আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তথাকথিত ব্লগীয় শালীনতা



মাঝে মাঝে রূচিশীল মানুষের শীতঘুম কাটিয়ে জেগে উঠে কিছু কথা বলে ঘুমিয়ে যায়। বোকাইয়ের পোষ্ট নিয়ে একটা সস্তা স্ট্যান্টবাজী হলো, এইসব রঙ্গরসিকতা এবং রূচিশীলতার ঘ্যাঁনঘ্যাঁনানি দেখলে ভালোই লাগে, ব্লগে সবাই নিজের কথা লিখতে আসে, যেহেতু অনেক মানুষের মধ্যেই স্থুল অর্থে মিল বিদ্যমান তাই তারা স্বমতের মানুষ খোঁজে, এভাবেই মানুষে মানুষে ঐক্য গড়ে উঠে, অন্য সময় হলে সেটা হতো রাজনীতির ময়দান, এই ভার্চুয়াল জগতে সেটাসমমনা ব্লগার। বেশ অনেকদিন আগে অশীলতা নিয়ে জলঘোলা হলো, কিন্তু অশীলতার সংজ্ঞা আর পরিধি নিয়ে কেউ একটা স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিলো না, এমন মানুষ নির্মিত দেয়ালের ক্ষেত্রে যা হয় তাই হলো এখানে, স্যান্ডো গেঞ্জি পড়া টগবগে তরুনীর যৌনউত্তেজক ভঙ্গি দেখেও যেহেতু সম্পুর্ন ঢেকে থাকা, কিংবা ইষৎ প্রকাশিত এবং কামোত্তেজক তাই তা গিলে ফেললো শোভন মানুষেরা, কোনো পোষ্ট মুছে তা বড় গলায় জানাইলো না কেউ, আবার প্রায় অষ্পষ্ট ন্যাংটা প্রকৃতিবাদিদের ছবি দিয়ে যেখানে আতশীকাঁচেও কোনো মানুষকে পৃথক করা সম্ভব না তা দেখে কারো অশালীন জিহবা ঝুলে গেলো চোয়াল পর্যন্ত এবং তার উত্তেজিত মস্তক পোষ্ট ডিলিটের মতো একটা নেহায়েত ব্যাক্তিগত অভিরূচিকে সগর্বে জানানোর জন্য প্ররোচিত করলো মানুষকে। এবার মানুষের লেখার ভাষা নিয়ে হাতাহাতি শুরুখয়েছে, ব্লগের অনেক বিষয়ের পোষ্টই ব্যক্তিগত অনুভব সেই অনুভবের প্রতিক্রিয়ায় যা বলা হবে তা ব্যক্তিগত আক্রমনের বিষয় হয় েযাবে, কেউ কেউ একেবারে অহেতুক পারিবারিক টানাটানি শুরু করলো, কেউ বক্তাকে একচোট ধুঁয়ে দিলো। কিন্তু ভন্ডকে ভন্ড বলা আর রাজাকারকে রাজাকার বলার মতো স্পষ্ট অবস্থান গ্রহনকেও বাঁধাগ্রস্থ করার কারন কি।

মানুষের ভেতরটা উন্মুক্ত হতে হবে কিন্তু সর্বগ্রহক সার্বজনীনতা কোনো মতেই সরল কোনো মতবাদ নয়, একমাত্র ধান্দাবাজেরই সবার মতের সাথে সহমতত্ব থাকে, বাকি বসার একটা আদর্শিক অবস্থান থাকে, সেখান থেকে তারা নিজেদের অবস্থান ডিফেন্ড করার চেষ্টা করে, আমি গাছেরও খাই তলাও কুড়াই ধাঁচের মানুষ গাছের গুন গায় মাটিরও পূজা করে। আমি নিজে যা বিশ্বাস করি না তা প্রচার করা এবং সেই প্রচারনায় অহেতুক অনেক রকম আতিকথন সটতার লক্ষন নয়, এর পরও কেউ কেউ জনপ্রিয়তার লোভে এমন কাজ করতে চাইছে। তারা সবাইকে সান্তনা দিতে চাইছে, আমি তোমার সাথে আছি, এবং আমি আপনাদের সাথেও আছি- এমন মোনাফেক মানুষদের বিষয়ে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এখন যখন মানুষের উচ্চারনের সহবত শেখানোর ক্লাশ শুরু হলো তখন আমার অবস্থান এর বিরুদ্ধে। মানুষের মনের ভাব প্রকাশের জন্য তার যেমন অভিরূচি তেমন ভাবে ভাব প্রকাশ করবে- শ্রদ্ধা অর্জন করাটা নিজের মতাদর্শের প্রতি প্রণত থাকার সাথে সংযুক্ত একটা বিষয়, তবে নিজের মতাদর্শটা খুঁঝে পাওয়াটাই একটা বিষম সমস্যা।

একবার খুঁঝে পেলে সেটাকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম, প্রয়োজনে পালটা আক্রমন সব সময়ই শ্রদ্ধার কাজ। যেসব রাজাকার চেতনার মানুষ নিজের রাজাকারি নিয়ে লজ্জিত নয় এবং যারা বড়াই করে নিজেদের রাজাকার পরিচয় দেয় তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকা যায় যহজেই, লড়াইয়ের সময় পক্ষ চেনার বিষয়টা থাকে, কিন্তু কিছু আপাত অক্ষতিকর বিষ্ফোট যখন মতপ্রকাশের জায়গাটাকে সংকুচিত করতে থাকে তখন মতের অমিলের জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। অবশেষে কোনো ধরনের মতভিত্তিক বাদানুবাদের কোনো সুযোগ থাকে না, এই সব আপাত নিরীহ সর্বগ্রাসী বিস্ফোট নিয়ে চিন্তিত হওয়া এবং আপাত শালীন ব্লগানোর বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান জানিয়ে বলতে চাইছি যারা নিজের আদর্শের জন্য শ্রদ্ধা পেয়েছে তারা আমার লেখা নিয়ে যতই বাজে মন্তব্য করুক তাদের প্রতি শ্রদ্ধাটা কমবে না বরং বাড়বে, অন্তত তারা আমাকে আমার ভুলভাবনা থেকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে পারে, কিন্তু সবার গ্রহনযোগ্য এবং চাটুকার শ্রেনীর মানুষের কাছ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারাটাই একটা বড় মাপের অর্জন জীবনে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.