আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ::: আমার অভিজ্ঞতা > দ্বিতীয় পত্র

"যুদ্ধপাপীদের শাস্তি চাই"
গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ::: আমার অভিজ্ঞতা > প্রথম পত্র স্টেডিয়ামে গণস্বাক্ষর নেয়ার সময় এক যুবক আমাদের প্রতি একটি ব্যাঙ্গাক্তক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল। তার মতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিৎ নয়!! তার মতে একাত্তরে সব রাজাকারদের “সাধারণ ক্ষমা” করার পর কীসের আবার বিচার..সব ফালতু কাজ। আমি হাতের কাজটা শেষ করতেই তাকে উল্টো প্রশ্ন করি, “আপনি সাধারণ ক্ষমার সম্পর্কে কি জানেন?” সাথে আমার বন্ধু মাহমুদ তাকে আরো প্রশ্ন করতে থাকে, যুক্তির বিচারে। সে কোন প্রশ্ন উত্তর দিতে পারলো না। তার বন্ধুরাও লজ্জায় পড়ে স্বাক্ষর করলো, কিন্তু সে করলো না।

উঠে অন্য জায়গায় বসলো। সেদিন অনেক মাদ্রাসার ছাত্ররা এসেছিল খেলা দেখতে, তারাও স্বাক্ষর করলো একাধারে। অনেকেই রাজাকারদের গালাগাল দিতে থাকে। সাথে চলছে বাংলাদেশের বেটিং। সেকী উত্তেজনা সবার মাঝে।

[ স্বাক্ষর করছে একজন মাদ্রাসার সিনিয়র ছাত্র ] সবাই স্বাক্ষর করছে। তবে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে, যখন বাংলাদেশ অপ্রত্যাশিত ভাবে শ্রীলংকার কাছে হেরে গেল!! খেলা শেষে নিচে নামতেই অমিত একটি ছোট্ট মেয়েকে দেখিয়ে দিল আমাকে। দেখলাম, বাংলাদেশ হারাতে যেন সব মন খারাপ আজ তার উপর ভর করেছে। আমি তার একটি ছবি তুললাম। অমিত মেয়েটিরকে অনেক চেষ্টা করে হাসালো।

আমি বললাম, আজ আমরা হেরেছি, কাল আবার জিতবো। [ মন খারাপ করা মেয়েটি] পরের খেলায় আবার আমি মার্শাল ও অমিত গেলাম খেলা দেখতে। মাহমুদ অসুস্থ হয়ে পরলো হঠাৎ। তাই আসতে পারলো না। আবার শুরু হলো গণস্বাক্ষর।

এবার আগের দিনের চেয়ে আরো বেশি উদ্দীপনা সবার মাঝে। বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের খেলা। প্রচুর লোক সমাগোম হলো। এবার শেষের দিন গেলাম আবার খেলা দেখতে। আমি সাকি, মার্শাল ও অমিত।

তবে, দুঃখ জনক কথা হলো এবার অহেতুক কারণে নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদের গ্যালারিতে ঢুকতে দিতে চাইলো না। বললো, উপরের হুকুম আছে। তবুও আমি আমার প্রেস আইডি কার্ড দেখালাম কিন্তু তারা আমাকে, মার্শাল ও সাকিকে ঢুকতে দিলেও অমিতকে ঢুকতে দিচ্ছিল না কোনমতেই। আমি পরে নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে তর্কাতর্কি করে তাকে ভেতরে ঢুকালাম। কিন্তু সেদিন আমরা তেমন কোন স্বাক্ষর গ্রহণ করতে পারলাম না।

এরপর আমি ও মার্শাল ২০ জানুয়ারি “বৃত্ত” নামক একটি সামাজিক সংগঠন এর সাথে গেলাম বাণিজ্য মেলায়। সেখানে দুস্থদের জন্য অর্থ সাহায্য গ্রহণ ও গণস্বাক্ষর নেয়ার কাজ করা শুরু হলো। তবে, স্বাক্ষর নেয়াটা বেশ কঠিন ছিল, কারণ সবাই ব্যস্ত ভেতরে ঢোকা নিয়ে। তাছাড়া কোন টেবিল ছিলনা। হাতের উপর রেখে স্বাক্ষর দিচ্ছিল সবাই।

তেব অনেক ছাত্র-ছাত্রী পেলাম সেদিন। [ হাতে রেখে স্বাক্ষর দান ] [ বৃত্ত ] দুঃখজনক কথা হলো, এক সংবাদকর্মী স্বাক্ষর দিতে অপরাগ জানালো এবং এই গণস্বাক্ষর-কে হেয় করে কথা বললো। কিন্তু আমি নিজেও যেহেতু “প্রেস” এর সাথে জড়িত তাই তিনি তা জানা মাত্রই সটকে পরেন। এছাড়া মার্শালকে এক বৃদ্ধলোক “অশ্লীন” ভাষায় গালি দেন, কেন আমরা বিচার চাচ্ছি। তবে, সবার মধ্যে দু-একটি “কীট” থাকে তা আমরা জানি।

এছাড়া, আমি আমার অফিসে (সিমফনি ম্যাগাজিন) একটি প্যাড রাখি, অফিসে যেই আসে, সে একটি করে স্বাক্ষর করে যায়। আর ক’দিন পরেই ছিল “অমর একুশে বই মেলা”। আমি আইরিন আপুর একটি স্টিকি করা পোষ্টে মন্তব্য করি যে, “বই মেলায় একটি জায়গা করে দিলে আমার গণস্বাক্ষর নিতে পারি। “ এরপর ব্লগার কৌশিক দা তাঁর পরিচিত একজনকে বলিয়ে “সংহতি প্রকাশন” এর সামনে আমাদের বসার ব্যবস্থা করে দিলেন। আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করি ৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে আমি আর মাহমুদ মিলে।

[ সংহতি প্রকাশন ] [ আজ এই পর্যন্ত। তৃতীয় পত্র আগামীতে প্রকাশ করা হবে ]
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.