আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের তথাকথিত মাজার সংস্কৃতি

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

"আপনাদের মেয়েকে দুষ্ট জ্বীনে ধরেছে। ওকে কিছুদিনের জন্য আমার কাছে রেখে যান। আমি ওকে ২১টি পবিত্র মাজার ঘুরিয়ে আনব। তাইলেই জ্বীন তাকে ছেড়ে যাবে।

সে সুস্থ হয়ে উঠবে। তা না হলে কিছুদিনের মধ্যেই হাত-পা অবশ হয়ে আপনাদের মেয়ে মরে যাবে। " এই কথাগুলো কপি করে পেষ্ট করা হয়েছে একটি দৈনিক পত্রিকা থেকে। এই খবরটি হয়ত দিনের একটি ছোট্ট খবর। বড় বড় খবর আর বড় বড় শিরোনামের আড়ালে হারিয়ে যায় একসময়।

কতটা ভয়াবহ কথা গুলো!এবার আসুন দেখি এই খবরের পরের অংশটি। "এসব বয়ান দিয়েই দশম শ্রেণীতে পড়ূয়া এক কিশোরীকে তার সহজ-সরল মা-বাবার কাছ থেকে কবজা করে শেরপুরের শ্রীবরদী এলাকার এক মাজারের খাদেম কামাল হোসেন। পরে ওই খাদেম চিকিৎসার নামে কিশোরীকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। জামালপুর সদর থানা পুলিশ রোববার গভীর রাতে শহরের গেইটপাড় এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে।

" এটাই আমাদের সমাজের অবস্থা। আমাদের গ্রাম-গঞ্জে ও শহরেও অনেক আধুনিক মানুষের মধ্যে এখনও মাজার প্রেমী দেখা যায়। এরা মাজারকে বিশ্বাস করে কোন শক্তিশালী ভান্ডার হিসেবে। কিন্তু এই মাজার মানে কবর আসলেই কি কোন শক্তির উৎস? মানুষের এই সরলতাকে কেন্দ্র করে দেশে এই সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। রীতিমত একটা ক্যান্সারের মত।

যেটা শুধু বড় হচ্ছে। বিভিন্ন গাড়ীতে যখন ভ্রমন করবেন, দেখবেন কোনকোন গাড়ীর ড্রাইভার ষ্টিয়ারিং ছেড়ে দিয়ে মাজারের দিকে চুমু খাচ্ছেন। আবার কোথাও কোথায় যাত্রাবিরতি দেয়া হয় মাজারে সাহায্য করার জন্য। মূলতঃ সহজ সরল মানুষগুলো এই ভূয়া মাজার সংস্কৃতির কাছে জিম্মি। তারা মাজারে যায়।

মানত করে। মোমবাতি দেয়, আগরবাতি দেয়। মাজারের খাদেমকে সেজদা করে। খাদেমের পায়ে চুমু দেয়। টাকা পয়সা, আয়-রোজগারের বড় একটা অংশ তাতে ব্যয় করে।

কোটি কোটি টাকা খরচ করে বার্ষিক অনুষ্ঠান করা হয়। সেখানে দেশের দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ জন আসে। থাকা খাওয়া সহ ব্যাবস্থা করা হয়। এই উপলক্ষে কিছু ভন্ড পীর ফকির গড়ে উঠে। তারা মানুষকে জিম্মি করে ব্যাবসা করে।

আর নিরীহ মানুষগুলো তাতে ধরা দেয়। তারা মানুষের কৌশলে দুর্বল জায়গা জেনে নিয়ে সেখানে আঘাত করে। কিন্তু এর কি কোন সত্যতা আছে? মাজারের কি কোন শক্তি আছে? একটা কবরে একটা মৃত মানুষ শুয়ে আছে। ইসলাম ধর্ম মতে মৃত্য ব্যক্তির দেহটাকে রাখার একটা ব্যাবস্থা মাত্র। মৃত্যুর পর সব মানুষই এক হয়ে যায়।

তার করার কিছুই থাকে না। সে বেঁচে থাকা অবস্থায় যত শক্তিশালীই হোক না কেন। এই মাজারকে এই রূপে ভক্তি শ্রদ্ধা করা ইসলামও সার্পোট করে না। বরং যেহেতু সব কবরই সমান। তাই সেই মৃত ব্যাক্তির জন্য শান্তি কামনা করা যায়।

এছাড়া আর কিছুই না। এই তথাকথিত "মাজার সংস্কৃতি" ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পাপ। উপরে উল্লেখিত পত্রিকার অংশটুকু ভীষন ভয়াবহ একটি ঘটনা। এমন ঘটনা হয়ত প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে কিন্তু আমরা জানতে পারছি না। মাঝখান থেকে মানুষ হতে প্রতারিত, সম্ভ্রমহারা।

এসব ব্যাপারগুলো কেউ সম্মানের ভয়ে প্রকাশ করতে চায় না। খুবই স্পর্ষকাতর বিষয়। আর এই দুর্বল সুযোগগুলোই তথাকথিত মাজার রক্ষকরা ইউজ করে। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষের আরো সচেতন হওয়া উচিত। এহেন অপকর্ম যেন আমাদের পাশে না ঘটতে পারে সেদিকে নজর রাখা উচিত।

আর প্রত্যেকে সত্য জানানো উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.