তোমাকে নিরীহ গরিলা ভেবেই আমার স্বস্তি।
তুমি আমাকে কী ভাবো জানিনা- মানুষ? নাকি শত্রু? মিত্র ভাবার কোন
কারণতো দেখিনা। গভীর অরণ্যে তোমার নিরাপদ আশ্রয় আমি নিদারুন
উল্লাসে উপরে ফেলি! যে বৃক্ষের পাতায় তোমার উদরপূর্তি হয় সেই বৃক্ষ
আমি চিঁড়ে ফেলি। মসৃণ কাঠের ডাইনিং টেবিলে তোমার কোন খাবার
থাকেনা।
তোমার থ্যাবরা-বোঁচা চেহারাটা যতনা কুৎসিত তার চেয়েও
অনেক বেশী বীভৎস আমি, সভ্যতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই সুদর্শন
মানুষ। নিজের বিলাসী প্রয়োজনে বুদ্ধি আর কৌশলে তোমার বাসস্থান
উজাড় করি, তোমার বাঁচার পথ রুদ্ধ করি। আমার মস্তিষ্কে আর মননে
বর্বরতা ভর করে সর্বদা। অথচ আমি জানি তোমার লোমষ শরীরে প্রবল
মায়া, তুমি কখনোই স্বজাতিকে খুন করোনা- সবুজ অরণ্যে তুমি অতিশয়
নির্বিবাদী প্রাণী। অথচ আমি কী নিষ্ঠুর! নির্দ্বিধায় সন্ত্রাসী হতে পারি, খুনী
হতে পারি, ধর্ষক হতে পারি, এসিডে পুড়িয়ে দিতে পারি অবলা-অসহায়
নারীর মুখ।
তুমি এসব কিছুই পারবেনা- গহীন অরণ্যে সভ্যতার আলো
পৌছুঁতে পারেনা । সভ্যদের নরম গায়ে কোন চামড়ার প্রলেপ থাকেনা।
তাই আমার সুদর্শন শরীরে কোন মায়া নেই। আমি আচরণে অবলীলায়
গরিলা হতে পারি অথচ তুমি শত চেষ্টা করেও কখনো মানুষ হতে পারবেনা।
(কবি নাজনীন খলিলের “গরিলা-মানব” কবিতা দ্বারা প্রভাবিত)
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।