আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিছু চিন্তার বিষয়

পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি

ঘটনা কি ঘটেছে , কেন ঘটেছে , কি ভাবে ঘটেছে সেই সব নিয়ে প্রচুর জল্পনা চলছে । আমার মাথায় শুধু একটা জিনিসই বার বার চিৎকার করে উঠছে , ফলাফল খারাপ । ফলাফল অত্যন্ত খারাপ । প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ম কানুন ও সমস্যা যে কোন কথা বলার আগে একটা জিনিস বলতে চাই, পৃথিবীর যে কোন প্রতিরক্ষা বাহিনীকে একটা জিনিস মেনে চলতেই হয় আর তা হলো চেইন অফ কমান্ড । উর্ধতন অফিসার যখন কোন কমান্ড করবেন, তখন অধঃস্তনকে সেইটা বিনা প্রশ্নে মেনে নিয়ে পালন করতে হবে ।

এইটা কোন ভাবেই কোন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি না । এইখানে আলাপ আলোচনার কোন সুযোগ নাই । তবে শর্তহীন বিশ্বাসের একটা অতি জরুরী জায়গা আছে । কমান্ডারকে বিশ্বাস করতে হয় যে তিনি যা বলবেন তা কার্যে পরিণত হবে আর কমান্ডেড বিশ্বাস করেন কমান্ডার তার বেস্ট পসিবল সিদ্ধান্তটা নেবেন। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারটা পারস্পরিক জীবন রক্ষার ব্যাপারেও সত্যি।

এই চেইন অফ কমান্ড ভেঙে পড়লে শুধু যুদ্ধে পরাজয় হয় তাই না, কমান্ডার ও কমান্ডেড দুইজনেই মৃত্যু বরণ করেন । এখন সমস্যা কি ? প্রথম সমস্যা হলো , যখন কেউ এই চেইন অফ কমান্ড ভেঙে ফেলে , তখন পারস্পরিক বিশ্বাসটাও আর থাকে না । সুতরাং , যে কোন প্রতিরক্ষা বাহিনী তার বৈশিষ্ট্যগত কারনেই এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারন করে থাকে । আমার কষ্টটা এইখানেই । আজকের পরে বিডি আর কি পাবে জানি না , কিন্তু সংশ্লিষ্ট সকলের অন্তত চাকরী চলে যাবে ।

কোর্ট মার্শাল হবে কারো কারো , মৃত্যুদন্ড ও হতে পারে যারা সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত । চেইন অফ কমান্ড ধরে রাখতে হলে এই চরম শাস্তি গুলো দিতেই হবে । উল্লেখ্য , পাকিস্তান বাংলাদেশ যুদ্ধে বাংলাদেশ আক্রমনের সিদ্ধান্তটা রাজনৈতিক হলেও যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কারনে পাকিস্তান আর্মির সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয় । এই রকম আর অনেক উদাহরন পাওয়া যাবে । বাংলাদেশ একমাত্র উজবুক জাতি যারা পাকিস্তান ফেরত অফিসারদের চাকুরীতে রেখে বাংলাদেশী অফিসার বনাম পাকিস্তান ফেরত অফিসার - এই দুই দলে বিভক্তি তৈরী করে প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ক্যু, হত্যা, বিদ্রোহের বীজ বুনে রেখেছে ।

শুধু তাই না , সরাসরি শত্রুপক্ষ এর নেতা গোলাম আজমের ছেলেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চৌকস অফিসার করে রেখেছে । এই বাহিনী যে নানান কুকীর্তির জন্ম দেবে তা আর আশ্চর্য কি? একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে যদি গোলাম আজমের ছেলের কাছ থেকে কমান্ড নিতে হয় , তার অবস্থাটা একবার চিন্তা করেন । আমরা ব্লগার হয়ে ওয়ালী কিংবা ওয়ামীর ( রাজাকার কামরুজ্জামানের পোলা) কোন মাতব্বরি সহ্য করি না ব্লগে । আর দেশ রক্ষার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি গোলাম আজমের ছেলেকে । দ্বিতীয় সমস্যা হলো , বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সীমাহীন দুর্নীতি ।

এইটা কোন বিচ্ছিন্ন সমস্যা না । রাজনৈতিক নেতারা , সমাজের মাথারা , ব্যবসায়ীরা সবাই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত । সেইখানে ক্ষমতাধর আর্মি অফিসাররা কি ব্যতিক্রম হবেন? কালো টাকা তো কেউ একলা খায় না । একজন বেশ্যা যেমন পুলিশ, দালাল, বেশ্যা সর্দার , এলাকার মাস্তান -- সকলকে বখরা দেয় ......... সেই একই ভাবে চোরাচালানীরাও রাজনীতিবিদ ও পুলিশের পাশাপাশি আর্মি অফিসারদের ও বখরা দিয়েই সব করে । ( প্রমান চাইলে দিতে পারবো না , শুধু এইটুকু বলবো দুর্ভাগ্যবশত জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয়েছিলো আপন কারো ।

২ সপ্তাহে বিরাট বিরাট চোরাচালান ধরার পরে সাথে সাথে তাকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয় । চালান গুলো না ধরার জন্য যাদের নামে যত গুলো হুমকি তাকে দেওয়া হয়েছিলো তার সব কয়টি সেনা কর্মকর্তা, এমন কি সেনা প্রধানের নামটি সহ) এই সীমাহীন দুর্নীতির কারনেই বিডি আর জওয়ানরা তাদের বঞ্চনা আর ক্ষোভের জায়গা গুলো তৈরী হতে দেখেছেন বছরের পর বছর । তাদের দাবী যতগুলো এখন পর্যন্ত দেখলাম , কোনটাই অন্যায্য নয় । প্রতিটা কথা সত্যি । আমার কষ্টটা হলো , আর্মি অফিসারদের স্বেচ্ছাচারিতা , দুর্নীতি , হত্যা -- এই সবের কোনটারই খুব শক্ত বিচার করা হাসিনার পক্ষে সম্ভব হবে না ।

এর কারন গুলো , ক) এই সরকার পুরোপুরিভাবে আর্মি ব্যাকড সরকার খ) বাংলাদেশ আর্মি পুরোপুরি আমেরিকা ব্যাকড বাহিনী গ) এই সরকারের অবস্থান বিভিন্ন কারনেই নড়বড়ে । নিজের ঘরের পাপীরা তো আছেই । লোম বাছতে কম্বল উজাড় হয়ে যাবে । তৃতীয় সমস্যা হলো , বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোন জবাবদিহিতা নেই । বাংলাদেশের মত একটা গরীব দেশে আর্মির কোন খাতে কত টাকা কেন খরচ করা হচ্ছে , সেইটা এখনো সাধারন মানুষ জানতে পারে না ।

আজকে সময় এসেছে এই তথ্যগুলো পাবলিক করে দেওয়ার । এমনিতেই প্রতিরক্ষাবাহিনীর লোক অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। তাদের জন্য খাবার , একটু উপরে বাড়ি , আরেকটু উপরে গাড়ি , বিনা মূল্যে চিকিৎসা , স্বল্পমূল্যে শিক্ষা ---- জীবনের সর্ব ক্ষেত্রেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু কেন? বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কি নিজে কোন টাকা পয়সা আয় করে ? বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কি আমেরিকার সেনাবাহিনীর মত রিসার্চ, ইনোভেশন ইত্যাদির সাথে জড়িত যে গুলো মানুষের কাজে লাগে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কি একটাও যুদ্ধ লড়েছে যার জন্য আমরা তাদের এত টাকা দিয়ে লালন করি ? নাকি অদূর ভবিষ্যতে আমাদের ইচ্ছা আছে যুদ্ধ করার যার জন্য এত সুবিধা দিয়ে তাদের লালন করতে হবে? প্রতিটা উত্তর চিন্তা করে দিন তারপর নিজেই চিন্তা করুন। রক্ত পানি করে যেই টাকা রোজগার করেন , তারই ট্যাক্সের টাকায় আর্মি চলে ।

সেই আর্মি বৃটিশ প্রভু এবং পাকিস্তানী প্রভু এর পরে বাংলাদেশী প্রভু সেজে আপনার আমার টাকায় বিলাসী জীবন যাপন করবে ----- আমরা কেন জানবো না তারা ঠিক কত টাকা , কিসের পিছনে ব্যয় করছে ? কেন জানবো না তাদের সত্যিকারের আয় কত ? কেন জানবো না তারা নিজেরা কয় পয়সা ট্যাক্স দেয় ? কেন জানবো না , ১৫ হাজার , ২০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে তাদের ছেলে মেয়েরা কি ভাবে আমেরিকা, কানাডা পড়তে যায় ? কেন জানবো না , তারা কি করে স্কলাস্টিকা, আগা খান, আমেরিকান ইন্টারন্যশানাল স্কুলের ৫০ হাজার, ১ লাখ টাকা বেতন দিতে পারে ? বি ডি আর ভাইদের দোষ দেই না । ভারতীয় বি এস এফ এর দাদাগিরি আর বুলেটে প্রতি মাসে তারা মারা যায় । খেয়ে না খেয়ে দেশের সীমানা পাহারা দেয় । প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নেয় । আর তারপর যদি দেখে ডিজির বউ ১১ টা গাড়ি ব্যবহার করে আর তাদের ডাল ভাতের টাকা মার যায় --- তাদেরকে দোষ দেওয়া যায় না ।

তারা না হয় সহ্য করেন নাই । আজকে বিদ্রোহ করে বসেছেন । আমরা কি করবো ? তাদেরকেই শাস্তি দেব , যারা প্রতিবাদ করেছেন অন্যায়ের ? হয়ত সেটাই হতে চলেছে । সাধারন ক্ষমায় কিচ্ছু হবে না , যদি না অন্যায়, অবিচারের মূল জায়গা গুলো বদলায় । [ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৎ , ত্যাগী ও দেশপ্রেমিক প্রতিটি ভাই ও বোনের প্রতি শ্রদ্ধা রইলো ।

আমি শুধু যারা অপরাধের সাথে জড়িত তারা এবং একটি সিস্টেম যা কিনা দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেয় সেই সিস্টেমটার বিরুদ্ধে লিখেছি]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।